বছরের পর বছর ‘খাঁচায় আটক’ ১২ মেয়ে উদ্ধার

বছর খানেক ধরেই কোথায় যেন একটা খটকা লাগছিল জেন বেটজের। স্বামীকে সে কথা বলেওছিলেন তিনি। শহরতলির শান্ত জীবনের সঙ্গে কেমন যেন বেখাপ্পা পড়শি লি ক্যাপলানের বাড়ির বাগানে ঘুরে বেড়ানো মেয়েদের মুখগুলো। সব সময়ই যেন বিষাদগ্রস্ত। মুখে হাসি নেই। খেলাধুলোয় উৎসাহ নেই। কেমন যেন ভয়ে ভয়ে রয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৬ ১৮:৩৩
Share:

অভিযুক্তের বাড়ি, ইনসেটে লি ক্যাপলান।

বছর খানেক ধরেই কোথায় যেন একটা খটকা লাগছিল জেন বেটজের। স্বামীকে সে কথা বলেওছিলেন তিনি। শহরতলির শান্ত জীবনের সঙ্গে কেমন যেন বেখাপ্পা পড়শি লি ক্যাপলানের বাড়ির বাগানে ঘুরে বেড়ানো মেয়েদের মুখগুলো। সব সময়ই যেন বিষাদগ্রস্ত। মুখে হাসি নেই। খেলাধুলোয় উৎসাহ নেই। কেমন যেন ভয়ে ভয়ে রয়েছে। জেনের মনে ধীরে ধীরে সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে। শেষমেশ মনের কথাটা আর চেপে রাখেননি। স্থানীয় মিডিয়ায় সে কথা জানান তিনি। খবর যায় বাক্‌স কাউন্টি পুলিশের কাছেও। তড়িঘড়ি ছুটে আসেন পুলিশকর্মীরা। আর কেঁচো খুড়তে বেরিয়ে পড়ে কেউটে সাপ। পেনসিলভেনিয়ার লোয়ার সাউদাম্পটন এলাকার বাসিন্দা ক্যাপলানের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ১২টি মেয়ে। ছ’মাস থেকে আঠারো বছর বয়সী ওই মেয়েরা বেশ কয়েক বছর ধরেই ক্যাপলানের বাড়িতে রয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এর মধ্যে আঠারো বছরের কিশোরীর দু’টি কন্যাসন্তানও রয়েছে। পুলিশের অনুমান, ওই দুই কন্যাসন্তান-সহ বাকি ন’জনের ক্যাপলানের সন্তান। গত বৃহস্পতিবার এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায়। ৫১ বছরের ক্যাপলানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা-সহ একাধিক চার্জ গঠন করেছে বাক্‌স কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট পুলিশ। পুলিশি জেরায় ক্যাপলান স্বীকার করেছে, ওই কিশোরীর দুই কন্যাসন্তানের বাবা সে। তবে জেরায় ক্যাপলান দাবি করেছে, চার বছর আগে ওই কিশোরীকে ‘উপহার’ হিসেবে পেয়েছিলেন তিনি। এমনকী, ওই মেয়েটির মা-বাবাই তাঁকে ক্যাপলানের হাতে তুলে দেন। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে কিশোরীর বাবা জানিয়েছেন, এক সময় তাঁদের দুরবস্থায় আর্থিক সাহায্য করেছিল ক্যাপলান। তার ‘প্রতিদান’ হিসেবেই নিজের মেয়েকে ক্যাপলানের হাতে তুলে দেয় তারা।

Advertisement

লোয়ার সাউদাম্পটন পুলিসের পাবলিক সেফটি ডিপার্টমেন্টের ডিরেক্টর রবার্ট হুপার জানিয়েছেন, ক্যাপলানের বাড়ির বেসমেন্টে ‘খাঁচায় রাখা মুরগির’র মতো বসবাস করত ওই বারোটি মেয়ে। ক্যাপলানের যৌন অত্যাচারের শিকার আঠারো বছরের কিশোরী প্রথম বার অন্তঃসত্ত্বা হয় মাত্র ১৪ বছর বয়সে। ঘটনার পর ক্যাপলানের সঙ্গে ওই কিশোরীর মা-বাবাকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই মেয়েদের কোনও বার্থ সার্টিফিকেট পাওয়া যায়নি। এমনকী, তারা যে কোনও দিন স্কুলে যেত এমন প্রমাণও মেলেনি। বাকিদেরও একই ভাবে যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ক্যাপলানের সঙ্গে মাঝেমধ্যে বাইরে বেরতে দেখা গিয়েছে ওই মেয়েদের। পড়শিরা তা নিয়ে কানাকানি করলেও ক্যাপালনের বাড়িতে কখনই পুলিশি তল্লাশি হয়নি। ঘটনায় অভিযুক্ত ক্যাপলান-সহ কিশোরীর মা-বাবা আপাতত জামিন পেয়েছেন। গোটা ঘটনায় এখনও বিস্ময়ের রেশ কাটেনি এলাকার বাসিন্দাদের।

আরও পড়ুন

Advertisement

‘যৌন জেহাদ’-এ না, মসুলে ২৫০ মহিলাকে হত্যা করল আইএস

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন