স্কুল কমিশনের পরীক্ষাও কোর্টে চ্যালেঞ্জের মুখে

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা (টেট) নিয়ে মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এ বার পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষক বাছাইয়ের জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর পরীক্ষা নিয়েও মামলা হল কলকাতা হাইকোর্টে। ওই পরীক্ষার নামও ‘টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট বা টেট।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৪ ০৩:৩২
Share:

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা (টেট) নিয়ে মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এ বার পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষক বাছাইয়ের জন্য স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-এর পরীক্ষা নিয়েও মামলা হল কলকাতা হাইকোর্টে। ওই পরীক্ষার নামও ‘টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট বা টেট।

Advertisement

২৯ মার্চ ওই চারটি শ্রেণিতে পড়ানোর জন্য শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হবে বলে জানিয়েছে এসএসসি। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে সেই পরীক্ষাকেই চ্যালেঞ্জ করেছেন টেট-উত্তীর্ণ জনা চল্লিশ প্রার্থী। তাঁরা জানান, এসএসসি নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার যে-বিজ্ঞাপন দিয়েছে, তা অবৈধ। বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত জানান, ২০ মার্চ ওই পরীক্ষা নিয়ে ওঠা অভিযোগ এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে এসএসসি-কে।

মামলাকারীদের অন্যতম আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায় পরে জানান, ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (এনসিটিই)-এর নিয়ম অনুযায়ী এক বার টেট-উত্তীর্ণ হলে পাঁচ বছর পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট প্রার্থীর আর ওই পরীক্ষার বসার প্রয়োজন নেই। কিন্তু এসএসসি-র বিগত পরীক্ষার বিজ্ঞাপনে ওই নিয়মের উল্লেখ ছিল না। তিনি জানান, যাঁরা মামলা করেছেন, তাঁদের সকলেই বিএড ডিগ্রিধারী ও টেট-উত্তীর্ণ। এসএসসি-র বিষয়ভিত্তিক পরীক্ষা এবং মৌখিকেও তাঁরা সফল। কিন্তু তাঁদের চাকরি হয়নি। সুব্রতবাবু জানান, বিচারপতি করগুপ্ত এক রায়ে বলেছিলেন, পরীক্ষায় সফলদের মধ্যে যাঁরা বিএড ডিগ্রিধারী, তাঁদের নিয়োগ করার পরে পদ শূন্য থাকলে প্রশিক্ষণহীনদের নিয়োগ করতে হবে। কিন্তু এসএসসি তাঁর সেই নির্দেশ মানেনি।

Advertisement

মামলাকারীদের আর এক আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য জানান, আগের বারের টেট-উত্তীর্ণ এবং বিএড ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের সুযোগ না-দিয়ে নতুন করে টেট নেওয়ার এই প্রক্রিয়া অবৈধ ও বেআইনি। সুব্রতবাবুর প্রশ্ন, বিএড ডিগ্রিধারী, টেট-উত্তীর্ণ প্রার্থীদের সুযোগ না-দিয়ে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার মানে কী?

অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চট্টোপাধ্যায় জানান, এসএসসি গত বার যে-পরীক্ষা নিয়েছিল, টেটের মতো হলেও সেটাকে টেট বলা যাবে না। এনসিটিই-র নির্দেশিকা মেনে এসএসসি পরীক্ষা নিয়েছিল। কিন্তু সেই নির্দেশ পুরোপুরি খুঁটিয়ে মেনে পরীক্ষাটা নেওয়া হয়নি।

এসএসসি-কর্তৃপক্ষও একই কথা জানান। কমিশনের চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্য বলেন, “মামলার ব্যাপারটা জানি না। আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে যা বলার বলব। তবে গত বছর যে-পরীক্ষাটি হয়েছিল, তাকে টেট বলাই যাবে না। এসএসসি এ বছরই প্রথম টেট নেবে।” মামলাকারীরা আদালতে জানান, এনসিটিই-র নিয়ম অনুযায়ী এ বছর ৩১ মার্চের পরে বিএড প্রশিক্ষণহীন প্রার্থীদের নিয়োগ করা যাবে না।

এ দিনই আবার চাকরির দাবিতে সল্টলেকে এসএসসি-র সদর দফতরের সামনে রাস্তা ঝাঁট দিয়ে, থালা হাতে বিক্ষোভ দেখান শ’দুয়েক প্রার্থী। গত বার চূড়ান্ত মেধা-তালিকায় তাঁদের নাম ছিল। এই ধরনের হাজার তিনেক প্রার্থীর সকলেই চাকরি পাবেন বলে মৌখিক প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনকারীরা অবস্থান তুলে নিয়েছিলেন। কিন্তু ৭ মার্চ চতুর্থ কাউন্সেলিং হয়ে গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে মাত্র শ’তিনেকের চাকরি হয়েছে। কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, “চতুর্থ দফায় আরও কাউন্সেলিং হবে।

তখন আরও কিছু প্রার্থীর চাকরির সম্ভাবনা আছে। আন্দোলনকারীদের তা জানানো হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন