ফের আমেরিকার কোপ ইরানকে

ইরানের বিদেশমন্ত্রী অবশ্য কালই টুইট করে বলেন, ‘‘আমেরিকার সবটাই ভণ্ডামি। বিশ্বের কাছে এমন একটা ভাব করে, যেন ইরানের ওরা ভালই চায়। কিন্তু ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যটা আজ স্পষ্ট হয়ে গেল।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৮ ০৪:১৯
Share:

ফাইল চিত্র

ইরান-নীতিতে ফের ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আরও এক প্রস্ত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপল তেহরানের মাথায়। কাল ট্রাম্প নিজেই টুইট করে বলেন, ‘‘এত কড়া নিষেধাজ্ঞা এই প্রথম।’’

Advertisement

এক সপ্তাহও হয়নি ইরানের সঙ্গে নয়া পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির ইঙ্গিত দিয়ে সুর নরম করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সাংবাদিক বৈঠকেই বলেছিলেন, ‘‘জানি, ইরান এখন খুব খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। তাই প্রেসিডেন্ট হাসান রৌহানি চাইলেই আমি আলোচনায় রাজি।’’

ওয়াশিংটনের এই আশ্বাস পেয়ে সবে যখন দরজা খোলার কথা ভাবছিল তেহরান, বোমাটা ফাটল ঠিক তখনই। কোনও রকম ইঙ্গিত ছাড়াই কাল ইরানের উপর আরও এক প্রস্ত নিষেধাজ্ঞা চাপাল ট্রাম্পের আমেরিকা। প্রশাসনিক নির্দেশিকায় সই করে ট্রাম্প জানিয়ে দিলেন— সোনা বা বহুমূল্য অন্য ধাতু বেচে আর মার্কিন ডলার কামাতে পারবে না ইরান। গাড়ি-শিল্পের পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞা বসল নানাবিধ শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় ধাতু বা যন্ত্রপাতি কেনাবেচাতেও।

Advertisement

আর তেল! ট্রাম্প সটান জানিয়ে দিলেন, তেল রফতানি ঠেকাতে নভেম্বর থেকে আরও বড় কোপ পড়তে চলেছে ইরানের উপর। একই সঙ্গে কড়া বার্তা দিলেন বাকি বিশ্বকেও। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথায়, ‘‘ইরানের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক রাখলে, আমেরিকাকে ভুলে যান।’’ এ দিকে, তাদের অপরিশোধিত তেল না কিনলে ভারতকে আর কোনও বিশেষ সুবিধা দেওয়া হবে না বলে জুলাইয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল তেহরান। কূটনীতিকদের একাংশ বলছেন, এই জোড়া চাপ ভাবাতে পারে নয়াদিল্লিকে। তাই সেপ্টেম্বরে আমেরিকার সঙ্গে নির্ধারিত দিল্লির বৈঠকে ভারত এ নিয়ে সওয়াল করতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।

প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় এই নয়া নিষেধাজ্ঞাকে আমেরিকার ‘মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ’ বলেও আশা জিইয়ে রাখছেন রৌহানি। জানান, আগাম শর্ত ছাড়াই আমেরিকার সঙ্গে কথায় রাজি তিনি। ইরানের বিদেশমন্ত্রী অবশ্য কালই টুইট করে বলেন, ‘‘আমেরিকার সবটাই ভণ্ডামি। বিশ্বের কাছে এমন একটা ভাব করে, যেন ইরানের ওরা ভালই চায়। কিন্তু ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যটা আজ স্পষ্ট হয়ে গেল।’’

বারাক ওবামা আমলের চুক্তিকে ‘জঘন্যতম’ আখ্যা দিয়ে গত মে মাসে ২০১৫-র নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন ট্রাম্প। তিক্ততা বাড়িয়ে এ নিয়ে জুলাইয়ের শেষেও হুমকি, পাল্টা হুমকি দিয়েছিল দুই দেশ। অগস্টের গোড়ায় তাই ট্রাম্পের মুখে আলোচনার প্রস্তাবে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখতে শুরু করেছিল ইরানের সাধারণ জনজীবন। ট্রাম্পের সইয়ে আজ ফের ধাক্কা লাগল। তবে বাকি দেশগুলির সঙ্গে চুক্তি যে-হেতু বহাল আছে, তাই মার্কিন হুমকি অগ্রাহ্য করেই ইরানের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারবে বলে ধারণা কূটনীতিকদের একাংশের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন