প্রমাণ মিলেছে রাশিয়ার বিরুদ্ধে, দাবি আমেরিকার

অভিযোগের আঙুল আগেই উঠেছিল। এ বার আমেরিকা সরাসরিই জানিয়ে দিল, ইউক্রেনের আকাশে মালয়েশীয় এমএইচ-১৭ বিমানে ক্ষেপণাস্ত্র হানায় রাশিয়ার হাত থাকার যথেষ্ট প্রমাণ তাদের কাছে আছে। মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরির দাবি, গোটা ঘটনার দায় রাশিয়াকে এ বার নিতে হবে। তিনি জানিয়েছেন, ফাঁস হয়ে যাওয়া টেলি কথোপকথনেই প্রমাণিত যে, বিদ্রোহীদের হাতে ওই বুক ক্ষেপণাস্ত্র তুলে দিয়েছিল রাশিয়াই।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মস্কো শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৪ ০৩:৫৯
Share:

রাশিয়াই। কেরির কথায়, “আমাদের হাতে একটি ভিডিও রয়েছে, যাতে দেখা স্পষ্ট গিয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার পরে বিদ্রোহীরা সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ায় ঢুকে যাচ্ছে।” চাপ বাড়িয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও। এক ধাপ এগিয়ে তিনি জানিয়েছেন, রুশ মদতভুক্ত জঙ্গিরা যে বিমান ভেঙে পড়ার প্রমাণ এবং যাত্রীদের দেহ লুকিয়ে ফেলছে, সেই তথ্যও আমেরিকার হাতে এসেছে। ওবামার দাবি, “অবিলম্বে আন্তর্জাতিক তদন্তকারীদের পূর্ব ইউক্রেনে ঢুকতে দেওয়া ঢোক। আর সেই রাস্তাটা রাশিয়াকেই তৈরি করতে হবে।”

Advertisement

আজ নয়া একটি টেলি কথোপকথন প্রকাশ করেছে ইউক্রেন। তাদের দাবি, এই কথোপকথনটি শুক্রবার দুপুরের। সেখানে স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে, রুশপন্থী জঙ্গিদের এক কম্যান্ডার সহকর্মীদের বলছেন, “মস্কো জানতে চাইছে বিমানের ব্ল্যাক বক্সের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে কি না।” একই সঙ্গে জঙ্গি কম্যান্ডারের সাবধান বাণী, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের হাতে আসার আগে ব্ল্যাক বক্সটিকে যেন তেন প্রকারেণ তাদের কবলে নিয়ে আসতে হবে। কারণ মস্কো থেকে সে রকমই নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।

এ সবের পরেও নিজের অবস্থানে অনড় মস্কো। রুশ বিদেশ মন্ত্রকের তরফে আজ ফের জানানো হয়েছে, কোনও ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইউক্রেনের বিদ্রোহীদের তারা সাহায্য করছে না। প্রমাণ লোপাটেরও প্রশ্ন নেই। রুশপন্থী বিদ্রোহী নেতা আলেকজান্দার বরোদাইও দাবি করেছেন, তাঁদের হাতে বুক ক্ষেপণাস্ত্র নেই। যে টেলি কথোপকথন ও ভিডিও-র উপরে ভিত্তি করে এই দাবি করা হচ্ছে তাও ভুয়ো।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে আজ ফের মুখ খুলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। পশ্চিমী দেশগুলিকে নিশানা করে একটি কড়া টেলিভিশন বার্তায় তিনি বলেছেন, “এমএইচ-১৭ ভেঙে পড়ার মতো দুর্ভাগ্যজনক ঘটনাকে কেউ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করলে তা বরদাস্ত করা হবে না।”

এমএইচ-১৭ নিয়ে আগ্রাসী মনোভাব নিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। গতকালই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ফোন করেছিলেন পুতিনকে। তিনি জানিয়েছেন, যে ১০ জন ব্রিটিশ প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের দেহ ফেরানো নিয়ে তিনি উদ্বিগ্ন। ক্যামেরনের কথায়, “রাশিয়া যদি তার মনোভাব না পাল্টায়, ইউরোপীয় ইউনিয়নকেই রাশিয়ার প্রতি মনোভাব পাল্টাতে হবে।” কিন্তু কূটনৈতিক সূত্রে খবর, মস্কোর প্রতি কতটা কঠোর মনোভাব নেওয়া হবে তা নিয়ে ব্রিটেনের সঙ্গে মতভেদ রয়েছে জার্মানি-সহ কিছু দেশের।

আজ ইউক্রেনের ডনেৎস্ক এলাকার গ্রাবোভোয় এমএইচ-১৭-এর ধ্বংসস্তূপ পরীক্ষা করতে পৌঁছয় নেদারল্যান্ডসের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের একটি দল। যাত্রীদের মৃতদেহ ও ভেঙে পড়া বিমানের ধ্বংসাবশেষ থেকে প্রয়োজনীয় নমুনাও সংগ্রহ করেন তাঁরা। আগে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল রুশপন্থী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে। আজ কেন তারা বাধা দিল না, তার উত্তর মেলেনি। পুতিনই জঙ্গিদের রাজি করিয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকে।

আন্তর্জাতিক তদন্তকারীদের ইউক্রেনে ঢুকতে দেওয়ার অনুমতি সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব রাষ্ট্রপুঞ্জে আজই পাশ হয়েছে। পুতিন বলেছেন, “রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রস্তাবে বাধা দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।”

প্রমাণ ঘেঁটে বিতর্কে স্কাই নিউজ

সংবাদ সংস্থা • গ্রাবোভো

উদ্ধারকারীরা ব্যস্ত উদ্ধারে। আর সাংবাদিকরা ব্যস্ত বিপর্যয়ের প্রামাণ্য তুলে ধরতে সারা বিশ্বের কাছে। কিন্তু এম এইচ-১৭ ‘কভার’ করতে এসে বিপত্তি বাঁধালেন স্কাই নিউজের সাংবাদিক কলিন ব্রেজার। উৎসাহের আতিশয্যে সোমবার ক্যামেরা চলাকালীনই তিনি মাটিতে পড়ে থাকা কোনও এক নিহত যাত্রীর ট্রলিব্যাগ নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করে দেন। কখনও টুথব্রাশ, কখনও চাবির গোছা তুলে ধরতে থাকেন ক্যামেরার সামনে। পরে ক্ষমা চেয়ে নেন তিনি। ক্ষমা চান চ্যানেল কর্তৃপক্ষও। কলিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন