পোড়া বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে এই সেলফি তুলেছেন ওই যুগল। ছবি: টুইটার।
বিপদ মাথায় নিয়েও কতটা হাসিমুখে থাকা যায়! বা বিপদ ঘনিয়ে আসার পরও কী ভাবে এতটা হাসিমুখে থাকা যায়! বিশ্বের কাছে নিদর্শন হয়ে রইলেন এই চিনা যুগল। বাড়ির অর্ধেকাংশ পুড়ে ছারখার হয়ে গিয়েছে। এমন অবস্থায় প্রায় সকলেরই মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ার কথা। কিন্তু ওই দম্পতি হাসি মুখে সেলফি তুললেন, পোড়া বাড়ির ভিডিও করলেন। নতুন বছরে সকলের শুভেচ্ছা কামনা করে সেই সেলফি এবং ভিডিও শেয়ারও করলেন। বাড়িতে আগুন লাগলে কী ভাবে তার মোকাবিলা করা উচিত এ নিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতাও শেয়ার করলেন।
জং চেং চিনের কোনও বড় শিল্পপতি নন। খুব অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের ছেলেও নন। নিতান্ত মধ্যবিত্ত পরিবার। প্রেমিকার সঙ্গে তিনি দক্ষিণ চিনের গুইলিনে একটি বাড়িতে থাকেন। চিনের গুইলিনে একটি ছোটখাটো রেস্তোরাঁ চালান দু’জনে। তা নিয়েই তাঁদের ছোট সংসার। সম্প্রতি একটা রুম হিটার থেকে তাঁদের বাড়িতে আগুন লেগে যায়।
জং চেং সংবাদমাধ্যমকে জানান, ঘটনার সময় তিনি বাথরুমে ছিলেন। কিছু পোড়া গন্ধ পেয়ে দরজা খুলে বাইরে আসতেই চমকে যান। ঘরের ভিতরেই দাউদাউ করে আগুন জ্বলছিল। সঙ্গে সঙ্গে প্রেমিকাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। তারপর দু’জনে মিলে জল দিয়ে নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে যান আগুন নেভানোর। প্রতিবেশীরাও তাঁদের সঙ্গে হাত লাগান। আগুন নিভেও যায়। কিন্তু ততক্ষণে বাড়ির প্রায় অনেকটাই পুড়ে গিয়েছে। জং জানান, প্রায় ১৫০০ ডলার মূল্যের ক্ষতি হয়ে যায় তাঁদের। কিন্তু তাতে না যত প্রতিবেশীরা অবাক হয়েছিলেন, তার চেয়েও বেশি হন ওই যুগলের হাবভাব দেখে।
আরও পড়ুন: গণধর্ষণ করে, যৌনাঙ্গে ধারালো অস্ত্র ঢুকিয়ে কিশোরীকে খুন হরিয়ানায়
ধোঁয়া মাখা কালো মুখ দুটোতে এতটুকু উদ্বেগের ছাপ ছিল না। পাশের বাড়ির কারও ঘর পুড়লেও যেখানে চোখেমুখে উদ্বেগের ছাপ থাকে স্পষ্ট, সেখানে নিজের বাড়ি খুইয়ে ওই যুগল এতটা চনমনে, হাসিখুশি থাকেন কী ভাবে! আগুন নিভে যাওয়ার পর দৌড়ে বাড়ির ভিতরে না ঢুকে, দাঁড়িয়ে পকেট থেকে মোবাইল বার করে হাসি মুখে সেলফি তুললেন তাঁরা। তারপর পোড়া বাড়িটাকে নিয়ে একটা ভিডিওয় করেন।
কী বলছেন জং? একটা জন্মদিনের পার্টিতে তাঁদের পরিচয়। একে অপরের হাস্যরস তাঁদের মুগ্ধ করেছিল। তারপর থেকেই তাঁরা একসঙ্গে রয়েছেন। জং বলেন, ‘‘আগুন নেভানোটা খুবই জরুরি। পাশাপাশি জরুরি হাসিমুখে যে কোনও কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলা করা।’’ তিনি বলেন, ‘‘এ ভাবেই পজিটিভ চিন্তা নিয়ে এবং হেসেখেলে জীবনটা কাটাতে চাই। বাড়িটাকে মেরামতি করে ফের এই বাড়িতেই থাকব আমরা।’’