জিটিএ-র কাজে হস্তক্ষেপ করার প্রতিবাদে অথবা স্বাধীন ভাবে কাজ করতে না দেওয়ার অভিযোগে একাধিকবার কেন্দ্রীয় সরকারকে স্মারকলিপি দিয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। এ বার গত বছরের ধস-ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির জন্য ত্রাণ তহবিলেও রাজ্য সরকার বরাদ্দ করেনি বলে অভিযোগ নিয়ে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হল মোর্চার প্রতিনিধি দল।
শুক্রবার কলকাতায় মোর্চা নেতারা অবশ্য জিটিএ তথা গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়ালের প্রতিনিধি হিসেবেই রাজভবনে গিয়েছিলেন। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক নালিশ জানানো হয়েছে রাজ্যপালকে দেওয়া স্মারকলিপিতে। জিটিএ-এর দাবি, গত বছর পাহাড়ে ধস-ভূমিকম্পে অন্তত সাড়ে ন’শো টাকার ক্ষতি হয়েছে। সেই মতো জিটিএ-এর তরফে রাজ্যকে সবিস্তারে রিপোর্টও পাঠানো হয়েছে। তারপরেও ওই খাতে কোনও বরাদ্দ মেলেনি বলে জিটিএ-র অভিযোগ। উল্টে রাজ্য সরকার ক্ষতিপূরণের জন্য প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ পেলেও, জিটিএকে কিছুই বরাদ্দ করা হয়নি বলে দাবি।
এ দিন প্রতিনিধি দলে থাকা জিটিএ-এর সদস্য তথা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি একটি প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। ওই বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, রাজ্য সরকারের থেকে যে ধরণের অসহযোগিতা জিটিএ পাচ্ছে, তা সবিস্তারে জানানো হয়েছে। রোশনের কথায়, ‘‘জিটিএ চুক্তি অনুযায়ী যে দফতরগুলি রাজ্য সরকারের হস্তান্তর করার কথা ছিল, তা সম্পূর্ণ করা হয়নি। জিটিএ-এর হাতে থাকা বিভিন্ন দফতরের কাজেও রাজ্য নিয়মিত হস্তক্ষেপ করছে। এ সবই রাজ্যপালকে জানানো হয়েছে।’’
বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্য সরকারের উপর চাপ তৈরি করতেই মোর্চা এই হুমকি-চাপের পথে হাঁটছে বলে পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলির দাবি। সম্প্রতি মোর্চার কালিম্পঙের বিধায়ক হরকা বাহাদুর ছেত্রী দল ছেড়ে নতুন দল গঠন করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত মাসেও সরকারি সফরে দার্জিলিঙে গিয়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জন্য নতুন দুটি উন্নয়ন বোর্ড গঠনের ঘোষণা করেছেন, আরও কয়েকটি বোর্ড গঠনের বিষয়ে বিবেচনার আশ্বাসও দিয়েছেন। তার পর থেকেই পাল্টা চাপ তৈরির কৌশল নেওয়া হয়েছে বলে মোর্চার অন্দরের খবর। রাজ্যপালের কাছে দরবারও তারই কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে।
জিটিএ সূত্রে জানানো হয়েছে, আগামী মে মাসে জিটিএ-এর সভায় বক্তব্য রাখার জন্য রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মিরিকের একটি পলিটেকনিক কলেজের উদ্বোধন করার জন্যও রাজ্যপালকে আর্জি জানিয়েছে জিটিএ। রোশনের দাবি, দুই অনুষ্ঠানেই উপস্থিত থাকার বিষয়ে রাজভবনের প্রাথমিক সম্মতি মিলেছে।