জেকব জুমা।
তাঁকে ইস্তফার সময় বেঁধে দিয়েছিল তাঁর দলই। শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের গদি ছাড়লেন জেকব জুমা। গত কাল রাতেই জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক টেলিভিশন বার্তায় নিজের ইস্তফার কথা ঘোষণা করেন তিনি। তবে সেই সঙ্গেই জুমা জানিয়েছেন, দলের নির্দেশে পদ ছাড়লেও নিজের দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি) তিনি ছাড়বেন না। তাঁর কথায়, ‘‘দেশের প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়লেও আমি এ দেশের মানুষ আর এএএনসি-র সেবা করেই যাব। কারণ আমার গোটা জীবনটাই আমি এই সংগঠনকে দিয়ে এসেছি।’’
টানা আট বছর দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন ৭৫ বছরের জুমা। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই তাঁর বিরুদ্ধে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগ আনছিলেন বিরোধীরা। গরিব কৃষকদের প্রকল্পের টাকা লুঠ করে নিজের পরিবারের মধ্যে বিতরণ থেকে শুরু করে অস্ত্র আইনের অপব্যবহার—তালিকায় রয়েছে নানা অভিযোগ। গত কয়েক মাস আগে নড়েচড়ে বসে জুমার দল এএনসি-ও। জুমাকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার জন্য চাপ আসতে থাকে দল থেকে। কিন্তু এত দিন অনড় ছিলেন জুমা। তাঁর শর্ত না মানলে দেশের সর্বোচ্চ পদ তিনি ছাড়বেন না, দলকে এটাই বুঝিয়েছিলেন। শেষমেশ গত মঙ্গলবার দল তাঁকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানায়, চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে ইস্তফা না দিলে পার্লামেন্টে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হবে। জ্যাকব জুমার ঘনিষ্ঠ ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ী অজয় গুপ্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে দক্ষিণ আফ্রিকার আদালত। জুমাকে ব্যবহার করে গুপ্ত পরিবার বেআইনি নানা সুযোগ সুবিধে নিয়েছে বলে অভিযোগ।
মাস তিনেক আগে দলীয় নির্বাচনে জুমাকে সরিয়ে সভাপতি পদে মনোনীত হয়েছিলেন সিরিল রামফোসা। নিজের স্ত্রীকে নির্বাচনে দাঁড় করিয়েও দলে কর্তৃত্ব বজায় রাখতে পারেননি জুমা। সিরিল-ই দক্ষিণ আফ্রিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন বলে ঘোষণা করে রেখেছে এএনসি।
তবে ইস্তফা দিলেও জুমার মাথাব্যথা এখনই কমছে না। বিরোধী দল নেতা মুসি মাইমানের দাবি, অবিলম্বে দেশের সাধারণ মানুষের থেকে লুঠ করা লক্ষাধিক ডলার ফেরত দিন পদত্যাগী প্রেসিডেন্ট। অস্ত্র আইনের আওতায় জুমার বিরুদ্ধে থাকা ৭৮৩টি অভিযোগের তদন্তের দাবিও জানিয়েছেন তিনি।