আত্মহত্যায় উৎসাহ, দোষী সাব্যস্ত তরুণী

অবসাদে ভুগছিল সে। আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল একাধিক বার। বান্ধবীকে সবই জানিয়েছিল। প্রথম দিকে কিশোরী তাকে মনোবিদের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিত

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বস্টন শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৫০
Share:

কনরাড রয়, মিশেল কার্টার

অবসাদে ভুগছিল সে। আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল একাধিক বার। বান্ধবীকে সবই জানিয়েছিল। প্রথম দিকে কিশোরী তাকে মনোবিদের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিত। কিন্ত এর পর সে-ও আত্মহত্যার উৎসাহ দিতে শুরু করে। ২০১৪ সালের জুলাই মাসে একটি গাড়ির ভিতরে বছর আঠারোর কনরাড রয়ের মৃতদেহ মেলে।

Advertisement

২০১৭ সালে বিচার শেষে প্রেমিককে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অপরাধে মিশেল কার্টার নামে ওই তরুণীকে (এখন বয়স ২২, তখন ১৭) দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত। তরুণীর আইনজীবী পুনর্বিবেচনার আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেই আর্জি নস্যাৎ করে দিয়ে বুধবার পুরনো রায় বহাল রেখেছে ম্যাসাচুসেটস সুপ্রিম জুডিশিয়াল কোর্ট।

ঠিক কী ঘটেছিল?

Advertisement

আদালতের কাছে থাকা তথ্যপ্রমাণ অনুযায়ী, ২০১২ সালে কনরাডের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল কার্টারের। ফোনে, মেসেজে দু’জনের ভাল বন্ধুত্ব হয়। দু’জনেই মানসিক সমস্যায় ভুগছিল। কনরাড একাধিক বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল। আর অবসাদ থেকে খেতে না পারার সমস্যায় (ফুড ডিসঅর্ডার) কষ্ট পাচ্ছিল কার্টার। ডাক্তার দেখানোর কথা ভাবছিল সে। দু’জনে একে অন্যকে নিজেদের সমস্যার কথা বলত। শুরুর দিকে কার্টার কনরাডকেও ডাক্তার দেখানোর পরামর্শ দেয়। কিন্তু পরে সে কনরাডকে আত্মহত্যার জন্য উৎসাহ দিতে থাকে। কখন, কোথায়, কী ভাবে সে আত্মহত্যা করতে পারে, তার জন্য পরামর্শ দিতে থাকে। সে আত্মহত্যা করলে, তার পরিবার মানসিক ভাবে ভেঙে পড়বে ভেবে ভয় পেয়েছিল কনরাড। কার্টার তাকে বলেছিল, ওই নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু হয়নি। দু’জনের ফোন ঘেঁটে এমনই সব তথ্য আদালতের হাতে পৌঁছেছে।

২০১৪ সালের জুলাইয়ে কার্টার মেসেজ করেছিল কনরাডকে— ‘‘আমি ভেবেছিলাম, তুমি আত্মহত্যা করতে চাও। এটাই কিন্তু সঠিক সময়। তুমি তৈরি। তোমার এ বার আত্মহত্যা করা উচিত।’’ এর পর কী ভাবে কনরাড আত্মহত্যা করবে, তা নিয়ে আলোচনা হয়। কার্বন মনোক্সাইডের বিষক্রিয়া নিয়ে কথা হয়। দিন কয়েক পরেই ১৩ জুলাই ম্যাসাচুসেটসে একটি পার্কিং লটে গাড়ির মধ্যে কনরাডের দেহ মেলে। ময়নাতদন্তে জানা যায়, কার্বন মনোক্সাইডের বিষক্রিয়ায় মৃত্যু হয়েছে তার। তদন্তে জানা যায়, একটি গ্যাসোলিন চালিত জলের পাম্প থেকে তৈরি কার্বন মনোক্সাইড তার শ্বাসের সঙ্গে শরীরে ঢুকে বিষক্রিয়া ঘটেছিল। ওই বছরই সেপ্টেম্বরে কার্টার অন্য এক বন্ধুকে মেসেজ করে জানায়, ‘‘আমার দোষেই কনরাডের মৃত্যু হয়েছে। আমি ওকে আটকাতে পারতাম। আমি তখন ওর সঙ্গে ফোনে ছিলাম। রাসায়নিকটি কাজ শুরু করলে ও কষ্ট সহ্য করতে না পেরে গাড়ি থেকে বেরিয়ে এসেছিল। ভয় পেয়ে গিয়েছিল। আমি ওকে বলেছিলাম, গাড়িতে গিয়ে বসতে।’’

আদালতের পর্যবেক্ষণ, এটাও এক ধরনের ‘বুলি’ করা। জেনেবুঝে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়া। কখন যে তা ‘অনিচ্ছাকৃত খুনে’ পরিণত হয়, টেরও পাওয়া যায় না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন