হিন্দমোটর কর্তৃপক্ষ বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের দশ হাজার টাকা করে অনুদান দিলেন। সূত্রের খবর, কারখানা খোলার একটা চেষ্টা শুরু হয়েছে কর্তৃপক্ষের তরফে। শ্রমিকদের বকেয়া খানিকটা হলেও মেটানোর চেষ্টা তারই প্রাথমিক পদক্ষেপ। মোটরগাড়ির ইঞ্জিন তৈরির একটি বিভাগে কাজ শুরু করে, পরবর্তী পর্যায়ে অন্য ইউনিটগুলি চালু করার পরিকল্পনা নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ, এমনই ইঙ্গিত মিলেছে। এই বিষয়ে বাইরের একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে সূত্রের খবর। সরকারি সূত্রেও খবর, কারখানাটি ফের খোলার চেষ্টা চলছে।
চলতি বছরের মে মাসে হিন্দমোটর কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন শ্রমিকদের বেশ কয়েক মাসের বেতন বকেয়া ছিল। তাছাড়াও অন্যান্য পাওনা রয়েছে শ্রমিকদের। তাঁদের বকেয়া মেটানো এবং দ্রুত কারখানা খোলার দাবিকে সামনে রেখে ডান ও বাম সব শ্রমিক সংগঠনই আন্দোলন শুরু করেন কারখানার গেটে।
কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। রাজ্য সরকারের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক হয় কর্তৃপক্ষের। সরকারের তরফেও কারখানা খোলার বিষয়টিতে চাপ দেওয়া হয়। রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, “আমরা কর্তৃপক্ষকে বলেছিলাম শ্রমিকদের বকেয়া টাকা দিতে। পুজো চলে আসছে। শ্রমিকদের আর্থিক বিষয়টি দেখা উচিত। কারখানাটি ফের চালুর চেষ্টা চলছে।”
শুক্রবার কারখানা চত্বরে নোটিস দিয়ে শ্রমিকদের বকেয়া দেওয়ার বিষয়টি জানানো হয় কর্তৃপক্ষের তরফে। এ দিন মোট ২৪০০ শ্রমিককে ওই টাকা দেওয়া হয়। গত মে মাস থেকেই কারখানাটি বন্ধ। বস্তুত গত বেশ কয়েক বছরর ধরেই হিন্দমোটরে উৎপাদন সেইভাবে ছিল না। বহু ইউনিট সেখানে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শ্রমিকেরা কাজে এসে স্রেফ সই করে বাড়ি ফিরে যেতেন কাজ না মেলায়।
এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে কর্তৃপক্ষের তরফে চেষ্টা শুরু হয়েছে। বর্তমানে অ্যাম্বাস্যাডার গাড়ির মাইলেজ বিশেষ নয়। তাই তার বিক্রির বাজারও অনেকটাই সংকুচিত হয়ে এসেছে। এই বাস্তবতাকে মাথায় রেখে অন্য একটি সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেধে অ্যাম্বাস্যাডার গাড়ির মাইলেজ যাতে বাড়ানো যায় সেই প্রযুক্তিগত সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই গাড়িটির ‘ইউরো ফোর’ ছাড়পত্র মিলেছে।
কিন্তু এই পুরো প্রক্রিয়াটি কিছুটা হলেও সময়সাপেক্ষ। তাই কারখানার দরজা ফের খোলার চেষ্টার ইঙ্গিত মিললেও, তা কবে তার কোনও স্পষ্ট উত্তর এখনই মেলেনি। রাজ্য সরকারের একটি সূত্রের খবর, হিন্দমোটর কর্তৃপক্ষকে সরকারি স্তরে সব রকম সাহায্য করা হচ্ছে, যাতে সেখানকার ‘ফোরজিং’ বিভাগটি অন্তত চালু করে কারখানাটি খোলা যায়। পুজোর মুখে শ্রমিকদের একাংশ ফের আশায় বুধ বাঁধতে শুরু করেছেন। অন্য শ্রমিকদের অবশ্য বক্তব্য, “আগে বকেয়া মেটাক কর্তৃপক্ষ। তার পর অন্য কথা।”