(বাঁ দিকে) বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি ক্রমে উত্তপ্ত হচ্ছে। সোমবার সে দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যা মামলায় রায় ঘোষণা করা হবে। রায় শোনাবে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তবে তার আগে দফায় দফায় অশান্তির খবর আসছে। ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গাড়ি, বাস, সরকারি প্রতিষ্ঠানের সামনে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এমনকি, অ্যাম্বুল্যান্সেও ককটেল হামলার খবর মিলেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে রবিবার সন্ধ্যায় দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা পুলিশ। বলা হয়েছে, কোথাও কাউকে মানুষ, গাড়ি বা পুলিশের উপর অগ্নিসংযোগ বা ককটেল ছুড়তে দেখলেই গুলি করতে হবে। কিন্তু তার পরেও একাধিক জায়গা থেকে এই ধরনের হামলার খবর এসেছে।
বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার, বিচারপতি মহম্মদ শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মহম্মদ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সোমবার হাসিনার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলির রায় ঘোষণা করবে। তার সরাসরি সম্প্রচার হওয়ার কথা রয়েছে। গত বছরের ৫ অগস্ট হাসিনা গণঅভ্যুত্থানের চাপে পড়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন। ইস্তফা দেন প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকেও। সেই থেকে তিনি ভারতে রয়েছেন। জুলাই মাসে বাংলাদেশের ছাত্রযুবদের আন্দোলনের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে হাসিনার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তিনি আন্দোলনকারীদের হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই সংক্রান্ত মামলায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সর্বোচ্চ শাস্তি অর্থাৎ, মৃত্যুদণ্ডের আবেদন জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশে এখন হাসিনার দল আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ। কিন্তু রবিবার রাতেও আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে মশালমিছিল করেছেন। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো জানিয়েছে, এই মিছিলের ফলে প্রায় ২০ মিনিট রাস্তায় যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটেছে। গত ১০ নভেম্বর থেকে হাসিনার মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে যে ধরনের অশান্তির ঘটনা ঘটেছে, তার নেপথ্যে আওয়ামী লীগের ‘দুষ্কৃতী’রাই রয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
ঢাকার তিতুমীর কলেজের সামনে এবং আমতলী মোড় এলাকায় বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে রবিবার গভীর রাতে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে জলের ট্যাঙ্কের কাছে একটি বাসেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার আগে সেন্ট্রাল রোডে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের বাড়ির সামনের রাস্তায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বিক্ষিপ্ত ভাবে বিভিন্ন ঘটনায় বেশ কয়েক জন জখম হয়েছেন।