সমাবেশেই খুনের চেষ্টা ট্রাম্পকে, যুবক গ্রেফতার

হোয়াইট হাউসের দৌড় শুরু করা থেকেই তিনি বিতর্কিত। সভা করতে গিয়ে একাধিক বার বিক্ষোভের মুখে প়ড়েছেন। ভাঙচুর, সংঘর্ষের জেরে তাঁর বেশ কয়েকটি সমাবেশ ভেস্তেও গিয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৬ ০৮:৫০
Share:

মাইকেল স্টিভেন স্যান্ডফোর্ড। ছবি: রয়টার্স।

হোয়াইট হাউসের দৌড় শুরু করা থেকেই তিনি বিতর্কিত। সভা করতে গিয়ে একাধিক বার বিক্ষোভের মুখে প়ড়েছেন। ভাঙচুর, সংঘর্ষের জেরে তাঁর বেশ কয়েকটি সমাবেশ ভেস্তেও গিয়েছে। কিন্তু এ বার ভরা সভার মধ্যেই রিপাবলিকান সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল এক ব্রিটিশ যুবকের বিরুদ্ধে।

Advertisement

একাধিক মার্কিন সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, শনিবার লাস ভেগাসের ট্রেজার আইল্যান্ড ক্যাসিনোয় ট্রাম্পেরসভা থেকে মাইকেল স্টিভেন স্যান্ডফোর্ড নামে বছর উনিশের এক যুবক কে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার নেভেদার আদালতে তার বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। যাতে বলা হয়েছে, সভা চলাকালীন এক পুলিশকর্মীর কোমর থেকে রিভলভার বের করে তিনি ট্রাম্পকেই মারতে চেয়েছিলেন। এই যুবক গত এক বছর ধরে ট্রাম্পকে খুনের ছক কষছিলেন বলেও দাবি পুলিশের। স্যান্ডফোর্ডের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার পাশাপাশি সংরক্ষিত এলাকায় হিংসা ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। যার জেরে, ১০ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে স্যান্ডফোর্ডের। পরবর্তী শুনানি ৫ জুলাই।

পুলিশের দাবি, জেরার মুখে ‘অপরাধ’ স্বীকার করেছেন ওই যুবক। তাঁর থেকে একটি ব্রিটিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া গিয়েছে। তবে বছর দেড়েক তিনি বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই আমেরিকায় থাকছিলেন বলে জানিয়েছেন এক পুলিশকর্তা। মার্কিন গোয়েন্দা সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার ১৬ জুন তিনি ক্যালিফোর্নিয়া থেকে গাড়ি চালিয়ে লাস ভেগাসে যান। ১৭ তারিখ যান স্থানীয় একটি শ্যুটিং রেঞ্জে— বন্দুক চালানো শিখতে। যুবকের দাবি, সেই প্রথম তাঁর বন্দুক হাতে নেওয়া। তার পর শুক্রবার টিকিট কেটে সরাসরি পৌঁছন ট্রাম্পের সভায়।

Advertisement

সে দিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন একনিষ্ঠ ট্রাম্প-সমর্থক তথা হলিউড শিল্পী গ্রেগ ডনোভানও। তাঁর কথায়, ‘‘সভাস্থলে ঢোকার আগে আমরা সবাই লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম। ন’ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে। স্যান্ডফোর্ড নামের যে ছেলেটিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সে-ও ছিল লাইনে। ট্রাম্পকে কাছ থেকে দেখার জন্য সবাই উদগ্রীব ছিলাম। কিন্তু আমার যেন প্রথম থেকেই ছেলেটিকে কেমন জানি বিভ্রান্ত মনে হয়েছিল। ছটফটে দৃষ্টি, কেমন একটা ইতস্তত ভাব।’’ কিন্তু তখনও তিনি ঠাহর করে উঠতে পারেননি, সভার শেষেই ঠিক কী হতে চলেছে!

ট্রাম্প তখনও মঞ্চে। পুলিশের দাবি, ভিড়ের মধ্যে থেকেই স্যান্ডফোর্ড প্রথমে প্রার্থীর অটোগ্রাফ নিতে চান। তার পর হঠাৎই পাশে দাঁড়ানো এক পুলিশকর্মীর কোমরে গোঁজা রিভলভার ছিনিয়ে নিতে যান। এবং তড়িঘড়ি তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু পুলিশের বন্দুকে নজর কেন? গোয়েন্দাদের দাবি, পুলিশের আগ্নেয়াস্ত্র ‘আনলক’ অবস্থায় থাকে বলেই তা ছিনিয়ে সহজে নিশানায় তাক করতে চেয়েছিলেন ধৃত যুবক।

ভরা সভায় ট্রাম্পকে খুনের চেষ্টার কথা জেরার স্বীকার করেন স্যান্ডফোর্ড। যদিও যুবকের মায়ের দাবি, তাঁর ছেলে মানসিক ভাবে অসুস্থ। চিকিৎসারত অবস্থায় স্যান্ডফোর্ড এক বার ইংল্যান্ডের এক হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান বলেও দাবি তাঁর। সোমবার আদালতে স্যান্ডফোর্ডের কৌঁসুলিও তাঁর মক্কেলের ‘অটিজম’ আছে বলে জানিয়েছেন। ট্রাম্প নিজে অবশ্য ঘটনাটি বা স্যান্ডফোর্ডকে নিয়ে আজ সকাল পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করেননি। তাঁরই ঘনিষ্ঠ মহলের একাংশ বলছেন, মার্কিন ধনকুবের এখন নভেম্বর ভোটের তহবিল জোগাড়েই হিমশিম খাচ্ছেন। মার্কিন একটি সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, গত মে মাসে ট্রাম্পের তহবিলে জমা পড়েছিল ৩১ লক্ষ ডলার। কিন্তু মাসের শেষে তা-ই এসে ঠেকেছে ১৩ লক্ষে। যেখানে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট পদপ্রার্থী হিলারির তহবিলে এখনও মজুত ৪ কোটি ২০ লক্ষ ডলার। কূটনীতিকদের একাংশ বলছেন, এই ফারাকটাই নভেম্বরের ভোটে ফয়সালা করে দিতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন