শুভার সংস্থার প্রাক্তন কর্তাকে জেরা

সারদা কেলেঙ্কারিতে শুভাপ্রসন্নর ‘দেবকৃপা ব্যাপার’ সংস্থার ভূমিকা নিয়ে ইতিমধ্যে খোঁজখবর করেছে ইডি। শুভাপ্রসন্নকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে তারা। এ বার দেবকৃপা নিয়ে তদন্তে নামল সিবিআই। শুভাপ্রসন্নকে তলব না করলেও অরুণ পোদ্দার নামে শহরের যে ব্যবসায়ীর থেকে শুভাপ্রসন্ন কোম্পানিটি কিনেছিলেন, বুধবার সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তাঁকে। অরুণবাবু আগে ইডি-র জেরার মুখেও পড়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:৩৫
Share:

সারদা কেলেঙ্কারিতে শুভাপ্রসন্নর ‘দেবকৃপা ব্যাপার’ সংস্থার ভূমিকা নিয়ে ইতিমধ্যে খোঁজখবর করেছে ইডি। শুভাপ্রসন্নকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছে তারা। এ বার দেবকৃপা নিয়ে তদন্তে নামল সিবিআই। শুভাপ্রসন্নকে তলব না করলেও অরুণ পোদ্দার নামে শহরের যে ব্যবসায়ীর থেকে শুভাপ্রসন্ন কোম্পানিটি কিনেছিলেন, বুধবার সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তাঁকে। অরুণবাবু আগে ইডি-র জেরার মুখেও পড়েছেন।

Advertisement

এ দিন সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতরে হাজির হন অরুণবাবু। ঘণ্টা তিনেক বাদে, বেলা দেড়টা নাগাদ বেরিয়ে যান। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে তিনি কোনও কথা বলেননি। দেবকৃপার সঙ্গে ওই ব্যবসায়ীর সংশ্রব কী রকম?

সিবিআই সূত্রের খবর: ‘দেবকৃপা ব্যপার লিমিটেড’-এর পত্তন ২০০৬-এর ১৪ ফেব্রুয়ারি। তৈরি করেছিলেন মণীশ জায়সবাল ও নন্দিতা জায়সবাল। দু’মাস পরে অরুণবাবু ও সঞ্জয়কুমার রাই নামে আর এক জন সংস্থার ডিরেক্টর হয়ে আসেন। আর সেই মাসেই মণীশ ও নন্দিতা দেবকৃপা থেকে বেরিয়ে যান। দু’সপ্তাহের মাথায়, ২০০৬-এর পয়লা মে সংস্থাটি কিনে নেন শুভাপ্রসন্ন ও তাঁর স্ত্রী শিপ্রা ভট্টাচার্য। তার দশ দিন বাদে অরুণ ও সঞ্জয় দেবকৃপা ছাড়েন। পাঁচ বছর বাদে, ২০১২-র ৯ জুলাই সারদা-কর্ণধার সুদীপ্ত সেন নতুন মালিক হন। সুদীপ্ত ছাড়াও সংস্থার নতুন ডিরেক্টরের পদে আসীন হন তাঁর ‘ছায়াসঙ্গিনী’ দেবযানী মুখোপাধ্যায়।

Advertisement

সারদা-কাণ্ডে সুদীপ্ত, দেবযানী এখন জেলে। কোম্পানি নিবন্ধকের খাতায় শুভাপ্রসন্ন ও তাঁর মেয়ে জোনাকি এখনও সংস্থার ডিরেক্টর হিসেবে রয়েছেন। এবং সিবিআইয়ের একাংশের অভিযোগ, শুভাপ্রসন্নর থেকে দেবকৃপার মালিকানা সুদীপ্ত সেনের কাছে হস্তান্তরের সময় মধ্যস্থের ভূমিকা পালন করেছিলেন অরুণবাবু। শুধু তা-ই নয়, আরও কিছু বৈদ্যুতিন চ্যানেলের মালিকানা সারদাকে হাতবদলের ব্যাপারেও অরুণবাবু মধ্যস্থতা করেন বলে তদন্তকারীদের দাবি। এক সিবিআই অফিসারের কথায়, “আমরা জানতে পেরেছি, অন্য একটি অর্থলগ্নি সংস্থার মালিক শিবনারায়ণ দাসের মাধ্যমে সুদীপ্তের সঙ্গে অরুণবাবুর পরিচয় হয়েছিল।”

সিবিআই সূত্রের খবর, এমন কয়েকটি বিষয় নিয়ে অরুণবাবুকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। দেবকৃপা ব্যাপার লিমিটেড’-এর নথিভুক্তিকরণ ঘিরেও ধোঁয়াশা। তদন্তকারীদের দাবি, দেবকৃপা কেনার আগেই সংস্থার অফিস হিসেবে শুভাপ্রসন্নবাবুর বাড়ির ঠিকানা নথিভুক্ত ছিল। বৌবাজারে

কোম্পানির আর এক ঠিকানায় কাবুলিদের ডেরা। এই সব অসঙ্গতি সম্পর্কে অরুণবাবুর বক্তব্য জানতে চেয়েছেন গোয়েন্দারা। সিবিআই-সূত্রের খবর, অরুণবাবুর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের লেনদেন যাচাই করতে গিয়েও কিছু অসঙ্গতি নজরে এসেছে। নতুন কিছু তথ্যও মিলেছে, যার সূত্র ধরে শুভাপ্রসন্নকে তলব করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত।

সারদা-তদন্তে সিবিআই অবশ্য এর আগে শুভাপ্রসন্নকে এক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তবে তখন জেরার বিষয় ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঁকা ছবি। এ বার তলব করা হলে ওই শিল্পী দেবকৃপা নিয়ে সিবিআইয়ের প্রশ্নের মুখে পড়তে পারেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement