সকালে ক্লাসের পরামর্শ পার্থের

সকাল থেকেই প্রচণ্ড রোদ। ঘেমো প্যাচপেচে গরম। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে অস্বস্তিও। এই পরিস্থিতিতে স্কুলের পড়ুয়াদের কিছুটা স্বস্তি দিতে দুপুরের ক্লাস এগিয়ে সকালে করার পরামর্শ দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করার জন্য স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৪ ০৩:২৬
Share:

সকাল থেকেই প্রচণ্ড রোদ। ঘেমো প্যাচপেচে গরম। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে অস্বস্তিও। এই পরিস্থিতিতে স্কুলের পড়ুয়াদের কিছুটা স্বস্তি দিতে দুপুরের ক্লাস এগিয়ে সকালে করার পরামর্শ দিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এ ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করার জন্য স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

বৃহস্পতিবার পার্থবাবু জানান, প্রচণ্ড গরমে ছাত্রছাত্রীদের সমস্যা হচ্ছে। তাই বৃষ্টি নামা পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখতে বা দুপুরের বদলে সকালে ক্লাস করানোর জন্য বেশ কিছু আবেদন এসেছে স্কুলশিক্ষা দফতরে। তিনি বলেন, “পরিস্থিতি যা, তাতে মনে হচ্ছে, দুপুরের ক্লাস সকালে করালেই সুবিধে। স্কুলগুলি এটা মাথায় রেখে ক্লাস এগিয়ে আনলে ভাল হয়।”

বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, বাঁকুড়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদের মতো কয়েকটি জেলায় কিছু কিছু স্কুল ক্লাসের সময় এগিয়ে এনেছে। কোথাও দু’-এক দিন স্কুল ছুটিও দেওয়া হয়েছে। কলকাতারও দু’টি প্রাথমিক স্কুলে দুপুরের ক্লাস সকালে করানো হচ্ছে। কিন্তু অনেক স্কুলেই ক্লাসের সময় এগিয়ে আনা সম্ভব নয় বলে জানান স্কুলশিক্ষকদের একাংশ। তাঁদের প্রশ্ন, যে-সব স্কুলে সকালে প্রাথমিক বিভাগের ক্লাস হয়, সেখানে দুপুরের ক্লাসের সময় এগোনো যাবে কী ভাবে? এই সমস্যার সমাধান যে কার্যত অসম্ভব তা মানছেন দফতরের কর্তারা। পরিকাঠামোগত সমস্যার জন্য এই সমস্যার সমাধানের পথ বাতলাতে পারছেন না তাঁরাও।

Advertisement

সরকারি স্কুলগুলিতে সকালে প্রাথমিকের ক্লাস হয়। তাই সেখানে দুপুরের ক্লাস এগিয়ে আনার সমস্যা আছে। কিন্তু সরকারি একটি স্কুলেই বৃহস্পতিবার বেশ কয়েক জন অসুস্থ হয়ে পড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে হেয়ার স্কুলে। সেখানে এ দিন ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির কয়েক জন ছাত্র প্রচণ্ড গরমে কাহিল হয়ে পড়ে বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক সুনীল দাস। এ দিন তিনি বলেন, “ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্র স্কুলে বেশ অসুস্থ হয়ে পড়ে। একজন চিকিৎসককে ডেকে আনা হয়। তিনি পরীক্ষা করে জানান, গরমেই অসুস্থ হয়ে পড়েছে ছেলেটি। তাকে চিকিৎসা করে একটু সুস্থ করে তুলে বাড়ি পাঠানো হয়েছে।” কয়েক জন অসুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে, কাউকে ক্লাস ছেড়ে বিশ্রাম কক্ষে পাঠাতে হয়েছে।

এ দিন বিকেলে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ছাত্র-অভিভাবকদের অনেকে গরমে ক্লাস বন্ধ রাখার আবেদন জানান স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে। প্রধান শিক্ষক বলেন, “শনিবার এমনিই স্কুল বন্ধ। শুক্রবারটা ষষ্ঠ, সপ্তম শ্রেণির ছাত্রদের ক্লাস বন্ধ রাখা হয়েছে। এর ফলে তিন দিন ওই দুই ক্লাসের পড়ুয়াদের স্কুলে আসতে হবে না, ওরা বাড়িতে বিশ্রাম নিক।” অন্যান্য শ্রেণির ক্লাস, স্কুলের কাজকর্ম নির্দিষ্ট নির্ঘণ্ট মেনেই হবে বলে জানান সুনীলবাবু।

গরমে ছাত্রছাত্রীদের সমস্যার কথা মাথায় রেখে এপ্রিলের শেষের দিকে নির্দেশিকা জারি করে গরমের ছুটি সপ্তাহ দুয়েক এগিয়ে আনতে বলেছিল স্কুলশিক্ষা দফতর। ১ থেকে ৩১ মে গরমের ছুটি ছিল সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত সব স্কুলে। কিন্তু দাবদাহ কমেনি জুনেও। ফের ছুটি দিলে পাঠ্যক্রম শেষ করা সমস্যা হবে। তা ছাড়া, আগামী সপ্তাহে পদযাত্রা, বসে আঁকো প্রতিযোগিতা, স্কুলের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা ইত্যাদি কর্মসূচি নিয়ে শুরু হচ্ছে নির্মল বিদ্যালয় সপ্তাহ। ক্লাসের সময় এগিয়ে এনেই গরম মোকাবিলার চেষ্টা করবে স্কুলশিক্ষা দফতর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন