যুদ্ধের মাটিতে শান্তির ডাক

তিক্ততা ভুলে আবারও বাড়িয়ে দেওয়া সেই বন্ধুতার হাত। সাত মাস আগে হিরোশিমা-সফরে গিয়ে দুঃখপ্রকাশ করে এসেছিলেন আমেরিকার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

হনুলুলু (হাওয়াই) শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০১:৪১
Share:

নিহত প্রায় আ়ড়াই হাজার মার্কিন সেনার স্মৃতিসৌধে বারাক ওবামা ও শিনজো আবে। মঙ্গলবার পার্ল হারবারে এএফপি-র ছবি।

তিক্ততা ভুলে আবারও বাড়িয়ে দেওয়া সেই বন্ধুতার হাত।

Advertisement

সাত মাস আগে হিরোশিমা-সফরে গিয়ে দুঃখপ্রকাশ করে এসেছিলেন আমেরিকার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। গত কাল পার্ল হারবারের আরিজোনা স্মৃতিসৌধের সামনে দাঁড়িয়ে যেন সেই সৌজন্যই ফিরিয়ে দিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। নিহত মার্কিন সেনাদের উদ্দেশে সমবেদনাও জানান তিনি। পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন ওবামা। পুষ্পস্তবক হাতে নেওয়ার মুহূর্তটায় বাক্‌রুদ্ধ হয়ে পড়লেও তিনিও।

১৯৪১-এর ৭ ডিসেম্বর। হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের মার্কিন নৌঘাঁটি পার্ল হারবারে হামলা চালায় জাপান। নিহত হয় প্রায় আড়াই হাজার মার্কিন সেনা। কার্যত এর পরেই সরাসরি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আসরে নামে আমেরিকা। চার বছরের মাথায় জাপানের হিরোশিমা-নাগাসাকিতে ভয়াবহ পরমাণু হামলা চালায় তারা। পরে বদলেছে সমীকরণ। জাপান এখন আমেরিকার ‘বন্ধু’। কিন্তু একযোগে দুই শীর্ষনেতার পার্ল হারবার সফর এ বারই প্রথম। সোমবারই হাওয়াই এসে পৌঁছন আবে। আর ওবামা এসেছেন গতকাল। নৌকায় চেপে আরিজোনা স্মৃতিসৌধে পৌঁছন তাঁরা।

Advertisement

সেখানে শ্রদ্ধা জানিয়ে আবে বলেন, ‘‘যুদ্ধের ভয়াবহতায় আর নয়। দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও পোক্ত করতে চাই আমরা।’’ নিহতদের প্রতি সমবেদনাও জানান আবে। কিন্তু ক্ষমা চাননি একটি বারের জন্যও। মে মাসে জাপান সফরে যেমন চাননি ওবামাও। তবু এক বছরের মধ্যে এই জোড়া সফরকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক কূটনীতিক মহল। আজ ওবামাও বলেন, ‘‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে আমেরিকা-জাপানের সুসম্পর্ক এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই ঐতিহ্য আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতেই হবে।’’

কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেন সেই সম্ভাবনাও খারিজ করে দিতে চাইছেন। গত মাসেই মার্কিন স্বার্থের কথা বলে হোয়াইট হাউসে এসে ‘ট্রান্স-প্যাসিফিক পার্টনারশিপ’ বাণিজ্য চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। আমেরিকা, জাপান ছাড়াও ২০১৫-র এই চুক্তিতে সই রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড-সহ এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১২টি দেশের। এই দেশগুলিই বিশ্ব বাণিজ্যের ৪০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু ট্রাম্পের কথা মতো আমেরিকা যদি সত্যিই টিপিপি থেকে সরে আসে, তা হলে চুক্তিটাই অর্থহীন হয়ে যাবে বলে সিঁদুরে মেঘ দেখছে জাপান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন