দলের মধ্যে বেড়ে চলা গোষ্ঠী রাজনীতি ও ‘সিন্ডিকেট রাজ’ নিয়ে তৃণমূলের বেশ কয়েক জন নেতা সম্প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়ও। এ বার সেই তালিকায় যুক্ত হল তৃণমূলের জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর নামও। রবিবার জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাকক্ষে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের অনুমোদিত নির্মাণকর্মীদের একটি সংগঠনের সম্মেলনে সৌরভবাবু বলেন, “দলের মধ্যে সিন্ডিকেট রাজ চলতে দেব না। দলের নাম ভাঙিয়ে টাকা তোলা, উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা ভাগ বাটোয়ারা করে খেতে দেব না।”
সম্প্রতি দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের একাধিক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট চালানো ও তোলাবাজির অভিযোগ উঠেছে। শিলিগুড়ি লাগোয়া ইস্টার্ন বাইপাস এলাকায় বিবাদে জড়িয়ে পড়েন দুই তৃণমূল নেতা। তখন পথ অবরোধও করে এক পক্ষ। দুই পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে জমির কারবারে তোলাবাজির অভিযোগ তুলেছিলেন সেই সময়ে। দার্জিলিং জেলার তৃণমূলের এক শীর্ষ নেতার নাম ভাঙিয়ে তাঁর কয়েকজন অনুগামী ঠিকাদারদের থেকে মোটা টাকা আদায় করছেন বলেও দলের শীর্ষ মহলে অভিযোগ পৌঁছেছে।
সৌরভবাবু বলেন, “আমি যত দিন দলের জেলা সভাপতি আছি, এসব চলবে না। সব জানি কে কোথায় কী করছেন। দেখে যাচ্ছি। দলনেত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। সময় মতো ব্যবস্থা নেব।” ক্ষমতায় আসার পরে দলের কিছু নেতাদের মাটিতে পা পড়ছে না বলেও এদিনের সভায় অভিযোগ ওঠে। সৌরভবাবু ওই অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে বলেন, “মানুষের সঙ্গে মাথা নিচু করে কথা বলুন। লাল চোখ দেখাবেন না।” এ দিনের সভায় তৃণমূল শ্রমিক নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তিনি আসেননি।
তৃণমূলের অন্দরে সৌরভবাবু মুকুলবাবুর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। সে কারণে, তাঁর এ দিনের বক্তব্যে দলের শীর্ষ নেতৃত্বেরও সায় রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গত লোকসভা ভোটের আগে জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার এই দু’টি আসনের দায়িত্ব উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের হাত থেকে নিয়ে সৌরভবাবুকে দেওয়া হয়। দু’টি আসনেই জেতে দল। তার পরে গৌতমবাবুর ঘনিষ্ঠ চন্দন ভৌমিককে সরিয়ে দু’টি জেলাতেই দলের সভাপতি করা হয় সৌরভবাবুকে।