সেনা স্কুলে বালিশ যুদ্ধে ঘায়েল ৩০

বালিশের ঘায়ে কাবু মার্কিন সেনা। প্রতি বছরের মতোই এ বারও নিউ ইয়র্কের ওয়েস্ট পয়েন্ট সেনা স্কুলে বসেছিল ‘পিলো ফাইট’-এর আসর। সাত সপ্তাহের কঠিন প্রশিক্ষণ শেষে ওই একটা দিনই যা একটু মজার স্বাদ পান সেনা স্কুলে পা রাখা ছাত্ররা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নিউ ইয়র্ক শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:৫৪
Share:

বালিশের ঘায়ে কাবু মার্কিন সেনা।

Advertisement

প্রতি বছরের মতোই এ বারও নিউ ইয়র্কের ওয়েস্ট পয়েন্ট সেনা স্কুলে বসেছিল ‘পিলো ফাইট’-এর আসর। সাত সপ্তাহের কঠিন প্রশিক্ষণ শেষে ওই একটা দিনই যা একটু মজার স্বাদ পান সেনা স্কুলে পা রাখা ছাত্ররা। কিন্তু নির্ভেজাল সেই আনন্দ উৎসবে এ বার বইল রক্তের ধারা। জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে পড়ে গেলেন অনেকে। কারও বা ভাঙল হাড়-পাঁজর। সব মিলিয়ে আহতের সংখ্যা প্রায় ৩০।

ওয়েস্ট পয়েন্ট স্কুলে বালিশ যুদ্ধ কিন্তু নতুন নয় মোটেই। ১৮৯৭ থেকে চলে আসছে এই প্রথা। সরকারি প্রতিষ্ঠান ওয়েস্ট পয়েন্ট থেকেই পাশ করে বেরিয়েছেন দেশের তাবড় তাবড় সেনা নায়কেরা। কিন্তু ঐতিহ্যবাহী এই স্কুলে এমন ঘটনা মনে করতে পারছেন না তাঁরা কেউ।

Advertisement

তা হলে এ বার এমন বিপত্তির কারণ কী? শোনা যাচ্ছে, বালিশের খোলসে তুলো নয়, বরং ভারী কোনও জিনিস ভরে এনেছিলেন অনেকে। আর সেটা তুলেই সজোরে বসিয়ে দিয়েছেন সহপাঠীর ঘাড়ে-মাথায়।

বালিশ যুদ্ধের ভিডিওটি সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে এত দিন এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। একটি মার্কিন দৈনিকের দাবি, এটা যে তাদেরই ক্যাম্পাসের ঘটনা— মোটে দু’দিন আগে সে কথা স্বীকার করে নিয়েছে ওয়েস্ট পয়েন্ট সেনা স্কুল।

তবে রক্তারক্তির পরও শতক পুরনো এই প্রথা বন্ধের কোনও পরিকল্পনা নেই বলেই সাফ জানিয়ে দিয়েছেন স্কুলের মুখপাত্র কলোনেল কাসকের। তাঁর কথায়, এই ছদ্ম হাতাহাতিতেই তো তৈরি হয় বন্ধুত্ব। গরমের মধ্যে তাদের যে সাত সপ্তাহের কঠোর প্রশিক্ষণ চলে, সে সময় পাশের জনের সঙ্গে কথা বলারও অনুমতি পায় না পড়ুয়ারা। পরের ধাপ আরও কড়া। তাই তার আগে একটা দিনের ফুরসত পায় ছাত্ররা। রাতে বালিশ যুদ্ধের আসরেই সারা বছরের মজার ভাগ উসুল করে নেয় তারা।

তবে মজার মাসুল যে এ ভাবে দিতে হবে, আন্দাজ করতে পারেননি কেউই। বালিশের মতোই আচমকা ঘাড়ে এসে পড়েছে হেলমেট। কখনও বা উড়ে এসেছে ধোঁয়া বোমা। অচেনা আঘাতে তত ক্ষণে ছত্রভঙ্গ হবু জওয়ানরা। অজ্ঞান হয়ে পড়েছেন প্রায় ২৪ জন। ঠোঁট ফেটে গলগল করে রক্ত ঝরছে অনেকের। কেউ বা আবার ভাঙা পায়ের যন্ত্রণায় মাটিতে কাতরাচ্ছেন। শেষে অবস্থা সামাল দিতে ডাকতে হয় অ্যাম্বুল্যান্স।

শত্রুর বিরুদ্ধে ক’দিন বাদে কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে যুদ্ধ করবেন এঁরা। কিন্তু তার আগে সহপাঠীদের হাতেই এ রকম বেধড়ক মার খেয়ে হাল ছাড়ছেন না পড়ুয়ারা। বরং তাঁদের ভাবটা, ‘মারামারি করে রক্ত না বেরোলে আর হলটা কী!’ একই মত স্কুল কর্তৃপক্ষেরও। তাই আপাতত দোষীদের খুঁজে বার করে শাস্তির খাঁড়া ঝোলাচ্ছেন না তারা। বরং আগামী দিনেও ‘মজার খেলা’ চলবে, সিদ্ধান্ত ওয়েস্ট পয়েন্টের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন