Doctor Amal Bose

মহিলাদের বলতেন ‘টাটকা মাংস’, পদের জোরে পাঁচ বছর ধরে যৌন হেনস্থা হাসপাতালের সহকর্মীদের, বিলেতে বাঙালি চিকিৎসকের জেল

চিকিৎসকের পরিচয় নিয়ে নানা দাবি উঠতে শুরু করেছে। গত মার্চ মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিলেত সফরে অক্সফোর্ডের কেলগ্‌স কলেজে বক্তৃতার সময়ে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান কিছু প্রবাসী ভারতীয়। অনেকের দাবি, সেই বিক্ষোভের অন্যতম হোতা ছিলেন এই চিকিৎসক।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:২১
Share:

ব্ল্যাকপুল ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের বাঙালি চিকিৎসক অমল বসু। —ফাইল চিত্র।

গত ২০১৭ সাল থেকে ২০২২— পাঁচ বছরে একাধিক মহিলা সহকর্মী তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন। সেই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ার পরে বিলেতের আদালত ছ’বছরের কারাদণ্ড দিল এক বাঙালি চিকিৎসককে। তাঁর নাম অমল বসু। ল্যাঙ্কাস্টারের বাসিন্দা অমল কর্মরত ছিলেন ব্ল্যাকপুল ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে। বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, কার্ডিও ভাস্কুলার সার্জন হিসাবে ওই হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন অমল।

Advertisement

অমলের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে এক মহিলা সহকর্মী প্রথম প্রেস্টন আদালতের দ্বারস্থ হন ২০২২ সালে। তার পর একে একে আরও অনেকে অমলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান। গোপন জবানবন্দিও দেন আদালতে। বিবিসি-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, অমল তাঁর পদের জোরে প্রথমদিকে মহিলাকর্মীদের হোয়াট্‌সঅ্যাপ গ্রুপে বিভিন্ন অশ্লীল বার্তা পাঠাতেন। কাউকে উল্লেখ করতেন ‘টাটকা মাংস’ হিসাবে, কারও শরীরের গঠন, বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের আকার-আকৃতি নিয়েও মন্তব্য করতেন। শুধু তা-ই নয়, অমলের বিরুদ্ধে শারীরিক নিগ্রহেরও অভিযোগ করেছেন অনেকে। অভিযোগকারিণীদের মধ্যে একাধিক মহিলার বক্তব্য, তাঁরা ভয়ে মুখ খুলতে পারেননি। কেউ কেউ ওই হাসপাতালের চাকরি ছেড়েও দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

যদিও চিকিৎসক অমল আদালতে দাবি করেন, তিনি যেগুলি বলতেন বা করতেন, সেগুলি ‘নিছক মজা’ ছিল। গত জুন মাসে প্রেস্টন ক্রা‌উন কোর্ট অমলকে দোষী সাব্যস্ত করে। গত মঙ্গলবার অমলকে ছ’বছরের কারাদণ্ডের সাজা দেয় আদালত। মোট পাঁচ জন মহিলা ১২টি অভিযোগ করেছিলেন অমলের বিরুদ্ধে। এই সবগুলিই পাঁচ বছরের মধ্যে ঘটেছে।

Advertisement

দোষী চিকিৎসক অমলের পরিচয় নিয়ে নানা দাবি উঠতে শুরু করেছে। গত মার্চ মাসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিলেত সফরে গিয়েছিলেন। সেই পর্বে তাঁর অক্সফোর্ডের কেলগ্‌স কলেজে বক্তৃতার সময়ে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখান কিছু প্রবাসী ভারতীয়। মমতার বক্তৃতার মধ্যেই হট্টগোল বাধে। প্রাথমিক ভাবে বক্তৃতা থামিয়ে দিতে হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীকে। তবে কিছু পরেই তিনি বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন। প্রেক্ষাগৃহে উপস্থিত অনেকে বিক্ষোভকারীদের সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য করেছিলেন। পরে মমতা যখন বক্তৃতা করে বেরোচ্ছেন, তখনও বাইরে দাঁড়ানো কিছু লোক তাঁকে লক্ষ্য করে টিপ্পনি করেন। মমতা অবশ্য সে বিষয়টিকেও পাত্তা দেননি।

অনেকের দাবি, ওই বিক্ষোভের ‘অন্যতম হোতা’ ছিলেন এই চিকিৎসক। যদিও সে প্রসঙ্গে কোনও প্রামাণ্য ছবি বা ভিডিয়ো ক্লিপ শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত প্রকাশ্যে আসেনি। বিবিসি-র প্রতিবেদনেও এই বিষয়টির কোনও উল্লেখ নেই। এই দাবি যাঁরা করছেন, তাঁদের অনেকের বক্তব্য, কলেজের সেমিনার হলের বাইরে যে জমায়েত ছিল, সেখানে উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক অমল। কিন্তু সেই মর্মেও কোনও ছবি এখনও প্রকাশ্যে আসেনি। কেলগ্‌স কলেজের তরফেও এমনকিছু জানানো হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement