শিক্ষামন্ত্রী ক্ষুব্ধ, তবু কলেজে বাড়িভাড়া কাটতে ফোনে চাপ

কোনও লিখিত নির্দেশিকা নেই। তা সত্ত্বেও উচ্চশিক্ষা দফতরের মৌখিক নির্দেশের ভিত্তিতে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন থেকে বাড়িভাড়া বাবদ প্রাপ্য অর্থ কেটে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, এ বিষয়ে আপত্তি তুলেছেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি মৌখিক ভাবে নির্দেশও দিয়েছেন, এ ভাবে বেতনের টাকা কাটা যাবে না। তবু বেতনে কোপ অব্যাহত থাকায় শিক্ষা শিবিরে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে। ২০১২ সালে অর্থ দফতর একটি নির্দেশিকা জারি করে জানায়, কোনও সরকারি কর্মচারীর স্বামী বা স্ত্রী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও বাড়িভাড়া বাবদ মিলিত ভাবে তাঁদের প্রাপ্য অর্থের পরিমাণ ছ’হাজার ছাড়াতে পারবে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩৯
Share:

কোনও লিখিত নির্দেশিকা নেই। তা সত্ত্বেও উচ্চশিক্ষা দফতরের মৌখিক নির্দেশের ভিত্তিতে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন থেকে বাড়িভাড়া বাবদ প্রাপ্য অর্থ কেটে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, এ বিষয়ে আপত্তি তুলেছেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি মৌখিক ভাবে নির্দেশও দিয়েছেন, এ ভাবে বেতনের টাকা কাটা যাবে না। তবু বেতনে কোপ অব্যাহত থাকায় শিক্ষা শিবিরে বিস্ময়ের সৃষ্টি হয়েছে।

Advertisement

২০১২ সালে অর্থ দফতর একটি নির্দেশিকা জারি করে জানায়, কোনও সরকারি কর্মচারীর স্বামী বা স্ত্রী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও বাড়িভাড়া বাবদ মিলিত ভাবে তাঁদের প্রাপ্য অর্থের পরিমাণ ছ’হাজার ছাড়াতে পারবে না। এই নির্দেশ সরকারি কর্মীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। কিন্তু ২০১৪ সালের শেষ থেকে সেটি প্রয়োগ করা হচ্ছে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কিছু কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উপরেও। ফলে ওই সব শিক্ষক-শিক্ষিকা বাড়িভাড়া বাবদ প্রাপ্য অর্থ পাচ্ছেন না বা আংশিক পাচ্ছেন। অনেকের মাইনে থেকে এই খাতে আগে পাওয়া টাকাও কেটে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। খোদ শিক্ষামন্ত্রী এই নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তা সত্ত্বেও কী ভাবে টাকা কাটা হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তুলছেন সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একটা বড় অংশ। এমনকী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ওই অর্থ না-দেওয়ার জন্য উচ্চশিক্ষা দফতরের তরফে বিভিন্ন কলেজে টেলিফোন করে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ।

তাঁকে অন্ধকারে রেখেই এমনটা করা হচ্ছে বলে দাবি শিক্ষামন্ত্রীর। আলাদা নির্দেশিকা জারি না-করে অর্থ দফতরের ওই নির্দেশের ভিত্তিতে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন কাটা নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে উষ্মা প্রকাশ করেছেন তিনি। ওই নিয়ম যাতে রূপায়ণ করা না-হয়, সেই জন্য শিক্ষামন্ত্রী মৌখিক ভাবে নির্দেশও দেন বলে উচ্চশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর।

Advertisement

কিন্তু তাতেও কাজের কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ পশ্চিমবঙ্গ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (ওয়েবকুটা)-র সাধারণ সম্পাদক শ্রুতিনাথ প্রহরাজের। তিনি জানান, উচ্চশিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক ওই অর্থ কেটে নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বিভিন্ন কলেজে টেলিফোন করছেন। এ জন্য কোনও লিখিত নির্দেশিকা জারি না-করেই বেতন কাটার পরামর্শ দিচ্ছেন ওই আধিকারিক। “এ-সব কী হচ্ছে? আমরা এ ব্যাপারে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করব,” বলেছেন প্রহরাজ। শাসক দল তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-র সভানেত্রী কৃষ্ণকলি বসুও জানান, আলাদা ভাবে লিখিত নির্দেশিকা জারি না-করে অর্থ দফতরের নির্দেশের ভিত্তিতে এ ভাবে সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন কাটা যায় না।

উচ্চশিক্ষা দফতরের যে-আধিকারিকের বিরুদ্ধে টেলিফোন করে বাড়িভাড়া বাবদ অর্থ কেটে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, তাঁর দাবি, তিনি এই ধরনের কোনও কাজ করেননি। তাঁর কথায়, “আমি কোথাও ফোন করে কোনও নির্দেশ দিইনি। এই বিষয়ে যা বলার, শিক্ষা অধিকর্তা (ডিপিআই) বা শিক্ষামন্ত্রীই তা বলতে পারবেন।”

ডিপিআই নিমাইচন্দ্র সাহা এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বিধানসভার অধিবেশন চলায় মুখ খোলেননি শিক্ষামন্ত্রীও। তবে তিনি যে অর্থ দফতরের ওই নির্দেশিকা কলেজের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করার পক্ষপাতী নন, মঙ্গলবারেও সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন পার্থবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন