তখনও চলছে আগুন নেভানোর কাজ। ছবি: রয়টার্স
দাউদাউ আগুনে জ্বলছিল গোটা টাওয়ারটাই। পুড়ে খাক হয়ে যাচ্ছিল ২৪টা তলাই। সেই ভয়াবহ আগুনের গ্রাসে থাকা বাড়ি থেকে আশ্চর্যজনক ভাবে বেঁচে গেল একটি শিশু। ১০ তলা থেকে নিজের সন্তানকে নীচে ফেলে দিয়ে আগুনের লকলকে শিখায় নিঃশেষ হয়ে গেলেন মা। মঙ্গলবার গভীর রাতে পশ্চিম লন্ডনের ল্যাঙ্কাশায়ারের গ্রেনফেল টাওয়ারের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এই ভাবেই প্রাণ বাঁচল এক শিশুর।
এক প্রত্যক্ষদর্শী সামিরা লামরানি জানান, সে সময় দমকলকর্মীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উদ্ধারকার্যে হাত লাগিয়েছিলেন স্থানীয়রাও। হঠাৎই দেখা যায় জ্বলন্ত বহুতলের উপর থেকে বারবার হাত নেড়ে দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছেন এক মহিলা। কিছু একটা বলার চেষ্টা করছিলেন তিনি। এরপরেই উপর থেকে কাপড়ে মোড়া কিছুটা একটা নীচে ছুড়ে দেন ওই মহিলা। এবং মুহূর্তে হারিয়ে যান আগুনের গ্রাসে। ‘বস্তু’টি একটু কাছে আসতেই শোনা যায় তা থেকে ভেসে আসছে শিশুর কান্নার আওয়াজ। নিমেষের মধ্যে বোঝা যায় বিষয়টি। আসলে উপর থেকে শিশুটিকে বাঁচাতে তাকে নীচে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন মা। সঙ্গে সঙ্গেই এক ব্যাক্তি ছুটে যান। সময়মতো ধরেও ফেলেন শিশুটিকে। বরাত জোরে বেঁচে যায় সে।
আরও পড়ুন: ২১ তলা থেকে নেমে মা দেখলেন, দুই সন্তান নেই
সামিরা জানান, বহু মানুষ হোমমেড প্যারাশুটে করে নামার চেষ্টা করেছিলেন। অনেককেই ঝাঁপ দিতে দেখা গিয়েছিল। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ বাঁচতে পারেননি। অনেক বাসিন্দারা বিছানার চাদর জুড়ে জুড়ে দড়ি তৈরি করে নামারও চেষ্টা করেছিলেন।
তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, খুব কম মানুষই ওই ভয়াবহ আগুন থেকে বাঁচতে পেরেছেন।
সরকারি ভাবে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩০ জন। তার মধ্যে ১৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে এখনও ওই ১২০ টি ফ্ল্যাটের অধিকাংশ বাসিন্দারই খোঁজ মিলছে না বলে জানা গিয়েছে।