ইউএসএস কার্ল ভিনসন, দক্ষিণ চিন সাগরে এই এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ারটিকেই পাঠিয়েছে আমেরিকা। ছবি: এএফপি।
দক্ষিণ চিন সাগরে আবার হাজির বড়সড় মার্কিন নৌবহর। এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার ইউএসএস কার্ল ভিনসনের নেতৃত্বে মার্কিন নৌবহরটি ওই জলভাগে ঢুকেছে। দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের ‘সার্বভৌম’ অধিকারকে আমেরিকা যেন চ্যালেঞ্জ না করে, বুধবার এমনই হুঁশিয়ারি দিয়েছিল বেজিং। হুঁশিয়ারির ভাষাও বেশ কঠোরই ছিল। কিন্তু এই সতর্কবার্তার কয়েক দিনের মধ্যেই দক্ষিণ চিন সাগরে বড়সড় নৌবহর পাঠিয়ে আমেরিকা বুঝিয়ে দিল, মুখে নয়, হাতে-কলমেই জবাব দেওয়া হবে চিনের প্রত্যেক হুঁশিয়ারির।
পেন্টাগন জানাচ্ছে, রুটিন টহলদারির লক্ষ্যেই দক্ষিণ চিন সাগরে নৌবহর পাঠানো হয়েছে। কিন্তু চিনা হুঁশিয়ারির পরের দিনই যে ভাবে দক্ষিণ চিন সাগরের উদ্দেশে ইউএসএস কার্ল ভিনসন-সহ এক ঝাঁক রণতরী পাঠিয়ে দেওয়া হল, তাতে এই টহলদারির বৃহত্তর তাৎপর্য দেখছে ওয়াকিবহাল মহল।
ট্রাম্প প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তুলছে চিন, বলছেন বিশেষজ্ঞরা। ছবি: এএফপি।
দক্ষিণ চিন সাগরের বুকে অবস্থিত প্যারাসেল আইল্যান্ডস, স্প্র্যাটলি আইল্যান্ডস, স্কারবোরো শোল-সহ বিভিন্ন দ্বীপপুঞ্জের দখল নিয়ে চিনের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মহলের প্রবল মতানৈক্য রয়েছে। চিন এই সব দ্বীপপুঞ্জকে নিজেদের বলে দাবি করে। আর ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স, তাইওয়ান-সহ দক্ষিণ চিন সাগরের তীরবর্তী বিভিন্ন দেশ এই সব এলাকার বিভিন্ন অংশকে নিজেদের বলে দাবি করে। আন্তর্জাতিক আদালতে এ নিয়ে মামলা হয়েছিল। মামলার রায় চিনের বিপক্ষে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও চিন প্যারাসেল আইল্যান্ডস এবং স্প্র্যাটলি আইল্যান্ডসে কৃত্রিম দ্বীপ বানানোর কাজ বন্ধ করেনি।
আরও পড়ুন: ইসরোর প্রশংসায় গোটা বিশ্ব, শুধু দরাজ হতে পারল না চিন
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ওয়াশিংটন বুঝিয়ে দিতে শুরু করেছে যে দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে তাদের অবস্থান আরও কড়া হবে। তা নিয়ে চিন-আমেরিকার মধ্যে বাগযুদ্ধও শুরু হয়ে গিয়েছে। চিনের তরফ থেকে আমেরিকার প্রতি সাম্প্রতিকতম হুঁশিয়ারিটা এসেছে বুধবার। সে দিন চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র গেং শুয়াং বলেছেন, ‘‘আমরা আমেরিকাকে বলছি, এমন কোনও পদক্ষেপ নেবেন না, যা চিনের সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তাকে চ্যালেঞ্জ করে।’’ চিনা বিদেশ মন্ত্রকের এই বিবৃতির পরই দক্ষিণ চিন সাগরে ‘রুটিন টহলদারি’র জন্য নৌবহর পাঠিয়ে আমেরিকা বুঝিয়ে দিল, ওই জলভাগে চিনের সার্বভৌমত্বের দাবি স্বীকারই করে না আমেরিকা।