ভোটে হস্তক্ষেপ, পুতিন এ বার মে-র নিশানায়

লন্ডনে আজ মঞ্চটা ছিল বণিকসভার। মে যে তাই এখান থেকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে এতখানি ঝাঁঝালো আক্রমণ করে বসবেন, অনেকেই তা ঠাহর করে উঠতে পারেননি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লন্ডন শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৫৯
Share:

ফিসফাস আর চাপা ঝাঁঝ ছিলই। ভোটে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে এ বার সরাসরি রাশিয়ার বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন ব্রিটিশ
প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে। একের পর এক ভুয়ো খবর ছড়িয়ে রাশিয়া গোটা পশ্চিমী দুনিয়াতে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও সুর চড়ালেন মে। রাশিয়ার প্রসঙ্গে ফেব্রুয়ারিতে তিনি বলেছিলেন, ‘‘সম্পর্ক রাখুন, তবে সাবধানে।’’ আর আজ ঘুরিয়ে বললেন, ‘‘রাশিয়ার থেকে সাবধান, তা সে সম্পর্ক অটুট রাখতে চাইলেও!’’

Advertisement

লন্ডনে আজ মঞ্চটা ছিল বণিকসভার। মে যে তাই এখান থেকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে এতখানি ঝাঁঝালো আক্রমণ করে বসবেন, অনেকেই তা ঠাহর করে উঠতে পারেননি। এ দিকে আগামী মাসে মস্কো সফরে যাওয়ার কথা ব্রিটিশ বিদেশমন্ত্রী বরিস জনসনের।

তাই প্রশ্ন উঠছে, এই পরিস্থিতিতে মে হঠাৎ মুখ খুলতে গেলেন কেন? তা-ও আবার এমন একটা সময়ে যখন কি না, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর নিজের দেশে রুশ হ্যাকিংয়ের তত্ত্ব বানচাল করে দিয়ে পুতিনেই ভরসা রাখতে চাইছেন। সম্প্রতি এ নিয়ে টুইট করতে গিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘‘সব ব্যাপারে রাজনীতি করার কোনও মানে হয় না। রাশিয়া আমাদের শত্রু নয়। বরং উত্তর কোরিয়া, সিরিয়া, ইউক্রেনের মতো দেশে সন্ত্রাস দমন ও শান্তি ফেরানোর ক্ষেত্রে রাশিয়ার পাশে থাকাটা আমাদের পক্ষে অত্যন্ত জরুরি।’’

Advertisement

রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করতে চাইছেন না মে-ও। তবে দেশের স্বার্থরক্ষাই যে এখন তাঁর অগ্রাধিকার, তা আজ স্পষ্ট করে দেন তিনি।
শুধু আমেরিকা বা ব্রিটেনের নির্বাচন নয়, ব্রেক্সিট, এমনকী স্বাধীনতার দাবিতে অক্টোবরে ক্যাটালোনিয়ার গণভোটেও রাশিয়ার বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে। ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে মত তৈরির ক্ষেত্রে রাশিয়া সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করেছিল বলে অভিযোগ। আজ মে বলেন, ‘‘ধারাবাহিক ভাবে আন্তর্জাতিক আইন ভেঙে চলেছে রাশিয়া। মর্জি মতো অন্যের আকাশসীমা ভেঙে ঢুকে পড়ছে। ভয়াবহ পরিস্থিতি আজ ইউক্রেনে। গোটা ইউরোপের উপর ছড়ি ঘোরাতে রাশিয়া সাইবার হানাও চালাচ্ছে একাধিক দেশের পার্লামেন্টে। এ বার সমঝে যাওয়া উচিত মস্কোর।’’

রাশিয়ার বিরুদ্ধে মে-র এ ভাবে হঠাৎ সরব হওয়ার পিছনে অনেকে আবার ব্রেক্সিট প্রসঙ্গও তুলছেন। তাঁদের দাবি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়তে হচ্ছে বলেই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী নিজের দল ভারি করতে চাইছেন। এ দিকে ইউরোপের একটা বড় অংশ মনে করে, নিজেদের স্বার্থেই রাশিয়ার সঙ্গে পশ্চিমী দুনিয়ার সুসম্পর্ক রেখে চলা উচিত। মে নিজেও তা জানেন। কূটনীতিকদের দাবি, সেই কারণেই ডিসেম্বরে নিজের বিদেশসচিবকে মস্কো পাঠাচ্ছেন তিনি। আজ ধারাবাহিক তোপের মুখে এক বার তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী দেশ হিসেবে রাশিয়ার যেমন প্রভূত ক্ষমতা রয়েছে, তেমনি আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষার ক্ষেত্রেও দায়িত্বও নেওয়া উচিত ওদের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন