দুয়ারে কড়া নাড়ছে বর্ষা। হাওয়া অফিস বলছে, আজ বুধবার বা আগামিকালের মধ্যেই বর্ষা ঢুকে পড়বে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে। তার ইঙ্গিত হিসেবে মঙ্গলবার থেকেই শুরু হয়েছে প্রাক-বর্ষার বৃষ্টি। ভ্যাপসা গরম থেকে কিছুটা হলেও রেহাই মিলেছে দক্ষিণবঙ্গবাসীর। আবহাওয়াবিদদের দাবি, দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে সঙ্গে উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেও বর্ষা ছড়িয়ে পড়বে।
স্বাভাবিক নিয়মে দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা আসার কথা ৮ জুন। কিন্তু এ বার কেরলেই বর্ষা দেরিতে ঢুকেছে। সাধারণত সে রাজ্যে বর্ষা ঢোকে ১ জুন। এ বার সেখানে ৬ জুন ঢুকেছে বর্ষা। তার পরেও আরব সাগরের বাধায় বর্ষার পথে দেরি হয়েছে। কী রকম? জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে আরব সাগরে তৈরি হয়েছিল ঘূর্ণিঝড় নানৌক। তার টানে দক্ষিণে ভারতে ঢোকা মৌসুমিবায়ুর সক্রিয়তা কমে গিয়েছিল। মৌসম ভবন সূত্রের খবর, গত শনিবার থেকে দুর্বল হতে শুরু করে নানৌক। তার জেরে মৌসুমি বায়ু দক্ষিণ ভারত ছেড়ে উপরের দিকে উঠতে থাকে।
নানৌক দুর্বল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মধ্য বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। সেটি বাংলাদেশ উপকূলের কাছে হাজির হয়েছে। তার ফলে সে টেনে আনছে মৌসুমি বায়ুকে। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, মঙ্গলবার ঘূর্ণাবর্তটি একটি জায়গায় রয়েছে। তার শক্তি কমেনি। আর তাতেই দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা হাজিরের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
সাধারণত বর্ষা আসার আগে দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায় বৃষ্টি শুরু হয়। এ দিন থেকে তা শুরু হয়েছে বলে আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের আধিকারিক গোকুলচন্দ্র দেবনাথের বক্তব্য, “পরিস্থিতি অনুকূল হলে বুধবারেই বর্ষা ঢুকে পড়তে পারে।”
সে পরিস্থিতি অনুকূল হচ্ছে কিনা, তার জন্য এ দিনের বৃষ্টির চরিত্র বোঝাটা জরুরি। আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা বলছেন, বৃষ্টি যত বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়াবে, তত তাড়াতাড়ি বর্ষা ঢুকতে পারবে। তাই এ দিন বিকেল থেকেই দক্ষিণবঙ্গের বৃষ্টি চিত্রে চোখ রাখছে আবহাওয়া অফিস।
এ দিন সকাল থেকেই কলকাতা সংলগ্ন জেলাগুলিতে রোদের তেজ তেমন ছিল না। তবে আর্দ্রতা বেশি ছিল। দাপট ছিল ভ্যাপসা গরমের। বেলা গড়াতেই আকাশে মেঘ জমতে শুরু করে। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিও হয়েছে। মেঘলা আকাশের সঙ্গেই জোর বাড়ে দক্ষিণা হাওয়ারও। কোথাও কোথাও সাময়িক দমকা হাওয়াও দিয়েছে।
পশ্চিমাঞ্চলে তৈরি হওয়া বজ্রগর্ভ মেঘে গত কয়েক দিন রাতে জোর বৃষ্টি হওয়ায় মিলেছে স্বস্তি। এ দিন বিকেলের আবহাওয়া দেখে সেই স্বস্তি বজায় রাখার আশা আরও বেড়েছে বাঙালির মনে।