ডাক্তারদের পর্যবেক্ষণে তখন হাসপাতালের বিছানায় জেভিয়ার কানিঙ্গহাম।
গালের পাশ দিয়ে শিক ঢুকে গিয়েছিল। আর সেই শিক বেরিয়ে ছিল ঘাড়ের ঠিক একটু উপর দিয়ে। অথচ চোখ, মস্তিস্ক, আর মেরুদণ্ডের কোনও ক্ষতি হল না।
এমন কাণ্ড দেখে তাজ্জব বনে গিয়েছিলেন ডাক্তাররা। আমেরিকার কানসাস শহরে ছোট্ট জেভিয়ারের সঙ্গে ঘটে এমন কাণ্ড। রাতারাতি তাকে ভর্তি করা হয় একটি হাসপাতালে। ডাক্তারেরা দেখেই বলেন, ‘‘লাখে একজনের ক্ষেত্রে ঘটে এরকম কাণ্ড।’’ কারণ কোনও ভাবেই এই শিক জেভিয়ারের ব্রেনকে ক্ষতিগ্রস্ত করেনি।
নিউরো সার্জেন কোজি এবারসোলের কথায়, ‘‘ওই শিক জেভিয়ারের চোখ, ব্রেন আর ওর মেরুদণ্ডকেও বাঁচিয়ে দিয়েছে।’’ এমন কাণ্ড দেখে তাজ্জব হয়ে গিয়েছিলেন কোজি। তিনি আরও বলছেন, ‘‘এ রকম সচরাচর ঘটে না। একটা ৬ ইঞ্চির শিক ওর গালের পাশ দিয়ে ঢুকল, অথচ যে যে জায়গাগুলোয় ক্ষতি হওয়ার কথা, সেগুলো একদম ঠিক!’’
আরও পড়ুন: ১০০ ঘণ্টা টিভি দেখলেই মিলবে দেড় লক্ষ টাকা!
আরও পড়ুন: জাহাজ থেকে বিমান, সব কিছুই স্রেফ গায়েব হয়ে যায় জাপানের সমুদ্রের এই অঞ্চলে!
ঘটনাটি ঘটে গত শনিবার দুপুরবেলা। মিসৌরির কানসাস শহরে বাড়ি থেকে খানিকটা দূরে বন্ধুদের সঙ্গে খেলছিল ছোট্ট জেভিয়ার। ট্রিহাউসে মই দিয়ে উপরে উঠছিল সে। হঠাৎই একঝাঁক পোকা ধেয়ে আসে তার সামনে। মই সমেত সোজা উপর থেকে নীচে একটা শিকের উপরে পড়ে যায় জ়েভিয়ার। তার চোখের ঠিক নীচ দিয়ে ঢুকে এক্কেবারে ঘাড়ের একটু উপর দিয়ে বেরিয়ে যায় সেই শিক।
এরকম অবস্থায় চিৎকার করতে করতে এক ছুটে বাড়িতে চলে আসে সে। জেভিয়ারের মা গ্যাব্রিয়েল মিলারের কথায়, ‘‘আমি ওর চিৎকার শুনতে পাচ্ছিলাম। জেভিয়ার বাড়ি ঢোকার পর দেখি শিকটা গেঁথে রয়েছে ওর ঘাড়ের ঠিক উপরে।’’
দশ বছরের ছেলের এমন সাহস দেখে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে গিয়েছিল ডাক্তারদেরও।
নিজে পায়ে হেঁটেই স্থানীয় এক হাসপাতালের এমারজেন্সি রুম অবধি পৌঁছে গিয়েছিল জেভিয়ার। কিন্তু এমন অস্ত্রোপচার করার জন্য প্রয়োজন সুদক্ষ চিকিৎসকদের। আর তাই জেভিয়ারকে রেফার করা হয় অন্য একটি হাসপাতালে।
সেরকম রক্তপাতও হচ্ছিল না। আর তাই একটু সময় নিয়েই বোর্ড গঠন করে অস্ত্রোপচার করতে চাইছিলেন ডাক্তাররা, জানালেন জেভিয়ারের মা। আর তাই শনিবার রাতে না করে, রবিবার সকালেই অস্ত্রোপচারকরবেন বলে ঠিক করেন ডাক্তাররা।
রবিবার সকালে উঠেই মাকে জেভিয়ার জিজ্ঞেস করে, ‘‘আমি বেঁচে আছি?’’
নিউরোসার্জেন কোজি এবারসোল বলছিলেন, ‘‘এমন এক পরিস্থিতিতে জেভিয়ার খুবই শান্ত ছিল। আর ওই শিক বার করার জন্য ওর পরিবারের লোকজনও বিন্দুমাত্র তাড়হুড়ো করেনি।’’
১০০ জন ডাক্তার মিলে এই অপারেশন করেছেন বলে জানিয়েছেন এবারসোল। ব্লাডভেসেলের যাতে কোনও ক্ষতি না হয়, সে দিকটা লক্ষ্য রেখে আস্তে আস্তে বের করা হয় ওই সিক। তবে ১০ বছরের ছেলের এমন সাহস দেখে অবাক এবারসোল থেকে আরও বাকি ডাক্তাররা।
(সারা বিশ্বের সেরা সব খবর বাংলায় পড়তে চোখ রাখতে পড়ুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।)