বাথরুমের জলে ভাসল বিমান, গন্ধময় লন্ডনযাত্রা

টানা আট ঘণ্টার উড়ান। দিল্লি থেকে লন্ডন। কখনও মুখে রুমাল বেঁধে, কখনও নাক চেপে রেখে কোনওমতে সিট আঁকড়ে ছিলেন যাত্রীরা। সৌজন্যে বিমানের বাথরুম। যাত্রীদের অভিযোগ, সেখান থেকে এমন দুর্গন্ধযুক্ত জল ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা বিমানে, যে টিকতে পারছিলেন না কেউই। ওই অবস্থাতেই গোটা পথ উড়েছে বিমান, জানান যাত্রীরা। দুর্বিষহ এই অভিজ্ঞতার পরে অমৃতা জরে নামে এক যাত্রী আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন জেট এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষের কাছে। টিকিটের দামও ফেরত চান তিনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৫ ০৩:৫৭
Share:

টানা আট ঘণ্টার উড়ান। দিল্লি থেকে লন্ডন। কখনও মুখে রুমাল বেঁধে, কখনও নাক চেপে রেখে কোনওমতে সিট আঁকড়ে ছিলেন যাত্রীরা। সৌজন্যে বিমানের বাথরুম।

Advertisement

যাত্রীদের অভিযোগ, সেখান থেকে এমন দুর্গন্ধযুক্ত জল ছড়িয়ে পড়েছিল গোটা বিমানে, যে টিকতে পারছিলেন না কেউই। ওই অবস্থাতেই গোটা পথ উড়েছে বিমান, জানান যাত্রীরা। দুর্বিষহ এই অভিজ্ঞতার পরে অমৃতা জরে নামে এক যাত্রী আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন জেট এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষের কাছে। টিকিটের দামও ফেরত চান তিনি।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জেট এয়ারওয়েজের ৯ডব্লিউ১২১ বিমানে দিল্লি থেকে লন্ডনে পাড়ি দেন অমৃতা। যাত্রা শুরুর দু’ঘণ্টা পরেই যে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হবে, স্বপ্নেও ভাবেননি তিনি। ২৭ বছরের এই তরুণী ব্রিটিশ এক দৈনিকে জানিয়েছেন সে দিনটির কথা। অমৃতার বক্তব্য, “আমাদের সিটের কাছেই ছিল শৌচাগার। দু’ঘণ্টা ওড়ার পরে হঠাৎ দেখি সেখান থেকে জল বেরিয়ে আসছে। সবাই চমকে ওঠেন এই ঘটনায়।”

Advertisement

অমৃতার দাবি, তাঁরা তখনই বিমানকর্মীদের সব জানান। প্রথমে তাঁদের কথায় পাত্তা দেয়নি কেউ। কিছু ক্ষণ পরে কেবিন এমন জল থই থই হয়ে পড়ে যে বিমানকর্মীরাও আর মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারেননি। কিন্তু তাঁরা দাবি করেন, শৌচাগারের সিঙ্ক থেকে জল উপচে আসছে। বিমানের এই পরিস্থিতির বেশ কয়েকটি ছবি তুলে নেন অমৃতা। সব যাত্রী ওই জলে প্রস্রাবের গন্ধ পেয়ে নাক সিঁটকেছেন বলে জানান তিনি। বাকি পথ মুখে-নাকে কাপড় চেপে আসতে হয়েছে যাত্রীদের। তাঁদের বক্তব্য, বিমানকর্মীরা নোংরা জলে কয়েকটা খবরের কাগজ এনে চাপা দেন। যাত্রীদের স্বস্তি দিতে তখন ওই টুকুই করেছিলেন তাঁরা।

যাত্রীদের মধ্যে দু’টি পরিবারের সঙ্গে ছোট শিশুও ছিল। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ঘণ্টা ছয়েক কাটাতে বাধ্য হয় তারাও। অমৃতা জানাচ্ছেন, সময় যত এগোচ্ছিল, বিমানে টেকা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ছিল। এমন গা গুলোচ্ছিল যে তিনি খাবারটাও খেতে পারেননি। তার মধ্যে এক বিমানকর্মী হঠাৎ এয়ার ফ্রেশনার ছড়াতে শুরু করেন। যার জেরে বদ্ধ জায়গায় এক যাত্রীর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। বিমানের উল্টো দিকের শৌচাগার থেকেও পরে জল উপচোতে থাকে বলে অভিযোগ।

লন্ডন পৌঁছে জেট এয়ারওয়েজের টুইটার অ্যাঙ্কাউন্টে অভিযোগ জানান অমৃতা। তার পরে সংস্থা ক্ষমাও চায়। ফের জেটের বিমানে ওড়ার জন্য তাঁকে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব দেয় সংস্থা। তাতে সন্তুষ্ট হননি অমৃতা। তাঁর সাফ কথা, “এই অভিজ্ঞতার পরে কোনও দিন জেট এয়ারওয়েজের বিমানে উঠতে চাই না।” সে দিন ওই পরিবেশে কাটানোয় অমৃতা পরে এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন যে লন্ডনে ফিরে এক সপ্তাহ অফিস করতে পারেননি।

জেট এয়ারওয়েজের তরফে এক মুখপাত্র সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ওই বিমানের যাত্রীদের অসুবিধার জন্য কর্তৃপক্ষ দুঃখিত। কিন্তু তাঁরা এ-ও দাবি করেন, তদন্তে জানা গিয়েছে সে দিন সিঙ্ক থেকেই শুধুমাত্র জল উপচে এসেছিল। শৌচাগারের সব বর্জ্য অন্য পথে বার করে দেওয়া হয়। সেই ব্যবস্থায় কোনও ত্রুটি ছিল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন