স্ট্রং রুমের সামনে কড়া নিরাপত্তা।
ভাল ভাবে না জিতলে বিড়ম্বনা। অঘটন ঘটে গেলে তো কথাই নেই! প্রবল চাপের মুখে থাকা শাসক দলের জন্য দুই কেন্দ্রের উপনির্বাচন কী বার্তা নিয়ে আসবে, তার প্রতীক্ষা শেষ হচ্ছে আজই। বনগাঁ লোকসভা ও কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফল ঘোষণা হবে আজ, সোমবার। দু’টি কেন্দ্রই ছিল তৃণমূলের দখলে। তৃণমূলের সাংসদ ও বিধায়কের মৃত্যুতে সেখানে অকাল-ভোট হয়েছে।
দুই কেন্দ্রে শুক্রবার ভোট পড়েছিল প্রায় ৮২%। উপনির্বাচনের নিরিখে যা যথেষ্টই বেশি। এত বেশি হারে ভোটদান কীসের ইঙ্গিত, তা-ই নিয়েই জল্পনা চলেছে এই ক’দিন। বিরোধীদের একাংশের ধারণা, সারদায় দুর্নীতির অভিযোগ থেকে সর্বত্র অপশাসন শাসক দলের কাজকর্মে বিরক্ত মানুষ বার্তা দেওয়ার জন্যই বুথে ভিড় জমিয়েছিলেন। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, যে ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে কুৎসা ও অপপ্রচার চালানো হয়েছে, তার বিরুদ্ধে মানুষ জবাব দিতে চেয়েছেন। এই দাবি-পাল্টা দাবির নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ার কথা আজ দুপুরের মধ্যেই। ভোট-গণনা শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে।
নানা ঘটনায় বিপর্যস্ত শাসক দল যেমন ভোটের ফল নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছে, তেমনই এই উপনির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিজেপি-র কাছে। রাজ্যে উদীয়মান রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে গেরুয়া শিবির আরও প্রতিষ্ঠা পাচ্ছে কি না, তার উত্তর মিলবে উপনির্বাচনেই। এর আগে গত সেপ্টেম্বরে বিধানসভা উপনির্বাচনেই বসিরহাট (দক্ষিণ) কেন্দ্রে জিতে বর্তমান বিধানসভায় প্রথম বিধায়ক পেয়েছিল বিজেপি। বনগাঁ লোকসভায় গত বছর এবং কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভায় ২০১১-র নির্বাচনে বিজেপি অবশ্য শেষ করেছিল তৃতীয় স্থানে। তৃণমূলের সঙ্গে তাদের ব্যবধান বিস্তর। তবে বিজেপি নেতৃত্ব আশাবাদী, তৃণমূলে মোহভঙ্গ হওয়া মানুষ এ বার তাঁদের দিকেই ঝুঁকবেন। বিশেষত, তৃণমূলের মধ্যে থেকে অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা বিজেপি-র পালে আশা জুগিয়েছে।
দুই কেন্দ্রেই এর আগে দ্বিতীয় স্থানে ছিল সিপিএম। রাজ্যে একের পর এক নির্বাচনে যে ভাবে তাদের ধারাবাহিক রক্তক্ষরণ ঘটছে, তাতে রাশ টানাই এখন তাদের কাছে প্রধান চ্যালেঞ্জ। নিজেদের সর্বশেষ ভোট ধরে রাখাই তাদের সামনে প্রধান লক্ষ্য। আর কংগ্রেসের লড়াই অনেকটাই সম্মান বাঁচানোর। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী রবিবার বলেই দিয়েছেন, “দুই কেন্দ্রে আমরা জয়ের জন্য লড়িনি। জামানত বাঁচলেই জানব অনেক হয়েছে!” নানা জল্পনার মধ্যেও তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য আত্মবিশ্বাসী, জয়ের হাসি শেষ পর্যন্ত তোলা থাকবে মমতার জন্যই!