রীতা চক্রবর্তী ও রঞ্জনা ঘটক।
কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলির প্রধানদের আনুষ্ঠানিক বৈঠক। সেখানে প্রাধান্য বাঙালিদেরই। বাকিংহাম প্যালেসের বলরুমে ছিল সেই অনুষ্ঠান। দেশের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলির প্রধানদের স্বাগত জানান।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের পরিচিত মুখ রীতা চক্রবর্তী। বাঙালি বাবা-মায়ের সন্তান রীতার জন্ম লন্ডনেই। রাজপরিবারের সদস্যরা এক এক করে যখন ঢুকছেন বলরুমে, তাঁদের নাম ঘোষণা করলেন রীতাই। সব শেষে ঢোকেন রানি এবং যুবরাজ চার্লস।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সূচনা হয় ‘আনরিটন’ (‘অলিখিত’) নামে সঙ্গীতালেখ্য দিয়ে। গানে ছিলেন লন্ডনে জন্মানো আর এক বাঙালি রঞ্জনা ঘটক। তাঁর পাশাপাশি গান গেয়েছেন আরও পাঁচ জন। রঞ্জনা-সহ ছ’জন গায়ক-গায়িকা এশিয়া, আফ্রিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং কমনওয়েলথ-এর আরও নানা ছোট দ্বীপের গান তুলে ধরেন। রঞ্জনা উত্তর ভারতীয় সঙ্গীতে তালিম নিয়েছেন। ২০০০ সালে কলকাতায় পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর ছাত্রী ছিলেন তিনি।
গানের পরে বক্তৃতা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে, কমনওয়েলথ সচিব প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড এবং মাসকটের প্রধানমন্ত্রীর কথা শোনেন সবাই। ছিল আরও একটি অনুষ্ঠান— ‘ভয়েসেস অব দ্য কমনওয়েলথ’। এর দায়িত্বে ছিলেন ভারতের দেবিকা মালিক এবং সিয়েরা লিওনের ফিলিপ কোল। দেবিকা জন্মেছিলেন হেমিপ্লিজিয়া নিয়ে। শরীরের এক দিকে পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হয় এই রোগে। নিজের অসুবিধের সঙ্গে লড়াই করে আন্তর্জাতিক প্যারা-অ্যাথলিট হয়ে উঠেছেন দেবিকা। মায়ের সঙ্গে তৈরি করেছেন ‘হুইলিং হ্যাপিনেস ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সংস্থা। প্রতিবন্ধীদের খেলাধুলোয় উৎসাহ দেওয়া থেকে শুরু করে তাঁদের জন্য অর্থ তহবিল তৈরির মতো নানা কাজ করেন। অন্তত ৫০ জন প্রতিবন্ধীকে খেলোয়াড় হয়ে উঠতে সাহায্য করেছেন তিনি। ভারতে প্রতিবন্ধী মহিলা খেলোয়াড়দের নিয়ে গবেষণা করছেন দেবিকা।
অনুষ্ঠান শেষ হয় ‘শেফার্ডস হে’ গোষ্ঠীর বেহালাবাদন দিয়ে। সাত জন বেহালাবাদক ছিলেন যাঁরা কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলির বেহালা-ঐতিহ্য তুলে আনেন অনুষ্ঠানে। দক্ষিণ ভারতীয় কর্নাটকি ঐতিহ্যের পাশাপাশি শোনা গিয়েছে কানাডার লোকসুর। ভারত থেকে জ্যোৎস্না শ্রীকান্ত ছিলেন এই দলে। রাজপ্রাসাদের বাইরের বিপণিতে বেজেছে ঢোল। বলিউড ব্রাস ব্যান্ডের গানে মেতেছেন দর্শনার্থীরা।