‘সমুদ্র মন্থনে’ও খোঁজ মিলল না ৪৪ নৌকর্মীর

সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে কবেই। অতলান্তিক তন্নতন্ন করে চষে ফেলেছে ১১টি দেশের নৌবাহিনী। দেশের প্রথম মহিলা সাবমেরিন অফিসার-সহ ৪৪ জন কর্মীকে নিয়ে এখনও নিখোঁজ ‘আরা সান হুয়ান’।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বুয়েনস আইরেস শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:২৬
Share:

সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে কবেই। অতলান্তিক তন্নতন্ন করে চষে ফেলেছে ১১টি দেশের নৌবাহিনী। দেশের প্রথম মহিলা সাবমেরিন অফিসার-সহ ৪৪ জন কর্মীকে নিয়ে এখনও নিখোঁজ ‘আরা সান হুয়ান’।

Advertisement

মুখে কুলুপ এঁটে আর্জেন্তিনার নৌ-বাহিনী। ডুবোজাহাজ বা তার সওয়ারিদের কী অবস্থা, তা নিয়ে খোলসা করে কিছুই বলছে না তারা। উল্টে হঠাৎই গত কাল ঘোষণা করা হয়েছে, ১৫ নভেম্বর শেষ বারের মতো যোগাযোগ হওয়ার সময়ে, সমুদ্রের যে অংশে ছিল আর্জেন্তিনার ডুবোজাহাজটি, ঠিক সেখানেই শেষ যোগাযোগের কিছু ক্ষণ পরেই একটা বিস্ফোরণ ঘটেছিল।

এত দিন আর্জেন্তিনার নৌবাহিনীর মুখপাত্র এনরিক বালবি বলে এসেছেন, ‘‘ভরসা রাখুন, ওঁরা ফিরে আসবে।’’ কিন্তু এক বারের জন্যও বিস্ফোরণের কথা জানাননি। হঠাৎই গত কাল সাংবাদিক বৈঠকে বলেছেন, ‘‘আরা সান হুয়ানের সঙ্গে শেষ বার যোগাযোগের পরে কিছু একটা ঘটেছিল। একটা বিস্ফোরণ, এক বারই ঘটেছিল, স্বল্পস্থায়ী কিন্তু বীভৎস।’’

Advertisement

এ কথার শোনার পরে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন নিখোঁজ নৌ-কর্মীদের পরিবার। ‘‘এত দিন তো আমাদের ঠকানো হচ্ছিল তা হলে,’’ বলছেন আরা স্যানের সোনার অপারেটর জার্মান সুয়ারেজের স্ত্রী ইতাতি লেগুইজ্যামন। ফোঁপাতে ফোঁপাতে জেসিকা গোপার নামে আর এক মহিলা বললেন, ‘‘ছেলেকে কী ভাবে বলব, ওর বাবা আর বেঁচে নেই?’’ জেসিকার স্বামী ওই ডুবোজাহাজের ইলেক্ট্রিশিয়ান ছিলেন।

আগে বিশেষজ্ঞেরা বলছিলেন, ‘‘জলে সম্পূর্ণ ডুবে থাকলে মজুত অক্সিজেনে ৭ থেকে ১০ দিন চলতে পারে, তার বেশি নয়। সমুদ্রপৃষ্ঠে ভেসে উঠলে বা ডুবোজাহাজের নল সমুদ্রের উপরে জাগিয়ে রাখলে অবশ্য অন্য কথা।’’ কিন্তু সমুদ্রপৃষ্ঠে ভেসে উঠলে তো নৌবাহিনীর নজরে ধরা পড়ত! দক্ষিণ অতলান্তিকে ৪৮০ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে তল্লাশি করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। কিন্তু ৭ দিন ধরে ‘সমুদ্র মন্থন’ করেও ‘আরা সান’কে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বিস্ফোরণের কথা সামনে আসতে এ বার বিজ্ঞানীরাও বলছেন, এমনটা ঘটতে পারে। তাঁরা জানাচ্ছেন, ওই ডুবোজাহাজে ৫০০ টন লিড-অ্যাসিড ব্যাটারি রয়েছে। চার্জ অতিরিক্ত হলে ওই ব্যাটারি থেকে হাইড্রোজেন তৈরি হতে পারে। আর অক্সিজেনের সংস্পর্শে এলে বিস্ফোরকের আকার নেয় হাইড্রোজেন। এক প্রাক্তন নৌ-কর্তা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণ ঘটে থাকলে প্রাণের সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ।

এত দিন ধরে অপেক্ষায় রয়েছে নাবিক ক্রিস্টিয়ান ইবানেজের ন’বছরের মেয়ে। আশায় বুক বেঁধে ক্রিস্টিয়ানের স্ত্রীও। বললেন, ‘‘মেয়ের বিশ্বাস, বাবা ঠিক ফিরে আসবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন