মিনার খুঁড়তেই ৬৭৫ মহিলা ও শিশুর খুলি

এই সব খুলি কি সেই মানুষদের? প্রত্নতত্ত্ববিদদের ধারণা ছিল, আজটেকের বিভিন্ন উপজাতির মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বে যাঁরা প্রাণ হারাতেন, সেই সব পুরুষ যোদ্ধাদের বলি দিয়ে খুলি এই ভাবে জমা রাখা হয়। বস্তুত ঐতিহাসিকরাও বলেন, স্পেনের শাসনের আগে মেসোআমেরিকান সংস্কৃতিতে হেরে যাওয়া যোদ্ধাদের মাথা কেটে জোম্পান্তলি-তে রাখা হতো।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৭ ০৪:১০
Share:

আবিষ্কার: মেক্সিকো সিটিতে খুলির মিনার। ছবি: রয়টার্স

মিনার জুড়ে থরে থরে সাজানো মহিলা আর শিশুদের খুলি। মোট ৬৭৫টি। মেক্সিকো সিটিতে এক মন্দিরে দেড় বছর ধরে খননের ফলে উঠে এসেছে এই ‘অদ্ভুত’ ছবি। যা নতুন করে প্রত্নতত্ত্ববিদদের ভাবিয়ে তুলেছে আজটেক সভ্যতা সম্পর্কে।

Advertisement

এই খুলির মিনারটি ‘হুয়ে জোম্পান্তলি’-র (হাড়ের সারি) অংশ। আজটেক রাজধানী ‘টেনোকটিটলান’-এর (যা কালে কালে হয়ে উঠবে মেক্সিকো সিটি) অন্যতম প্রধান মন্দির ‘টেম্পলো মেয়র।’ এই মন্দিরের কাছেই খননের ফলে মিলেছে খুলির মিনার। এই শহর জয়ের পরে ‘হুয়ে জোম্পান্তলি’ দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলেন স্পেনীয় শাসকরা (কনকিস্তাদোর)। তাদের লেখাতেও এই খুলির মিনারের উল্লেখ আছে। ১৫২১ সালে মেক্সিকো জয়ের পরে আন্দ্রে দে টাপিয়া নামে এক স্পেনীয় যোদ্ধা এই মিনারটির কথা জানিয়েছিলেন। প্রত্নতত্ত্ববিদ রাউল বারেরা জানিয়েছেন, টাপিয়া লিখেছিলেন এমন হাজার হাজার খুলি রয়েছে ওই এলাকায়। প্রত্নতত্ত্ববিদদের বিশ্বাস, খনন যত এগোবে, মিলবে আরও খুলি। আজটেক এবং মেসোআমেরিকান জনতা সূর্যদেবকে উৎসর্গ করতে মানুষ বলি দিত।

এই সব খুলি কি সেই মানুষদের? প্রত্নতত্ত্ববিদদের ধারণা ছিল, আজটেকের বিভিন্ন উপজাতির মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্বে যাঁরা প্রাণ হারাতেন, সেই সব পুরুষ যোদ্ধাদের বলি দিয়ে খুলি এই ভাবে জমা রাখা হয়। বস্তুত ঐতিহাসিকরাও বলেন, স্পেনের শাসনের আগে মেসোআমেরিকান সংস্কৃতিতে হেরে যাওয়া যোদ্ধাদের মাথা কেটে জোম্পান্তলি-তে রাখা হতো।

Advertisement

আরও পড়ুন:ভালুকের হাত থেকে পরিবারকে বাঁচাল কিশোর

কিন্তু শিশু ও মহিলাদের এত খুলি কেন? নৃতত্ত্ববিজ্ঞানী রডরিগো বোলানোস বলছেন, ‘‘আমরা তো ধরেই নিয়েছিলাম ওগুলো শুধু পুরুষের খুলি। লড়াকু যুবকদের। কিন্তু ওই সময়ে মহিলা বা শিশুদের তো যুদ্ধে যাওয়ার প্রশ্নই নেই।
এটা সত্যি নতুন ব্যাপার। এর কোনও রেকর্ডও নেই আমাদের কাছে।’’ আগে ধরে নেওয়া হতো, শুধু পুরুষদেরই মাথা কাটা হতো, সে বিশ্বাস থেকে সরে আসার দিন এসেছে— এখন প্রত্নতত্ত্ববিদরা এটাই মনে করছেন।

রাউল বলছেন, জোম্পান্তলি-তে সাধারণের দর্শনের জন্য রাখার পরে ওই খুলিগুলো মিনারে নিয়ে যাওয়া হতো।
এই মিনারের কাছেই হুইৎজিলোপোচিটলি (আজটেক সভ্যতায় সূর্য, যুদ্ধ এবং বলির দেবতা) চ্যাপেল। এটির নীচে এখনও খনন শুরু হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement