পাকিস্তানের পথে পথে এখন এই পোস্টার।
‘ওঁকে (পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ) সরানো হোক। হোক অভ্যুত্থান, এখনই।’
পাকিস্তানের তিনটি বড় শহর রাওয়ালপিন্ডি, করাচি আর লাহৌরের রাস্তাগুলো এই ধরনের পোস্টার, হোর্ডিংয়ে ছয়লাপ হয়ে গিয়েছে। এক রাতের মধ্যেই এই ধরনের পোস্টারে পোস্টারে ছয়লাপ হয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের তিনটি বড় শহর। তার মধ্যে অন্যতম পাক সেনাবাহিনীর সদর দফতর যে সহরে, সেই রাওয়ালপিন্ডিও।
তড়িঘড়ি অভ্যুত্থানের আর্জি জানিয়ে ওই পোস্টার, হোর্ডিংগুলোতে বলা হয়েছে, দেরি না করে এখনই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরিয়ে দেওয়া হোক পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে।
কারা সেই পোস্টার মেরেছে, টাঙিয়েছে হোর্ডিং?
‘মুভ অন পাকিস্তান’ নামে পাকিস্তানে সদ্য গড়ে ওঠা একটি রাজনৈতিক দল। যাদের জন্ম হয়েছে ২০১৩ সালে।
আরও পড়ুন- চিনের বিপক্ষে রায় দিল আন্তর্জাতিক আদালত, মানছি না, বলল বেজিং
সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠছে, যে পাকিস্তানে এখনও যাবতীয় রাজনৈতিক ক্ষমতার ‘মূল নিয়ন্ত্রক’ সেনাবাহিনী, এক রাতের মধ্যেই সেই দেশে বড় বড় শহরগুলোতে খোদ সেনাপ্রধানের ছবি সাঁটানো পোস্টার মেরে এই আর্জি জানানোর সাহস পেল কারা? প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি পাকিস্তানের সেনাবাহিনীরই একাংশের মদত রয়েছে এই ঘটনার পিছনে? নাকি তার পিছনে রয়েছেন পাক সেনাপ্রধান রাহিল শরিফের অনুগামীরা?
সেনাবাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানের রাজনৈতিক প্রশাসনের টানাপড়েন নতুন কোনও ঘটনা নয়। অতীতে বহু বার সেই টানাপড়েনের পরিণতি হয়েছে সেনা-অভ্যুত্থান, রক্তপাতে।
ঘটনাচক্রে, জম্মু-কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে সোমবারই বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। তার পর কূটনৈতিক মহলে এ কথাটা চাউর হয়ে যায় যে, সম্ভবত পাকিস্তানের সেনাপ্রধান বা সেনাবাহিনীকে সন্তুষ্ট করতেই কাশ্মীর নিয়ে ওই বিতর্কিত মন্তব্য করতে উৎসাহিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। পাকিস্তানের ইতিহাসে অবশ্য সেনাবাহিনীকে রাজনীতিকদের তোয়াজ করে চলার ট্র্যাডিশন অনেক দিনের!
ওই পোস্টার, হোর্ডিংয়ে সরাসরি বলা হয়েছে, ‘‘চলে যাওয়ার কথা পুরনো হয়ে গিয়েছে। আল্লার ইচ্ছায় ঘটনাটা এখনই ঘটুক।’’ চলতি বছরের শেষে তাঁর মেয়াদ ফুরনোর পর তিনি আর সেনাপ্রধানের পদে থাকতে চান না বলে আগেই জানিয়েছিলেন রাহিল শরিফ।
‘মুভ অন পাকিস্তান’-এর নেতা আলি হাশমি বলেছেন, ‘‘পাকিস্তানের সরকার যে রকম দুর্নীতিগ্রস্ত, তাতে এর চেয়ে অনেক ভাল একনায়কত্ব। তা ছাড়া পাক সেনাপ্রধান যে ভাবে শক্ত হাতে সন্ত্রাসবাদ দমন করছেন, তার পর কে তাঁর যোগ্য উত্তরসূরী হতে পারেন, তা নিয়েও যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।’’