চার দশকেরও বেশি সময় ধরে ইরানীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে তাঁর অসাধারণ সৃষ্টিতে সমৃদ্ধ করেছিলেন তিনি। গ্যাসট্রোইনটেস্টাইনাল ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে চলে গেলন সেই সৃষ্টিকর্তা, আব্বাস কিয়ারসতমি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। মার্চ মাস থেকে প্যারিসের হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল।
তাঁর হঠাৎ মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন সারা বিশ্বের বিনোদন মহল। বিখ্যাত ফরাসি পরিচালক জাঁ লুক গোদার বলেছেন, ‘‘ছবি গ্রিফিথকে দিয়ে শুরু হয়েছিল। আর কিয়ারসতমিকে দিয়ে শেষ হল।’’
আরও পড়ুন: ‘দ্য ভায়োলিন প্লেয়ার’ জিতল আন্তর্জাতিক সেরার মুকুট
নিজের দেশ ইরান এবং ইরানীয় ছবিকে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়ার পিছনে প্রধান কারিগর ছিলেন তিনিই। ১৯৪০-এ তেহরানে জন্মেছিলেন আব্বাস। ইউনিভার্সিটি অব তেহরানে পেইন্টিং নিয়ে পড়াশুনা শেষ করে গ্রাফিক ডিজাইনার হিসাবে কাজ শুরু করেছিলেন। সেই সময় ছোট পর্দার জন্য প্রচুর বিজ্ঞাপনের কাজ করেন। ১৯৭০ সাল থেকে ধীরে ধীরে হাত লাগান বড় পর্দার কাজেও। তাঁর প্রথম ছবি ‘দ্য ব্রেড অ্যান্ড অ্যালে’ ছিল মাত্র ১২ মিনিটের। ১৯৭০-এর সেই শুরুর দিনটা থেকে ১৯৯৭-এ ‘টেস্ট অব চেরি’র জন্য ‘কান’-এ ‘পাম ডি’ওর’ পুরস্কার লাভ, পুরোটাই যেন একটা ইতিহাস। আর এই ইতিহাসের পথে চলতে চলতেই ঝুলি পূর্ণ হয়েছে হাজারও সম্মান আর পুরস্কারে। ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভালে ‘সিলভার লায়ন’, লোকার্নো আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভালে ‘গোল্ড লেপার্ড অব অনার’, ব্রিটিশ ফিল্ম ইন্সটিটিউটের ফেলোশিপ, ইউনেসকোর ‘ফেডেরিকো ফেলিনি গোল্ড মেডেল’ দেশ বিদেশের এমনই নানা সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন কিয়ারসতমি।
তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধু আমেরিকা নিবাসী জামসিদ আকরামির ভাষায় কিয়ারসতমি ছিলেন যেন তাজা নিঃশ্বাসের এক ঝলক। কিন্তু মারণ রোগের কাছে অকালেই থেমে যেতে হল সেই সতেজ, প্রাণবন্ত নিঃশ্বাসকে।