উদ্ধার হওয়া সেই ক্যামেরা। ছবি: ফেসবুক থেকে
সমুদ্র নাকি সব ফিরিয়ে দেয়। সেটা সত্য প্রমাণিত হল জাপানের সোফিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী মিস সেরিনা সুবাকিহারার জীবনে। বছর দু’য়েক পরে জাপানের একটি দ্বীপের সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়া তাঁর ক্যামেরাটি যখন উদ্ধার হল তাইওয়ানের সমুদ্র সৈকত থেকে।
২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে মাসে জাপানের ইশিগাকি দ্বীপে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন সেরিনা সুবাকিহারা। স্কুবা ডাইভিং করার সময় এক জন বন্ধুর শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। তাঁকে সাহায্য করতে গিয়ে কোনও ভাবে হাত থেকে ফসকে যায় ডাইভিং কেসের মধ্যে ভরা ক্যামেরাটি। ওই ভাবে সমুদ্রে তলিয়ে যাওয়ার পর স্বাভাবিক ভাবেই তা ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন তিনি। তবে বছর দু’য়েক বাদে তা খুঁজে পাওয়া গেল ১৫৫ মাইল দূরে, উত্তর তাইওয়ানের সুয়াও টাউনশিপ সমুদ্র সৈকত থেকে ।
তাইওয়ানের প্রাথমিক স্কুলের কয়েক জন ছাত্র-ছাত্রী সেই সৈকত থেকে উদ্ধার করে ক্যামেরাটি। স্কুলের তরফে সেখানে সমুদ্রের পাড় পরিষ্কার করার কাজে গিয়েছিল তারা। বছর এগারোর এক ছাত্র হঠাৎ দেখতে পায় সামুদ্রিক লতা ও ঝিনুকে জড়ানো কিছু একটা পড়ে রয়েছে, যা খানিকটা পাথরের মতো দেখতে। কৌতূহলের বশে তা হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করতেই ছাত্ররা বুঝতে পারে, সেটি আসলে ডাইভিং কেসে বন্দি একটা ক্যামেরা। তবে আশ্চর্যের বিষয় এই যে, ডাইভিং কেসে থাকার জন্য ক্যামেরাটিতে এক ফোঁটাও জল ঢোকেনি এবং তা পুরোপুরি অক্ষত ছিল। ছাত্রটি ক্যামেরাটি চালু করলে দেখা যায় তাতে তখনও চার্জও আছে। এর পরেই শিক্ষকের সাহায্যে ফেসবুকের মাধ্যমে মালিকের খোঁজ শুরু করে ছাত্র-ছাত্রীরা। ক্যামেরার মেমরি কার্ডটি থেকে যে ছবি পাওয়া গিয়েছিল, তাতে মনে হচ্ছিল সেটির মালিক জাপানি। তাই তাঁর হদিস পাওয়ার কাজে সাহায্য করেন জাপানে কর্তব্যরত তাইওয়ানের রাষ্ট্রদূতও। ১২ ঘণ্টার মধ্যেই খোঁজ পাওয়া যায় সেই মালিকের।
বন্ধুদের কাছে খবরটি পেয়ে খুবই অবাক হয়ে যান সেরিনা। এখন হারিয়ে যাওয়া ক্যামেরা নিজের হাতে পেতে উতলা সেই তরুণী। উদ্ধারকারী শিশুদের ধন্যবাদ জানাতে আগামী জুন মাসে তাইওয়ানে যাবেন তিনি।