সোনালি বাগানে শুধুই হতাশা

ক্ষোভের আগুন নিভে গিয়ে এখন হতাশা গ্রাস করেছে সোনালি চা বাগানকে। শনিবারের ঘটনার পর রবিবারের ছুটির দিনটা কেটেছে এক রকম ঘোরেই। সপ্তাহ শুরুর কর্মহীন দিনটাতেই আশঙ্কার সিঁদুরে মেঘ দেখছেন ডুয়ার্সের বাগরাকোটের এই চা বাগানের শ্রমিকরা। ঘটনার পর প্রায় তিন দিন কেটে গেলেও রাজ্য শ্রম ও শিল্প দফতরের কোনও আধিকারিক খোঁজ না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ, মালিককে পিটিয়ে মারার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এই বাগানের ম্যানেজার অঞ্জন কুমার মেদি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালবাজার শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:০৮
Share:

উদ্বেগে শ্রমিক পরিবার। সোনালি চা বাগানে দীপঙ্কর ঘটকের ছবি।

ক্ষোভের আগুন নিভে গিয়ে এখন হতাশা গ্রাস করেছে সোনালি চা বাগানকে। শনিবারের ঘটনার পর রবিবারের ছুটির দিনটা কেটেছে এক রকম ঘোরেই। সপ্তাহ শুরুর কর্মহীন দিনটাতেই আশঙ্কার সিঁদুরে মেঘ দেখছেন ডুয়ার্সের বাগরাকোটের এই চা বাগানের শ্রমিকরা।

Advertisement

ঘটনার পর প্রায় তিন দিন কেটে গেলেও রাজ্য শ্রম ও শিল্প দফতরের কোনও আধিকারিক খোঁজ না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ, মালিককে পিটিয়ে মারার ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এই বাগানের ম্যানেজার অঞ্জন কুমার মেদি। সোমবার নিজেই মালবাজারে টি বোর্ডের অফিসে গিয়ে সহ-অধিকর্তা অভিজিৎ সরকারের সঙ্গে দেখা করেন তিনি।

এ দিন ওই বাগানের মালিক রাজেশ ঝুনঝুনওয়ালাকে খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরও দু’জন মহিলাকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, “ধৃতদের জেরা করে বেশ কিছু সূত্র মিলেছে। আরও কয়েকজনকে খোঁজা হচ্ছে। নিশ্চয়ই খুনের ঘটনার কিনারা হবে।”

Advertisement

সোমবার দিনভরই থমথমে ছিল ওই বাগানের পরিস্থিতি। আপাতত বন্ধ বাগানে কাজ নেই। শ্রমিক সুমিত্রা ওঁরাও, পুকরি ওঁরাও এর মতো আরও অনেকের আশঙ্কা, “আমরা তো বেকার হয়ে গেলাম। সবাই তো খুনের ঘটনায় জড়িত ছিল না। কিন্তু ফল ভুগতে হবে সবাইকে।”

দিনের পর দিন মজুরি না পাওয়াটা ওই বাগানে নতুন কিছু নয়। বকেয়া নিয়ে বিক্ষোভেই শনিবার বাগানের মধ্যেই শ্রমিকদের হাতে খুন হন মালিক রাজেশবাবু। কিন্তু, ওই কারণে বাগান মালিককে খুন করা হবে কেন সেই প্রশ্নের রহস্য পুলিশ উদ্ধার করতে পারেনি এখনও। এলাকার তৃণমূল নেতাদের একাংশ ঘটনার আড়ালে কারও উস্কানি থাকতে পারে বলে পুলিশকে জানিয়েছেন। কিন্তু, খুনের ঘটনার তিন দিন পরেও পুলিশ কে বা কারা উস্কানি দিতে পারে সেই ব্যাপারে অন্ধকারে রয়েছে।

বাগানে এখন তৃণমূল প্রভাবিত শ্রমিক ইউনিয়ন শক্তিশালী। ফলে, তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের দিকেই গিয়েছে অভিযোগের তির। ধৃতদের প্রায় সকলেই তৃণমূল প্রভাবিত সংগঠনে যুক্ত বলে স্বীকার করেছেন। তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের কয়েকজন নেতাও একান্তে স্বীকার করেছেন, আড়াল থেকে শ্রমিকদের কেউ উস্কানি না দিলে এমন হওয়ার কথা নয়। বাগানের ম্যানেজার অঞ্জন কুমার মেদি জানান, শ্রম দফতর ও শিল্প দফতরের কেউ খোঁজখবর নেয়নি। যোগাযোগ করেনি মালিক সংগঠনগুলিও। যদিও শ্রম দফতরের বক্তব্য, এই বাগানের সমস্যা নিয়ে কেউ কখনওই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন