ইডি অফিসে গৌতম কুণ্ডু। নিজস্ব চিত্র
কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে কোনও এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন রোজভ্যালি সংস্থার কর্ণধার গৌতম কুণ্ডু। কে সেই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং কী কারণেই বা ওই বৈঠক হয়েছিল এই সব জানতে সোমবার গৌতমবাবুকে নিজেদের দফতরে ডেকে এনে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা জেরা করলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র তদন্তকারীরা। সম্প্রতি ওই হোটেলের কর্তাদের ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। তাতেই ওই বৈঠকের কথা উঠে এসেছে বলে মনে করা হচ্ছে। আরও জানা গিয়েছে যে, সারদার টাকায় তৃণমূলের কিছু নেতা-মন্ত্রী প্রায়ই ওই হোটেলে থাকতেন, ফূর্তি করতেন।
এ দিন দুপুর ১২টার কিছু পরে ইডি-র দফতরে আসেন গৌতমবাবু। বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ সেখান থেকে বেরনোর সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে গৌতমবাবু বলেন, “তদন্তে সহযোগিতা করার জন্য আগেও এসেছি। আজ ইডি-র তদন্তকারীরা ডেকেছিলেন, তাই এসেছি। এর বেশি কিছু বলার নেই।” তবে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে সম্পর্কের কথা পুরোপুরি অস্বীকার করেন তিনি। তাঁর কথায়, “আমরা ব্যবসা করতে এসেছি। কোনও রাজনৈতিক দল বা নেতার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।” তিনি জানান, রোজভ্যালিতে কত টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে, কারা টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন, কত টাকা ঋণ নেওয়া হয়েছিল, তদন্তকারীরা তাঁর কাছে এই বিষয়েই জানতে চেয়েছিলেন। গৌতমবাবু দাবি করেন, ওই সব বিষয়ে সব তথ্য তিনি ইডি-কে দিয়েছেন। যদিও ইডি সূত্রের খবর, গৌতমবাবুর তরফে কোনও নথি এ দিন জমা পড়েনি। রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে পাঁচতারা হোটেলে বৈঠক ও রোজভ্যালির অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাঁর দেওয়া তথ্যে অসঙ্গতি রয়েছে ইডি-র তরফে এ কথা বলা হলেও গৌতমবাবু সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন। চ্যালেঞ্জের সুরে তিনি বলেন, “সেবি দু’বছর ধরে তদন্ত করছে। ইডি-ও তদন্ত চালাচ্ছে গত আট মাস ধরে। যে সমস্ত অসঙ্গতির অভিযোগ উঠেছে, ইডি তা প্রমাণ করে দেখাক। আদালতে মমলা চলছে। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি নিষ্পত্তি হবে।”
রোজভ্যালির গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার প্রসঙ্গে গৌতমবাবু জানান, গত সেপ্টেম্বর থেকে সংস্থার আড়াই হাজারের বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ইডি বাজেয়াপ্ত করে রেখেছে। তাই গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে দেরি হচ্ছে। বাজার থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা আমানত তিনি তুললেন কী ভাবে? কোনও উত্তর না দিয়ে হাত নেড়ে চলে যান গৌতমবাবু। ডেলোতে তিনি কেন বৈঠক করতে গিয়েছিলেন? এরও জবাব দেননি তিনি।