নৌকা়ডুবির ঘটনায় ধৃত ক্যাপ্টেন-সহ ২

রবিবার ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ২৮ জনের মধ্যে ছিলেন ওঁরা দু’জন। গত কাল সন্ধেয় সবে পা রেখেছেন সিসিলির মাটিতে। আর রাতেই গ্রেফতার হলেন তাঁরা। ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নৌকার ক্যাপ্টেন-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

রোম শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৪৬
Share:

রবিবার ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ২৮ জনের মধ্যে ছিলেন ওঁরা দু’জন। গত কাল সন্ধেয় সবে পা রেখেছেন সিসিলির মাটিতে। আর রাতেই গ্রেফতার হলেন তাঁরা।

Advertisement

ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নৌকার ক্যাপ্টেন-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

ইতালীয় উপকূল বাহিনীর তৎপরতায় উদ্ধার হওয়া ২৮ জনের ওই দলটি গত কাল সন্ধেয় সিসিলির বন্দর এলাকা ক্যাটানিয়ায় পৌঁছেছে। ওই দলেই ছিলেন নৌকাটির ক্যাপ্টেন এবং এক কর্মী।

Advertisement

সূত্রের খবর, ধৃত ওই ক্যাপ্টেনের নাম মহম্মদ আলি মালেক (২৭)। তিনি তিউনিসিয়ার বাসিন্দা। সেই সঙ্গে, ওই নৌকাটির কর্মী সিরিয়ার বাসিন্দা বছর পঁচিশের মাহমুদ বিখিতকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এঁদের বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে অন্য দেশে ঢোকা এবং মানুষ পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। সেই সঙ্গে ক্যাপ্টেন মালেকের বিরুদ্ধে নির্বিচারে গণহত্যারও অভিযোগ এনেছে পুলিশ।

কী ঘটেছিল সে দিন?

শনিবার রাতের অন্ধকারে লিবিয়া থেকে অবৈধ ভাবে ইউরোপে প্রবেশ করছিল উদ্বাস্তু-বোঝাই একটি মাছ ধরার নৌকা। ওই নৌকায় গাদাগাদি করে তোলা হয়েছিল শতাধিক শরণার্থীকে। রবিবার ভূমধ্যসাগরে উল্টে যায় নৌকাটি। আশঙ্কা করা হচ্ছে, তাতে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ন’শো শরণার্থী। তবে ইতালীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর তৎপরতায় বেঁচে ফিরেছেন ২৮ জন। এঁদের মধ্যে উদ্ধার হওয়া এক বাংলাদেশি যুবক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মাছ ধরার ওই নৌকাটিতে একটি খোলের মধ্যে প্রায় ৩০০ জনকে তালাবন্ধ করে আটকে রাখা হয়েছিল। নৌকাটি যখন তলিয়ে যায়, সেই সময় তালাবন্দি ওই ৩০০ শরণার্থী বাঁচার চেষ্টা করার সুযোগই পাননি। বন্দি অবস্থাতেই তলিয়ে যান তাঁরা।

এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী ম্যাতিউ রেন্‌জি। পাশাপাশি, তিনি ওই ঘটনাকে ১৮ শতকের ক্রীতদাস বেচা-কেনার সঙ্গেও তুলনা করেছেন।

এ দিকে, রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার মুখপাত্র কার্লোত্তা সামি জানান, ইউরোপে ঢুকতে চেষ্টা করা ওই শরণার্থীদের মধ্যে বেশির ভাগই কমবয়সি। এঁদের মধ্যে ১০ থেকে ১২ বছরের শিশুও রয়েছে। তবে জীবিত অবস্থায় যাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁদের চোখেমুখে এখনও আতঙ্কের ছাপ। ফলে এখনও পর্যন্ত তাঁদের সঙ্গে কথা বলা যায়নি। উদ্ধার হওয়া ওই শরণার্থীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেই পরিস্থিতি কিছুটা আঁচ করা যাবে। আবার, ইতালীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর আশঙ্কা, এখনও দশ লক্ষেরও বেশি শরণার্থী যুদ্ধ বিধ্বস্ত লিবিয়া ছেড়ে ইউরোপে আসার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এই দুর্ঘটনার পরেও থেমে নেই ইউরোপে পাড়ি দেওয়ার ঘটনা। গত কাল তুরস্কের দিক থেকে উদ্বাস্তু-বোঝাই একটি নৌকা গ্রিসের দিকে যাচ্ছিল। সেই সময় আচমকা ঝড় ওঠায় নৌকাটি ডুবে যাচ্ছিল। ওই নৌকা থেকে ৩০ জন শরণার্থীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এঁরা প্রত্যেকেই সিরিয়ার বাসিন্দা। ওই নৌকারও ক্যাপ্টেনের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন