সহানুভূতির সঙ্গে পাহাড় নিয়ে কথা চান মোদী

গোর্খাল্যান্ড-প্রশ্নে অত্যন্ত সতর্ক পদক্ষেপই করতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী। আঞ্চলিক ভাবাবেগ মাথায় রেখে সকলের বক্তব্যই সহানুভূতির সঙ্গে শোনা উচিত, এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়ে দিলেন বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থনে দার্জিলিং আসনটি লড়ছে বিজেপি। তৃণমূল সেখানে আলাদা লড়ছে। রাজ্যের শাসক দলের অভিযোগ, দার্জিলিং আসনটি পাওয়ার জন্য গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দিয়ে মোদীর দল আসলে রাজ্য ভাগের চেষ্টা করছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৪৩
Share:

গোর্খাল্যান্ড-প্রশ্নে অত্যন্ত সতর্ক পদক্ষেপই করতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী। আঞ্চলিক ভাবাবেগ মাথায় রেখে সকলের বক্তব্যই সহানুভূতির সঙ্গে শোনা উচিত, এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়ে দিলেন বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থনে দার্জিলিং আসনটি লড়ছে বিজেপি। তৃণমূল সেখানে আলাদা লড়ছে। রাজ্যের শাসক দলের অভিযোগ, দার্জিলিং আসনটি পাওয়ার জন্য গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার আশ্বাস দিয়ে মোদীর দল আসলে রাজ্য ভাগের চেষ্টা করছে। এর জবাবে মোদী বলেছেন, “এত বড় দেশে আঞ্চলিক ভাবাবেগকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করলে ক্ষত বাড়বে। সহানুভূতির সঙ্গে সকলেরই বক্তব্য শোনা উচিত, বোঝার চেষ্টা করা উচিত। আলোচনার মাধ্যমেই সমাধানসূত্র বার হয়। এ কথাই আমি সার্বিক ভাবে বোঝাতে চেয়েছি।” তার মানে কি তিনি বুঝিয়ে-সুঝিয়ে গোর্খাল্যান্ডের দাবি থেকে মোর্চাকে সরিয়ে আনবেন? মোদীর বক্তব্য, “না, না! আমার এই বক্তব্যকে যদি কেউ চ্যালেঞ্জ করে, সে কারণেই এ কথা আপনাদের বুঝিয়ে বলছি।”

বিজেপি সূত্রের ব্যাখ্যা, গোর্খাল্যান্ড নিয়ে মেপে পা ফেলতে চেয়েছেন মোদী। দল হিসাবে বিজেপি ছোট রাজ্যেরই পক্ষে। তবে তা সেই রাজ্যের দাবির যথার্থতা এবং বাস্তবতা বিচার করে। গোর্খাল্যান্ডের দাবির কথা সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার কথা বলে এক দিকে তিনি যেমন পাহাড়ের আন্দোলনকারীদের ভাবাবেগের দিকে খেয়াল রেখেছেন, তেমনই আলোচনার পথে সমাধানসূত্র বার করার উপরে জোর দিয়েছেন। যাতে বিজেপি-র বিরুদ্ধে রাজ্য ভাগের চেষ্টা নিয়ে নতুন কোনও হাতিয়ার কেউ না পেয়ে যায়।

Advertisement

মোদীর এই বার্তার প্রেক্ষিতে মোর্চার সহ-সম্পাদক বিনয় তামাঙ্গ বলেছেন, “শিলিগুড়িতে এসে জনসভায় মোদীজি যা বলেছিলেন, তাতেই আমাদের দাবির কথা রয়েছে। উনি নিজেই আমাদের দাবি নিয়ে পদক্ষেপ করবেন বলে জানিয়েছিলেন। আমরা আশাবাদী।”

সিপিএম এবং কংগ্রেস অবশ্য মোদীকে রেয়াত করতে চায়নি। প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, “যে কোনও বিষয়ে আলোচনা হতেই পারে। তবে এ ধরনের দাবি যে গ্রহণযোগ্য এবং বাস্তবসম্মত নয়, সেটা শুরুতেই রাজনৈতিক ভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে।” তাঁর অভিযোগ, পৃথক রাজ্য নিয়ে সহানুভূতির সুযোগ নিয়ে বিজেপি ভোটের রাজনীতি শুরু করেছে। তৃণমূল আর কংগ্রেসও একই পথের পথিক। অশোকবাবুর মন্তব্য, “এখন আলোচনার কথা বলছেন বটে। কিন্তু ভোটের আগে উনি (মোদী) শিলিগুড়িতে এসে এই দাবিকেই উৎসাহিত করে গিয়েছেন!” কংগ্রেসের দার্জিলিং পাহাড় কমিটির সভাপতি পি টি লামারও বক্তব্য, “মোদীর কথাবার্তায় ধোঁয়াশা রয়েছে। বিজেপি-র ইস্তাহারেও পৃথক রাজ্যের দাবি যথাযথ ভাবে উল্লেখ করা হয়নি। এগুলি সবই মানুষের চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা!”

বিজেপি-র প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর কৌশলী অবস্থানের দিকে ইঙ্গিত করে অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগের সম্পাদক প্রতাপ খাতি বলেছেন, “মোদী আসলে নিরাপদ মন্তব্য করতে চাইছেন। কেন্দ্রে সরকার গড়তে হলে তৃণমূলের সমর্থন প্রয়োজন মনে করে উনি সব দিক বজায় রেখে কথা বলছেন! বিজেপি বা মোর্চা কেউই পৃথক রাজ্যের দাবিকে যথাযথ গুরুত্ব দিচ্ছে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন