আলি আহসান মহম্মদ মুজাহিদ।—ফাইল চিত্র।
আন্তর্জাতিক যুদ্ধপরাধ আদালত আগেই তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শুনিয়েছিল। মঙ্গলবার সেই রায়ই বহাল রাখল বাংলাদেশের শীর্ষ আদালত। অধ্যাপক এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রধান পরিকল্পক হিসেবে আলি আহসান মহম্মদ মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ বহাল রাখা হল। এর প্রতিবাদে আগামিকাল বুধবার বাংলাদেশ জুড়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে জামাত। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে মুজাহিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলে বাংলাদেশে এই প্রথম কোনও প্রাক্তন মন্ত্রীর ফাঁসি হবে।
২০১৩-র ১৭ জুলাই আন্তর্জাতিক যুদ্ধপরাধ আদালত মুজাহিদকে মৃত্যুদণ্ডের রায় শোনায়। তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে তোলা সাতটি অভিযোগের মধ্যে পাঁচটি প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে ১৯৭১-এ বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনা এবং ফরিদপুরের বকচর গ্রামে হিন্দু-হত্যা ও নিপীড়নের দায়ে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ওই গ্রামের পুরুষদের সে দিন পিছমোড়া করে বেঁধে নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছিল।
এই রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ১১ অগস্ট সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন মুজাহিদ। চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল তার শুনানি শুরু হয়। এর পর গত ২৭ মে মামলার শুনানি শেষ হয়। ওই দিন আদালত ১৬ জুন রায় শোনানো হবে বলে জানিয়ে দেয়। সেই মতো এ দিন সকাল সকাল ৯টা নাগাদ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্রকুমার সিন্হা এই রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণা করতে মিনিটখানেক সময় নেন বিচারপতি সিন্হা।
কে এই আলি আহসান মহম্মদ মুজাহিদ?
জামাতের গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী নেতা মুজাহিদ। তিনি দলের বর্তমান সাধারণ সম্পাদক। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিগত জোট সরকারে তিনি সমাজকল্যাণমন্ত্রী ছিলেন। ইতিহাস অনুযায়ী, ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজে ছাত্রাবস্থায় ইসলামী ছাত্র সংঘে (জামায়াতের তৎকালীন ছাত্র সংগঠন) যোগ দেন মুজাহিদ। ১৯৬৮ থেকে ৭০— এই দু’বছর তিনি ফরিদপুর জেলা ছাত্র সংঘের সভাপতি ছিলেন। ১৯৭০ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ওই বছরই পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র সংঘের সম্পাদক হন। এর পর তিনি ছাত্র সংঘের সভাপতি এবং আল বদর বাহিনীর প্রধান পদেও কাজ করেন। এই সময়েই তিনি দুষ্কর্মগুলি করেন।