সারদা তদন্তে এ বার ইডি-র তলব মিঠুনকে

সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে নাট্যকর্মী তথা তৃণমূল সাংসদ অর্পিতা ঘোষ-সহ একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র তদন্তকারী দল। এ বার সেই তালিকায় উঠে এল অভিনেতা তথা রাজ্যসভার তৃণমূল সদস্য মিঠুন চক্রবর্তীর নাম। সম্প্রতি এই অভিনেতা-সাংসদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর মুম্বইয়ের ঠিকানায় একটি নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইডি। তাতে দিল্লি বা কলকাতায় ইডি-র দফতরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে সাংসদকে। বুধবার বারবার ফোন এবং এসএমএস করেও এই ব্যাপারে মিঠুনবাবুর প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৪ ০৩:৫১
Share:

পিটিআইয়ের ফাইল ছবি।

সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে নাট্যকর্মী তথা তৃণমূল সাংসদ অর্পিতা ঘোষ-সহ একাধিক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কেন্দ্রীয় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র তদন্তকারী দল। এ বার সেই তালিকায় উঠে এল অভিনেতা তথা রাজ্যসভার তৃণমূল সদস্য মিঠুন চক্রবর্তীর নাম। সম্প্রতি এই অভিনেতা-সাংসদকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর মুম্বইয়ের ঠিকানায় একটি নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইডি। তাতে দিল্লি বা কলকাতায় ইডি-র দফতরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে সাংসদকে। বুধবার বারবার ফোন এবং এসএমএস করেও এই ব্যাপারে মিঠুনবাবুর প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

Advertisement

কিন্তু সারদা কাণ্ডে মিঠুনকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হল কেন?

ইডি সূত্রের দাবি, সারদার অর্থ কোথায় কী ভাবে ব্যয় করা হয়েছে, তার তদন্তে নেমে কোন কোন সংস্থার সঙ্গে তাদের চুক্তি হয়েছিল, তা-ও খতিয়ে দেখা হয়। তাতেই দেখা যায়, সারদার এক বৈদ্যুতিন চ্যানেলের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মিঠুনবাবু। ওই অনুষ্ঠান করার জন্য তাঁর সঙ্গে চ্যানেল-কর্তৃপক্ষের কী ধরনের চুক্তি হয়েছিল, তিনি ওই অনুষ্ঠানের জন্য পারিশ্রমিক বাবদ কত টাকা নিয়েছিলেন, এই কেলেঙ্কারির তদন্তে সেগুলো জানা গুরুত্বপূর্ণ বলে ইডি-র ওই সূত্রে দাবি করা হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানায়, মিঠুনবাবুকে আজ, বৃহস্পতিবারেই কলকাতায় ইডি-র কাছে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। ইডি-র দাবি, সারদার মিডিয়া গ্রুপের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর হিসেবে মিঠুনবাবুকে বেশ কয়েক কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল।

ইডি-র সঙ্গে সঙ্গে সিবিআইয়ের তদন্তও চলছে পুরোদমে। ওই কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তকারীরা এ দিনও সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন এবং সাংসদ কুণাল ঘোষকে দফায় দফায় জেরা করেন। সিবিআই সূত্রের খবর, সারদার ভরাডুবির পরে সুদীপ্ত কাদের পরামর্শে এবং কী ভাবে গা-ঢাকা দিয়েছিলেন, তা জানার চেষ্টা চলছে। তৃণমূল সাংসদ কুণাল বারবার অভিযোগ করেছেন, সুদীপ্তের অন্তর্ধানের ঘটনায় রাজ্যের বেশ কয়েক জন প্রভাবশালী ব্যক্তির হাত ছিল। সারদা কাণ্ডে ধৃতদের জেরা করে ওই প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম জানার চেষ্টা করছে সিবিআই।

ওই তদন্ত সংস্থার একটি সূত্রের দাবি, সারদা কেলেঙ্কারিতে রাজ্য পুলিশের দায়ের করা বিভিন্ন মামলার নথি ঘাঁটতে গিয়ে তদন্তকারীরা বেশ কিছু অসঙ্গতি দেখতে পেয়েছেন। সেই সব অসঙ্গতি দূর করার জন্য সিবিআইয়ের তদন্তকারীরা রাজ্য পুলিশের অফিসারদের সঙ্গে আরও এক দফা বৈঠকে বসবেন।

বুধবারেই জামিন পেয়েছেন সারদা-প্রধান সুদীপ্তের ছেলে শুভজিৎ সেন। কলকাতার নগর ও দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারক মহম্মদ মুমতাজ খান তাঁকে শর্তাধীনে জামিন দেন। আদালতের নির্দেশ ছাড়া তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না।

ইডি-র দায়ের করা ‘মানি লন্ডারিং’ (টাকা পাচার) মামলায় গত এপ্রিলে বেহালা থেকে শুভজিৎকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ইডি-র আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র জানান, এই মামলায় ৬০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিতে না-পারায় আদালত শুভজিতের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছে।

এর আগে ইডি দু’দফায় শুভজিৎকে তাদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করেছে। ইডি-র হেফাজত পর্ব শেষ হওয়ার পরে আদালত তাঁকে জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। মঙ্গলবার মুখ্য বিচারকের আদালতে শুভজিতের জামিনের আবেদন জানান তাঁর আইনজীবী দ্বীপান্বিতা রায়। এ দিন সেই আবেদনই মঞ্জুর হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন