এক ষড়যন্ত্রীর ভুলে বেঁচে যান ওয়াশিংটন। দাবি এক মার্কিন লেখকের।
১৭৮৯-এ আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট হন তিনি। তার কয়েক বছর আগেই শেষ হয়ে যেতে পারত জর্জ ওয়াশিংটনের জীবন। এক ষড়যন্ত্রীর ভুলে বেঁচে যান ওয়াশিংটন। মার্কিন লেখক ব্র্যাড মেল্টজ়ার তাঁর ‘দ্য ফার্স্ট কন্সপিরেসি’ বইটিতে এই দাবি করেছেন।
১৭৭৬ সালের জুন মাস। ব্রিটিশ উপনিবেশের বিরুদ্ধে আমেরিকা জুড়ে চলছে বিপ্লব (আমেরিকান রেভোলিউশন)। তখন কন্টিনেন্টাল আর্মির ‘কম্যান্ডার ইন চিফ’ জর্জ ওয়াশিংটন। তাঁর নেতৃত্বেই বস্টনের উপর কব্জা করে কন্টিনেন্টাল আর্মি তখন এগিয়ে গিয়েছে নিউ ইয়র্কের দিকে। তবে সেটা তখনও ব্রিটিশদের শক্ত ঘাঁটি। মেল্টজ়ারের দাবি, এখানেই ওয়াশিংটনকে নিকেশ করে ওই বিপ্লবের বীজ নষ্ট করে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন টোরি সমর্থক নিউ ইয়র্কের গভর্নর উইলিয়াম ট্রাইয়ন। সঙ্গে পান আরও এক টোরি, নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র ডেভিড ম্যাথিউজ-কেও।
কোনও এক অজ্ঞাত কারণে নিউ ইয়র্ক বন্দরের রাখা একটি জাহাজে নির্বাসনযাপন করছিলেন ট্রাইয়ন। সেখানে বসেই এই ষড়যন্ত্র হয়। ওয়াশিংটনের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কয়েক জনকে এই পরিকল্পনায় শামিল করার কথা বলেন ট্রাইয়ন। ওয়াশিংটনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিক্রেট সার্ভিসের কয়েক জনকে নিয়োগ করেন ম্যাথিউজ। আর তাঁদের এক জনের মাধম্যেই শেষমেশ প্রকাশ্যে চলে আসে বিষয়টি।
টমাস হিকি নামে আদতে আয়ারল্যান্ডের বাসিন্দা ওই যুবক প্রথমে ব্রিটিশ সেনায় ছিলেন। পরে মার্কিন সেনায় যোগ দেন তিনি। অভিজ্ঞতার কারণেই ‘লাইফ গার্ড’-এ আনা হয়েছিল তাকে। তবে জাল অর্থ সংক্রান্ত এক মামলায় জেল হয় তার। সেখানেই অন্য বন্দিদের সঙ্গে বড়াই করে এই ষড়যন্ত্রে শামিল থাকার কথা ভাগ করে নিতে গিয়েই তা প্রকাশ্যে এনে ফেলেন হিকি। সঙ্গে সঙ্গে বসে বিচারসভা। নিজেকে বাঁচাতে হিকির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয় ষড়যন্ত্রে শামিল অন্য এক জনও। বিদ্রোহ, রাজদ্রোহ এবং বিশ্বাসঘাতকতার দায়ে ফাঁসির নির্দেশ দেওয়া হয় হিকিকে। ১৭৭৬ সালের ২৮ জুন এখনকার ম্যানহ্যাটনে ২০,০০০ দর্শকের সামনে ফাঁসি হয় হিকির। বাকি ষড়যন্ত্রীদের কোনও রকম শাস্তি হয়নি বলেই জানা যায়।