জেলযাত্রার নির্দেশ আছে। তবে বড়দিনটা এ বার এসএসকেএম হাসপাতালেই কাটবে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের। মঙ্গলবার এসএসকেএমের মেডিক্যাল বোর্ড মন্ত্রীর জন্য যে-সব পরীক্ষানিরীক্ষার ফিরিস্তি দিয়েছে, তাতে এটা স্পষ্ট।
এসএসকেএমের অধ্যক্ষ প্রদীপ মিত্রও এ দিন বলেন, “আপাতত হাসপাতালেই থাকতে হচ্ছে মদনবাবুকে।” তিনি জানান, মন্ত্রীর হল্টার পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তার রিপোর্ট আসতে আসতে বুধবার সন্ধ্যা হয়ে যাবে। আরও বেশ কিছু পরীক্ষা করতে হবে। সব রিপোর্ট নিয়ে বৃহস্পতিবারের আগে বোর্ড বসতে পারবে না। বোর্ড বৈঠকে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই তাঁর চিকিৎসার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
শুক্রবার জেলে গিয়েই মদনবাবু জানিয়েছিলেন, তাঁর বুকে চিনচিনে ব্যথা হচ্ছে। সেই ব্যথা এখনও কমেনি বলে জানান পিজি-র অধ্যক্ষ। তিনি বলেন, “সোমবারেও ওঁর বুকে ব্যথা হয়েছে। এ দিনও ওই ব্যথা হয়েছে। এর বেশি কিছু বলতে পারব না।” তবে চিকিৎসকেরা জানান, মন্ত্রী বলেছেন, মাঝেমধ্যেই তিনি চোখে অন্ধকার দেখছেন। মূত্রের সঙ্গে মাঝেমধ্যে রক্তও বেরোচ্ছে। সেই জন্যই এ দিন দুপুরে হল্টার পরীক্ষা শুরু হয়েছে মন্ত্রীর। এ ছাড়াও এক গুচ্ছ পরীক্ষা বুধবার শুরু হবে।
কী কী পরীক্ষা হবে?
হাসপাতালের খবর, ১২ রকমের রক্তপরীক্ষা হবে। এ ছাড়াও আছে মূত্রের কালচার, কিডনির পরীক্ষা, ইইজি, ব্রেন এমআরআই। বুকে ব্যথার জন্য দু’দিন ধরে ইকো-ডপলার পরীক্ষা হবে। ট্রেড মিল পরীক্ষা এবং প্রয়োজনে করোনারি এনজিওগ্রাফিও হতে পারে বলে জানান মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকেরা। পরীক্ষা শেষ করে মদনবাবুর শারীরিক পরিস্থিতির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে শুক্রবার হয়ে যাবে বলেই মনে করছেন এসএসকেএম-কর্তৃপক্ষ।
তবে হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, গত মাসে মন্ত্রী যখন পিজি-তে ভর্তি ছিলেন, তখনই অনেক পরীক্ষা হয়েছিল। এক মাসের মধ্যে সেই সব পরীক্ষা নতুন করে করার কী প্রয়োজন, সেই প্রশ্ন উঠছে। এসএসকেএমের এক চিকিৎসকের প্রশ্ন, “মেডিক্যাল বোর্ড তৈরির পরে ৪৮ ঘণ্টা কাটতে চলল। এখনও পর্যন্ত বোর্ডের সব সদস্য মন্ত্রীকে দেখেই উঠতে পারলেন না। তেমন কোনও গুরুতর সমস্যা থাকলে হাসপাতাল-কর্তৃপক্ষ কি এক জন মন্ত্রীর চিকিৎসার ব্যাপারে এত ঢিলেঢালা থাকতে পারতেন?” এই বিষয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি অধ্যক্ষ প্রদীপ মিত্র। তিনি বলেন, “আমাদের মন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা নিয়ে কারা দফতরকে রিপোর্ট দেওয়ার কথা। আমরা রিপোর্ট কারা দফতরের কাছে পাঠিয়ে দেব।”
মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রের খবর, এ দিন তিনি দিনের বেশির ভাগ সময় শুয়েই কাটিয়েছেন। বাড়ি থেকে আনা খাবারও তেমন খাননি। মদনবাবুর ঘনিষ্ঠ এক তৃণমূল নেতা বলেন, “দাদা কিছুই খেতে চাইছে না। মানসিক ভাবেও ঝিমিয়ে আছে বলে শুনেছি।”