আউশভিৎসের ক্যাম্পে কাজ করতেন তিনি। সে ‘অপরাধের’ বিচার করতে জার্মানির আদালত ৯৩ বছরের প্রাক্তন নাৎসি এসএস কর্মী অস্কার গ্রোনিংয়ের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। দোষী সাব্যস্ত হলে ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে এই নবতিপর বৃদ্ধের। এত দিন অস্কার বলে এসেছেন, ইহুদি-হত্যায় কখনও প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত ছিলেন না তিনি। অতি সম্প্রতি তিনি মানেন, নৈতিক দিক থেকে তিনিও ‘অপরাধী’। প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত না থাকলেও তাঁর চোখের সামনে যে ভাবে ইহুদি-হত্যা হয়েছে, তার নৈতিক দায় তাঁর উপরেও বর্তায় বলে আদালতের সামনে স্বীকার করেন অস্কার।
কিন্তু আইনের চোখেও তিনি দোষী কি না, সে বিচারের ভার আদালতের উপরেই ছেড়ে দিয়েছেন ওই প্রাক্তন এসএস কর্মী। ২০০৫ সালে এক ব্রিটিশ চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অস্কার জানান, আউশভিৎসের ক্যাম্পে হিসেবরক্ষকের কাজ করতেন। নবাগত বন্দিদের কাছ থেকে যে অর্থ বাজেয়াপ্ত করত হিটলারের অনুগত কর্মীরা, তারই হিসেবনিকেশ রাখতেন অস্কার। কিন্তু ওটুকুই। কখনও কোনও ইহুদি হত্যায় অংশ নেননি বলে দাবি তাঁর। তবে চোখের সামনে একাধিক বার গ্যাস চেম্বারে ইহুদি-নিধন দেখেছিলেন তিনি। অস্কারের নিজের বয়ানে, ‘‘প্রথমে গ্যাস চেম্বারের ভিতর থেকে তীব্র আর্তনাদ শুনতে পেতাম, তার পর ধীরে ধীরে সে শব্দ কেমন যেন ঝিমিয়ে পড়ত, এক সময় স্তব্ধ হয়ে যেত।’’ প্রায় তিন লক্ষ ইহুদিকে এ ভাবেই শেষ হয়ে যেতে দেখেছিলেন আউশভিৎসের হিসেবরক্ষক। মাত্র দু’মাসের মধ্যে।
এমন আরও বহু নৃশংসতার নৈতিক দায় স্বীকার করে সম্প্রতি অস্কার আদালতে বলেন, ‘‘আমি ক্ষমা চাইছি। নৈতিক দিক থেকে আমিও অপরাধী।’’ তার পরেই বিচারকদের উদ্দেশে তাঁর মন্তব্য, ‘‘তবে এ কারণে আইনের চোখে অপরাধী কি না, তা আপনারাই ঠিক করুন।’’