সারদা মামলায় ৪০৯ ধারা বহাল রাখল আদালত

প্রথম দফায় বাদ পড়ার পরে সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় ধারাটিকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির সেই ৪০৯ নম্বর ধারা (অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ) সারদা রিয়েলটি মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বহাল রাখারই নির্দেশ দিল আলিপুর জেলা আদালত। বুধবার জেলা জজ সমরেশপ্রসাদ চৌধুরী এই নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৫ ০৩:৩২
Share:

প্রথম দফায় বাদ পড়ার পরে সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির মামলায় ধারাটিকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ভারতীয় দণ্ডবিধির সেই ৪০৯ নম্বর ধারা (অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ) সারদা রিয়েলটি মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বহাল রাখারই নির্দেশ দিল আলিপুর জেলা আদালত। বুধবার জেলা জজ সমরেশপ্রসাদ চৌধুরী এই নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

সিবিআই গত ১৭ নভেম্বর সারদা রিয়েলটি মামলার চার্জশিট পেশ করে আলিপুর আদালতে। বিচারক পরের দিন সেই চার্জশিট গ্রহণ করার সময় ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪০৯ নম্বর ধারাটি বাদ পড়ে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ওই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত, তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ সৃঞ্জয় বসু আলিপুর জেলা আদালত থেকে জামিন পান চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি। সৃঞ্জয়বাবুর মতো একই যুক্তিতে জামিনের আবেদন করেন ওই মামলায় অভিযুক্ত রাজ্যের ক্রীড়া ও পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্র।

আইনজীবীরা জানান, ওই ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন। সারদার আর্থিক কেলেঙ্কারির মতো শোরগোল ফেলে দেওয়া মামলায় ধারাটি কী ভাবে বাদ পড়ে গেল, সেই প্রশ্ন ওঠে। ৪০৯ নম্বর ধারা যোগ না-করাটা লেখার ভুল বলে জানিয়ে আলিপুরের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট হারাধন মুখোপাধ্যায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি নির্দেশ দেন, সারদা মামলার চার্জশিটে ওই ধারা যোগ করতে হবে। সেই দিন ওই বিচারক নিজেই ধারাটি যুক্ত করে দেন। তার জেরে নিম্ন আদালতে বিক্ষোভও দেখান মদনবাবুর আইনজীবীরা। অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট আইনমাফিক ধারা যোগ করেননি, এই অভিযোগ তুলে ক্রীড়ামন্ত্রীর কোঁসুলিরা আলিপুরের জেলা জজ সমরেশপ্রসাদ চৌধুরীর আদালতে পাল্টা মামলা করেন।

Advertisement

এ দিন আলিপুর জেলা আদালতের আইনজীবীদের একাংশ জানান, সৃঞ্জয়বাবুর জামিনের আবেদন করে তাঁর আইনজীবীরা বলেছিলেন, যে-হেতু তাঁদের মক্কেলের বিরুদ্ধে ৪০৯ নম্বর ধারা যোগ করা হয়নি এবং অভিযুক্ত ৬০ দিনেরও বেশি জেল-হাজতে রয়েছেন, তাই তিনি জামিন পাওয়ার যোগ্য। আদালত সেই আবেদন শুনে সৃঞ্জয়বাবুকে জামিন দেয়। কিন্তু মন্ত্রী মদনবাবুর বিরুদ্ধে এখন ৪০৯ নম্বর ধারা যুক্ত হওয়ায় ৯০ দিনের আগে তাঁর জামিন পাওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, ওই ধারা যুক্ত হলে সিবিআই চার্জশিট পেশ করার জন্য সময় পাবে ৯০ দিন। মদনবাবু গ্রেফতার হন ১২ ডিসেম্বর।

৪০৯ ধারা নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই সারদা কাণ্ডে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র হেফাজতে থাকা প্রশান্ত নস্করকে এ দিন ফের জেল-হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশান্তকে এ দিন কলকাতা নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারক মহম্মদ মুমতাজ খানের এজলাসে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত জেল-হাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে। অভিযুক্তের তরফে আদালতে অভিযোগ করা হয়, জেল থেকে গাড়ির ব্যবস্থা না-করায় সরকারি হাসপাতালে প্রশান্তের শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষার ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না। কারা-কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিচারকের কাছে অভিযোগ জানান অভিযুক্তের কৌঁসুলি।

ইডি-র আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র জানান, প্রশান্তের শারীরিক পরীক্ষা নিরীক্ষার সব রকম ব্যবস্থা করার জন্য এ দিন কারা-কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন