ঘাতক: নেদারল্যান্ডসের উটরেখ্টে ট্রাম থেকে নামানো হচ্ছে মৃতদেহ। (ইনসেটে আততায়ী) সোমবার। এএফপি
সবে তিন দিন পার হয়েছে নিউজ়িল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের সন্ত্রাসবাদী হামলার। সেই আতঙ্ক ফের নেদারল্যান্ডসের উটরেখ্ট শহরে। এ দিন এই শহরের একটি ট্রামে বন্দুকবাজের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন তিন ব্যক্তি। জখম হয়েছেন অন্তত ন’জন। এতে সম্ভবত সন্ত্রাসের ছায়া রয়েছে বলে মনে করছে ডাচ পুলিশ।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এক ব্যক্তি উটরেখ্ট-এর রাস্তায় একটি ট্রামে উঠে যাত্রীদের উপরে গুলি চালাতে শুরু করে। সন্ত্রাসদমন বাহিনী সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। তবে তত ক্ষণে আততায়ী গাড়ি করে পালিয়েছে। পুলিশ জানায়, ওই ব্যক্তি তুরস্কের নাগরিক। বয়স ৩৭। স্থানীয় সময় সকাল পৌনে এগারোটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। কাপড়ে মোড়া অবস্থায় একটি দেহ ট্রামলাইনে পড়ে থাকতে দেখা যায়। জায়গাটি ঘিরে ছিল পুলিশ ও আপৎকালীন বিভাগের লোকজন। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আশপাশের এলাকার যান চলাচল। এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, ‘‘লোকটা হঠাৎ এসে পাগলের মতো গুলি চালাতে শুরু করল।’’ আর এক প্রত্যক্ষদর্শী আহত এক মহিলাকে তুলে নেন নিজের গাড়িতে। পুলিশ আসা পর্যন্ত মহিলার জ্ঞান ফেরেনি বলে জানান তিনি। ঠিক কত জন জখম, এখনও স্পষ্ট নয়।
শাসক জোটের একটি দলের সঙ্গে ডাচ প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের জরুরি বৈঠক ছিল। তিনি বৈঠক বাতিল করে পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন। পুলিশ পরে জানিয়েছে, সন্ত্রাসের আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আততায়ী পলাতক বলে চিন্তা আরও বেড়েছে। সন্ত্রাসবাদী হামলার আশঙ্কায় দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সর্বোচ্চ সীমায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, আপাতত মুখোশধারী সশস্ত্র পুলিশ রাস্তার দখল নিয়েছে। ব্যাহত ট্রাম পরিষেবা। ট্রেনও বন্ধ। স্কুলগুলোকে বলা হয়েছে, দরজা বন্ধ রাখতে।
ইউরোপের অন্য দেশগুলি যতটা এ ধরনের হামলার সঙ্গে পরিচিত, নেদারল্যান্ডস ততটাও নয়। তবে গত এক বছরে সে ছবিটা বদলেছে। ২০১৮-র অগস্টেই ১৯ বছরের এক আফগান তরুণ অ্যামস্টারড্যামের সেন্ট্রাল স্টেশনে ছুরি নিয়ে জখম করেছিল দুই মার্কিন পর্যটককে। তাকে গুলি করে জখম করেছিল পুলিশ। পুলিশের দাবি, সেপ্টেম্বরে সাত জনকে গ্রেফতার করে বড়সড় জঙ্গি হামলার ছক ভেস্তে দেওয়া গিয়েছিল। একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষের উপরে হামলা চালানোর ছক কষা হয়েছিল। জুন মাসেও ধরা পড়েছে এমন দুই সন্দেহভাজন। পুলিশ জানিয়েছে, রটারড্যামে পরিচিত একটি সেতু ও ফ্রান্সে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিল তারা। মরোক্কান বংশোদ্ভূত ছিল ওই দুই যুবক।