রাশিয়ার নতুন অ্যান্টি-শিপ মিসাইলকে রোখা মার্কিন মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমের পক্ষেও প্রায় অসম্ভব। (প্রতীকী ছবি)
রাশিয়ার নতুন একটি ক্ষেপণাস্ত্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে দিল গোটা বিশ্বে। খুব দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নয়, কিন্তু ক্ষেপণাস্ত্রটির গতিবেগ সম্পর্কে সে দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যম যা জানিয়েছে, তাতে গোটা পৃথিবীর চমকে যাওয়াই স্বাভাবিক। ঘণ্টায় ৭৪০০ কিলোমিটার বেগে ছোটে ‘জারকন’ নামের এই রুশ অ্যান্টি-শিপ মিসাইলটি। এই বেগে ধেয়ে আসা কোনও ক্ষেপণাস্ত্রকে মাঝপথেই রুখে দেওয়ার মতো কোনও মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম আমেরিকাও এখনও তৈরি করতে পারেনি। বলছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা।
শব্দের বেগের চেয়েও জোরে ছোটে যে ক্ষেপণাস্ত্র, তাকে বলে সুপারসনিক মিসাইল। ভারত-রুশ যৌথ উদ্যোগে তৈরি ব্রহ্মস একটি সুপারসনিক মিসাইল। ব্রহ্মসের গতিবেগ শব্দের গতিবেগের প্রায় তিন গুণ। ৩৭০০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে ছোটে ব্রহ্মস। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন, ব্রহ্মসের এই প্রচণ্ড গতিবেগ অনেক দেশের কাছেই উদ্বেগের কারণ। এত দ্রুত বেগে ছুটে আসা ক্ষেপণাস্ত্রকে মাঝ আকাশে রুখে দেওয়া মিসাইল শিল্ড বা মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমের পক্ষে অনেক ক্ষেত্রেই অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে।
২০২২ সালে রুশ নৌসেনার হাতে তুলে দেওয়া হবে জারকন ক্ষেপণাস্ত্র। মার্কিন নৌসেনার জন্য এ কিন্তু খুব সুখবর নয়। —ফাইল চিত্র।
ব্রহ্মসেই যখন এমন ত্রাহি ত্রাহি রব, তখন রাশিয়ার নতুন ক্ষেপণাস্ত্র জারকন যে আরও বেশি করে কাঁপুনি ধরাবে, সে নিয়ে সংশয় নেই। চলতি মাসেই জারকনের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণের ছবি প্রকাশ করেছে রুশ সরকার পরিচালিত সংবাদমাধ্যম। জানানো হয়েছে, এটি একটি হাইপারসনিক মিসাইল। অর্থাৎ সুপারসনিকের চেয়েও কয়েক গুণ বেশি বেগে ছুটতে সক্ষম জারকন। অ্যান্টি-শিপ মিসাইলটির পাল্লা সর্বোচ্চ ৪০০ কিলোমিটার বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু ঘণ্টায় ৭৪০০ কিলোমিটার বেগে ছুটতে সক্ষম জারকন মাত্র ৪০০ কিলোমিটার দূরবর্তী লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে এতই কম সময় নেবে যে অত্যাধুনিক মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেমের পক্ষেও জারকনকে রোখা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠবে।
আরও পড়ুন: গ্রীষ্মে অশান্তির আশঙ্কা কাশ্মীরে
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জারকনের হামলা অভ্রান্ত ভাবে আঁচ করে নিয়ে যদি মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম সক্রিয়ও হয়, তা হলেও ইন্টারসেপ্টর মিসাইল লক্ষ্যবস্তু থেকে খুব দূরে জারকনকে আঘাত করতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে মাঝ আকাশে ভেঙে যাওয়ার পরেও জারকনের ধ্বংসাবশেষ প্রচণ্ড বেগে সামনের দিকে ছুটে যাবে এবং লক্ষ্যবস্তুর উপর আছড়ে পড়বে। সেই আঘাতও বড়সড় ক্ষয়ক্ষতির কারণ হবে।
২০২২ সালে এই জারকন ক্ষেপণাস্ত্র রুশ নৌসেনার হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। কিরভ শ্রেণির পরমাণু শক্তিচালিত যুদ্ধজাহাজে মোতায়েন করা হবে এই ক্ষেপণাস্ত্র।