ষড়যন্ত্রের মন্ত্র নিয়ে যন্তর মন্তরে তৃণমূল

সারদা-কাণ্ডে তদন্তের বিরুদ্ধে এর আগে কলকাতায় সিবিআই দফতরের সামনে ধর্না হয়েছিল। এ বার দিল্লির যন্তর মন্তরে ধর্না দিতে চলল তৃণমূল। বাংলার উন্নতি থামাতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে যে ভাবে সিবিআইকে ব্যবহার করা হচ্ছে, তার প্রতিবাদেই এই কর্মসূচি বলে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য। তৃণমূল সূত্রের খবর, ১৬ অক্টোবর যন্তর মন্তরের ওই প্রতিবাদ সভায় দলের সাংসদেরা থাকবেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৫৯
Share:

সারদা-কাণ্ডে তদন্তের বিরুদ্ধে এর আগে কলকাতায় সিবিআই দফতরের সামনে ধর্না হয়েছিল। এ বার দিল্লির যন্তর মন্তরে ধর্না দিতে চলল তৃণমূল। বাংলার উন্নতি থামাতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে যে ভাবে সিবিআইকে ব্যবহার করা হচ্ছে, তার প্রতিবাদেই এই কর্মসূচি বলে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রের খবর, ১৬ অক্টোবর যন্তর মন্তরের ওই প্রতিবাদ সভায় দলের সাংসদেরা থাকবেন। অন্যতম বক্তা হওয়ার কথা তৃণমূলের ‘যুবরাজ’ তথা মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ফেসবুক পেজে অভিষেকই প্রথম এই ‘দিল্লি চলো’র ডাক প্রকাশ্যে এনেছেন। লোকসভা ভোটের আগে অণ্ণা হজারেকে সামনে রেখে এ ভাবেই ‘দিল্লি চলো’র ডাক দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাঁকা রামলীলা ময়দানে অণ্ণা হাজিরই হননি। এ বারের কর্মসূচিও মমতারই মস্তিষ্কপ্রসূত। যার রূপায়ণে বড় ভূমিকা নেওয়ার কথা অভিষেকের। এ বারও অণ্ণা-অনুষঙ্গ ফের সামনে এসে পড়ছে! ফেসবুকে অভিষেকের পোস্টে মন্তব্য জমা পড়েছে, ‘এ বারও কি সেই অণ্ণার মতো দিল্লিতে নাচ-গান করতে যাবেন’? সারদা কেলেঙ্কারিতে কোণঠাসা তৃণমূল বারেবারেই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কথা বলে আক্রমণে যেতে চাইছে। কলকাতায় ধর্নার সময়েই মুকুল রায়, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো নেতারা জানান, দরকারে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে তাঁরা প্রতিবাদ জানাবেন। ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব সর্বভারতীয় স্তরে তুলে ধরতেই শেষ পর্যন্ত যন্তর মন্তরে প্রতিবাদ সভার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা। সিবিআইকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার এবং বিরোধী দল ও কিছু সংবাদমাধ্যমের ‘অপপ্রচারে’র প্রতিবাদ জানানোর ডাক দেওয়া হয়েছে সেখানে। শাসক দলের এক প্রথম সারির নেতার কথায়, “পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে যেখানে যেখানে প্রতিবাদ জানানো দরকার, আমরা জানাব!”

তবে এমন কর্মসূচির কার্যকারিতা নিয়েও তৃণমূলের অন্দরে দ্বিমত আছে। একাংশের মতে, রাজধানীতে ষড়যন্ত্রের কথা বলতে যাওয়া মানে নিজেদের বিপন্নতাই প্রকট করা। এমনিতেই দুর্নীতির মামলায় তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার সাজার পর সারদা-কাণ্ডের সঙ্গে তুলনা টানা হচ্ছে। জয়াও সেই ষড়যন্ত্রের তত্ত্বই ব্যবহার করছেন। এই সময় যন্তর মন্তরের কর্মসূচি জয়া-কাণ্ডের অনুষঙ্গ বেশি করে মনে করিয়ে দেবে বলে তৃণমূলের একাংশের আশঙ্কা। ঘটনাচক্রে, সোমবারই পিসির হয়ে ফেসবুকে বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীর (যিনি জয়ার বিরুদ্ধেও মামলা করেছিলেন) বিরুদ্ধে তোপ দেগে অভিষেক বলেন, ‘আপনি আদালতে মামলা লড়তে পারেন কিন্তু ভোটে লড়তে পারবেন না’!

Advertisement

সংসদের নানা স্থায়ী কমিটির বৈঠক উপলক্ষে ১৩ তারিখ থেকে ওই সপ্তাহে দলের অনেক সাংসদেরই দিল্লি যাওয়ার কথা। সেই অবসরেই প্রতিবাদ সভার নির্ঘণ্ট ঠিক করেছেন মমতা। এক তরুণ নেতার কথায়, “অভিষেকের জন্য জাতীয় মঞ্চের সুযোগ খুঁজছিলেন নেত্রী। হয়তো যন্তর মন্তরেই সেই সুযোগ আসবে!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন