ক্লাসে পড়ুয়াদের হুমকি দিলেন শিক্ষক। প্রতীকী ছবি।
ক্লাসে মনোযোগ দিয়ে পড়া শুনছিল পড়ুয়ারা। ক্লাস নিচ্ছেন তাদেরই প্রিয় শিক্ষক। প্রোজেক্টর স্ক্রিনে একটার পর একটা চ্যাপ্টার, উঠে আসছে প্রয়োজনীয় পাঠ।
হঠাৎই চাপা গুঞ্জন ক্লাসে। পড়ুয়াদের চোখে মুখে আতঙ্ক। ক্লাস জুড়ে নীরবতা। পিন পড়লেও যেন শব্দ শোনা যাচ্ছে!
প্রোজেক্টর স্ত্রিনে তত ক্ষণে ভেসে উঠেছে কয়েকটি লাইন। আর সেটা দেখেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে গোটা ক্লাসে।
শিক্ষক লিখেছেন, ‘‘চুপ করে পড়ো... আমি শিশুদের হত্যা করতে চাই, কিন্তু আমি এক জন খ্রিস্টান এবং কখনও কোনও ব্যক্তিকে আঘাত করি না। তাই চুপ করে পড়া শোনো।’’ প্রিয় শিক্ষকের কাছ থেকে এমন মন্তব্য আশা করেনি কোনও পড়ুয়াই। ভয় এবং আতঙ্কে চুপ করে যায় সবাই। প্রোজেক্টর স্ক্রিনে ভেসে ওঠা লাইনগুলি তখন গোপনে মোবাইল বন্দি করে ফেলেছে এক পড়ুয়া। ক্লাস শেষ হতেই তুমুল হইচই পড়ে যায় স্কুলে। শিক্ষকের এমন আচরণে হতবাক স্কুল কর্তৃপক্ষ। গোটা ঘটনা তত ক্ষণে জেনে গিয়েছেন অভিভাবকেরাও। শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে সরব হন তাঁরাও।
আরও পড়ুন:
৬২ তলার ছাদে ঝুলে সেলফি তুলতে গিয়ে মৃত ‘সুপারম্যান’
৩৫ বছর পরে প্রাণ পাচ্ছে সৌদি সিনেমা
শিক্ষকের এই মন্তব্যই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছবি: টুইটারের সৌজন্যে।
ঘটনাটি কলোরাডোর ওথো ই.স্টুয়ার্ট মিডল স্কুলের। গত ১ ডিসেম্বর ক্লাস চলাকালীন এমন মন্তব্য করেন শিক্ষক ক্রিস বুরঘার্ট। পরে সোশ্যাল মিডিয়ার হাত ধরে ওই মন্তব্য ভাইরাল হয়ে যায় গোটা নেট দুনিয়ায়। স্কুলের ফেসবুক পেজেও পোস্ট করা হয় ওই মন্তব্য। পড়ুয়া এবং অভিভাবকদের অভিযোগের ভিত্তিতে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেন স্কুল সুপারিনটেন্ডেন্ট ক্রিস ফিডলার। তদন্ত চলাকালীনই পদত্যাগ করেন তিনি।
স্কুল কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যা, ওই শিক্ষক ক্রিস বুরঘার্ট ছাত্রমহলে খুবই জনপ্রিয় ছিলেন। কেন তিনি এমন কথা বললেন তাতে অবাক গোটা স্কুলই। ফিডলার জানিয়েছেন, যতই জনপ্রিয় হোন না কেন, পড়ুয়াদের এমন করে ভয় দেখানো অপরাধ। তাই তাঁর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থাই নেওয়া হবে। তাঁর কথায়, ‘‘আমার বিশ্বাস, কোনও পরিস্থিতিতেই এক জন শিক্ষকের এমন মন্তব্য করা উচিত নয়। মজা করেও নয়।’’ একই মত, স্কুলের প্রিন্সিপাল ফ্যাব্রিসিও ভেলেজেরও। তাঁর কথায়, ‘‘এই ঘটনা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আমি অভিভাবকদের জানাচ্ছি, ভয়ের কোনও কারণ নেই। ওই শিক্ষক পদত্যাগ করেছেন।’’