Hamas Attack on Israel

হামলা থেকে বাঁচতে আশ্রয় বাঙ্কারে! ইজ়রায়েলে আটক ১৮ হাজার ভারতীয়কে নিয়ে উদ্বিগ্ন দিল্লি

গাজা ভূখণ্ডে হামাসের নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রাজধানী তেল আভিবের পাশাপাশি গাজা লাগোয়া দক্ষিণ ইজরায়েলের শহরগুলিই সবচেয়ে বেশি সঙ্কটের মুখে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৩ ১২:৫৬
Share:

ইজ়রায়েলে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে আটকে পড়া ভারতীয়রা। ছবি: সংগৃহীত।

তাঁদের কেউ তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী। কেউ পরিষেবা ক্ষেত্রের। কেউ আবার পড়ুয়া। শনিবার ভোররাতে প্যালেস্তেনীয় বিদ্রোহী গোষ্ঠী হামাসের রকেট হামলার পর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের জেরে তেল আভিব, জেরুসালেম-সহ ইজ়রায়েলের বিভিন্ন শহরে আটকে পড়েছেন সেই ভারতীয় নাগরিকেরা। যাঁদের ‘ভবিষ্যৎ’ নিয়ে উদ্বেগ ছড়িয়েছে নয়াদিল্লিতে।

Advertisement

সরকারি সূত্রের খবর, গত বছর শুরু হওয়া রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধের পরে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা এবং পরিকাঠামো কাজে লাগিয়ে সে দেশ থেকে প্রায় ২০ হাজার ভারতীয় কর্মরত এবং ছাত্রছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছিল। এ বারেও সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ‘উদ্ধার অভিযান’ শুরু করা কথা ভাবা হচ্ছে। পরিকল্পনা কার্যকর করতে কূটনৈতিক স্থরে ইজ়রায়েল এবং স্বশাসিত প্যালেস্তেনীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে বিদেশমন্ত্রক।

কিন্তু এ ক্ষেত্রে অসুবিধা রয়েছে অন্যত্র। ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক অঞ্চলে সক্রিয় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত স্বশাসিত প্যালেস্তেনীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নয়াদিল্লির কূটনৈতিক যোগাযোগ রয়েছে। কিন্তু তা মূলত প্রয়াত ইয়াসের আরাফত প্রতিষ্ঠিত এবং ‘ফাতা’র সঙ্গে। প্যালেস্তেনীয় আইনসভায় তারা দ্বিতীয় বৃহত্তম দল। অন্য দিকে, ‘প্যালেস্তেনিয়ান লেজিসলেটিভ কাউন্সিল’-এর বৃহত্তম দল কট্টরপন্থী হামাসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী সরকারের জমানায় অনেকটাই দূরত্ব তৈরি হয়েছে। বস্তুত, শনিবার ভোররাতের হামলার পরে মোদী যে ভাবে প্রকাশ্যে ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তাতে পরিস্থিতি আরও ‘প্রতিকূল’ হয়েছে বলে কূটনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন।

Advertisement

জেরুসালেমের হেব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাক্তারি বিভাগের এক ভারতীয় পড়ুয়া সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘‘ইহুদি সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব সিমহাত টোরার জন্য শনিবার ছুটি ছিল। সে দিন এমন হামলা সকলের কাছে অপ্রত্যাশিত। তার পর থেকেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর থেকে বেরোতে বারণ করা হয়েছে। আমাদের দিনের বেশির ভাগ সময়ই বাঙ্কারে কাটছে।’’ বেরশেভা শহরে আটকে পড়া শ্বেতা নামে এক ভারতীয় ছাত্রী এনডিটিভিকে বলেন, ‘‘আমাদের শহর গাজা সীমান্ত থেকে মাত্র এক ঘণ্টার দূরত্বে। শুনেছি আশপাশের কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রকেট হামলা হয়েছে। আমরা তাই আতঙ্কে রয়েছি।’’ প্রসঙ্গত, গত শনিবার সকালে হামাসের রকেট হামলার পর থেকে এ পর্যন্ত দু’পক্ষের যুদ্ধে প্রায় দেড় হাজার সেনা এবং অসামরিক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে।

গাজা ভূখণ্ডে হামাসের নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। বর্তমান যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রাজধানী তেল আভিবের পাশাপাশি, গাজা লাগোয়া দক্ষিণ ইজরায়েলের ডেরট, কফর আজ়া, বেরি, রেইম, বেরশেভা, মাজ়েন, ওফাকিনের মতো শহরগুলিই সবচেয়ে বেশি সঙ্কটের মুখে। রকেট হামলার পাশাপাশি, গাজা সীমান্তবর্তী ইজ়রায়েলের কয়েকটি শহরে অনুপ্রবেশকারী হামাস বাহিনীর সঙ্গে সেনার মুখোমুখি লড়াই চলছে। লেবাননে সক্রিয় হেজবুল্লা বাহিনী হামলা চালালে উত্তর ইজ়রায়েলেও লড়াই শুরু হবে। ঘটনাচক্রে, হামাস এবং হেজবুল্লা দু’টি গোষ্ঠীর সঙ্গেই ‘ঘনিষ্ঠতা’ রয়েছে ইরানের। সূত্রের খবর, এই পরিস্থিতিতে তেহরানের সঙ্গে কূটনৈতিক যোগাযোগ কাজে লাগিয়ে আটক ভারতীয়দের উদ্ধারের পথও খুলে রাখতে চাইছে সাউথ ব্লক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন