জাদুঘর

সূত্র মেলেনি সিআইডি তদন্তে, আধিকারিক-অন্তর্ধান রহস্যই

ভারতীয় জাদুঘরের মুখ্য সংরক্ষণ আধিকারিক সুনীল উপাধ্যায়ের রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার তদন্তভার কলকাতা পুলিশের হাত থেকে নিয়ে সিআইডি-কে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু আড়াই মাসের বেশি তদন্ত চালিয়েও গোয়েন্দারা কার্যত একচুলও এগোতে পারেননি বলে সিআইডি-র একটি সূত্রে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। খোঁজ মেলেনি সুনীলবাবুর, তেমন সূত্রও পাওয়া যায়নি। সিআইডি-র এক কর্তা জানান, ভবানী ভবনের গোয়েন্দাদের তদন্তে যে উল্লেখযোগ্য কোনও অগ্রগতি হয়নি, সে ব্যাপারে একটি খসড়া রিপোর্ট তৈরি করে আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। শীঘ্রই বিষয়টি শীর্ষ আদালতে জানিয়ে দেওয়া হবে।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৭
Share:

ভারতীয় জাদুঘরের মুখ্য সংরক্ষণ আধিকারিক সুনীল উপাধ্যায়ের রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার তদন্তভার কলকাতা পুলিশের হাত থেকে নিয়ে সিআইডি-কে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু আড়াই মাসের বেশি তদন্ত চালিয়েও গোয়েন্দারা কার্যত একচুলও এগোতে পারেননি বলে সিআইডি-র একটি সূত্রে স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে। খোঁজ মেলেনি সুনীলবাবুর, তেমন সূত্রও পাওয়া যায়নি। সিআইডি-র এক কর্তা জানান, ভবানী ভবনের গোয়েন্দাদের তদন্তে যে উল্লেখযোগ্য কোনও অগ্রগতি হয়নি, সে ব্যাপারে একটি খসড়া রিপোর্ট তৈরি করে আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে। শীঘ্রই বিষয়টি শীর্ষ আদালতে জানিয়ে দেওয়া হবে।

Advertisement

তবে সিআইডি সূত্রের দাবি, বছর পঁয়ত্রিশের সুনীলবাবু যে অপহৃত হননি, সে ব্যাপারে তারা একপ্রকার নিশ্চিত। গোয়েন্দাদের আরও বক্তব্য, জাদুঘর কর্তৃপক্ষের একাংশের বিরুদ্ধে সম্প্রতি যে সব অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে, তার সঙ্গে সুনীলবাবুর অন্তর্ধান রহস্যের কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারি ওই অফিসার বেপাত্তা হয়ে গেলেন কেন এবং এর পিছনে কাদের হাত রয়েছে, সে সবের স্পষ্ট উত্তর তদন্তকারীদের কাছে নেই। তা ছাড়া, সুনীলবাবু এই মুহূর্তে সুস্থ ও নিরাপদে আছেন কি না, তা-ও বলতে পারছেন না গোয়েন্দারা।

আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা সুনীলবাবু চারু মার্কেট এলাকায় একটি বাড়িতে একাই ভাড়া থাকতেন। গত বছরের ৩ জুলাই সন্ধ্যায় তিনি বাড়ি থেকে বেরোন। তার পরে ফেরেননি। ৪ জুলাই ওই যুবক ডাক্তার দেখাতে যাবেন বলে ঠিক ছিল। অসুস্থতার কারণে ১ জুলাই থেকে সুনীলবাবু অফিসে যাননি।

Advertisement

কলকাতা পুলিশ ওই অন্তর্ধান রহস্যের কিনারা করতে পারেনি। সুনীলবাবুর আত্মীয়দের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৪ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট ওই ঘটনার তদন্ত করতে সিআইডি-কে নির্দেশ দেয়। সিআইডি-র এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, “আমরা কলকাতা ও দিল্লিতে কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলেছি। বিভিন্ন তথ্য পেলেও সুনীল উপাধ্যায়ের নিখোঁজ হওয়ার সঙ্গে সে সবের কোনও সম্পর্ক পাওয়া যায়নি।”

সিআইডি সূত্রের খবর, জাদুঘরের দুষ্প্রাপ্য সামগ্রী দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন সুনীলবাবু। তিনি নিখোঁজ হওয়ার কিছু দিন আগে অভিযোগ ওঠে, জাদুঘরের বেশ কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক সামগ্রী বেআইনি ভাবে বিদেশে নিলাম করা হচ্ছে। ওই অনিয়ম নিয়ে সুনীলবাবু মুখ খুলেছিলেন বলে তদন্তকারীরা জানতে পারেন। তার সঙ্গে সুনীলবাবুর নিখোঁজের যোগসূত্র রয়েছে বলেও দাবি করা হয়। কিন্তু গোয়েন্দাদের দাবি, তদন্তে ওই ঘটনার সঙ্গে সুনীলবাবুর নিখোঁজ হওয়ার যোগসূত্র মেলেনি। সিআইডি সূত্রের খবর, তদন্তে নেমে জাদুঘরের অধিকর্তা ভার্গব আম্মা বেণুগোপালকে ভবানী ভবনে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জেরা থেকে বাদ যাননি জাদুঘরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা অফিসার-সহ অন্য আধিকারিকেরাও। জাদুঘরের মোট ১৯ জনকে জেরা করে সিআইডি। তার পরেও রহস্যের জট খুলল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন