ওমরানের সেই রক্তাক্ত মুখ। এএফপি-র তোলা ফাইল চিত্র।
আলেপ্পোর রাস্তায় সে দিন খেলা করছিল বছর দশেকের আলি। ওমরান দাকনিশের দাদা। হঠাৎই মূর্তিমান বিভীষিকার মতো আকাশ থেকে ধেয়ে এল মৃত্যুদূত। বোমারু বিমানের আঘাতে তখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত ছোট্ট আলির বাড়ি। কোনও রকমে প্রাণে বেঁচে যায় আলির পরিবার। বছর চারেকের ওমরান-সহ তার মা-বাবা-বোনদের উদ্ধার করে বার আনা হয় ধ্বংসস্তূপ থেকে। অ্যাম্বুল্যান্সের কমলা রঙের সিটে বসা ওমরানের রক্তাক্ত অসহায় মুখ তখন ভেসে উঠেছে স্যোশাল মিডিয়ার দেওয়ালে। আলান কুর্দির পর যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় নতুন মুখ! গত ১৭ অগস্ট কাতারজি এলাকায় বিমানহানার সময় রাস্তায় খেলা করছিল ছোট্ট আলি। মা-বাবা-বোনেদের সঙ্গে সে সময় বাড়ির ভিতরে ছিল ওমরান। বিমানহানায় গুরুতর জখম হয় আলি। গত শনিবার মারা গেল সেই ওমরানের দাদা আলি। হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে তার দিন দু’য়েকের লড়াই শেষ।
গৃহযুদ্ধে দীর্ণ সিরিয়ায় আলেপ্পো শহরের দখল নিয়ে সরকার ও বিদ্রোহীদের সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় তিন লাখের বেশি মানুষ। এর মধ্যে শিশুদের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৫ হাজারের বেশি। দেশের পূর্ব প্রান্তে ঘাঁটি গেড়ে থাকা বিদ্রোহীদের ছত্রভঙ্গ করতে অহরহ বিমানহানা চালিয়েছে সিরীয় সরকার। বিদ্রোহীদের পিছনে ইসলামিক স্টেট বা আইএস জঙ্গিদের মদতের অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘাঁটি গেড়ে আশপাশের দেশ-সহ গোটা দুনিয়ায় নাশকতামূলক কার্ষকলাপ চালানোর অভিযোগ রয়েছে আইএসের বিরুদ্ধে। গত সেপ্টেম্বর থেকে বিদ্রোহীদের ঘাঁটি ধ্বংস করতে প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সেনার সঙ্গে যৌথ ভাবে হানা দিয়েছে রাশিয়ান বোমারু বিমান। সরকার নিয়ন্ত্রিত পশ্চিম প্রান্তের সঙ্গে পূর্ব প্রান্তের বিদ্রোহীদের সঙ্গে টানাপড়েনে উলুখাগড়ার মতো সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আলেপ্পো শহর। শহরের কাতারজি এলাকায় দিনরাতে আকাশ থেকে ঝরে পড়েছে বোমার আঘাত। হামলার জেরে ধুলোয় মিশিয়ে গেছে গ্রামের পর গ্রাম। প্রাণহানি ছাড়াও পঙ্গু হয়েছে বহু নাগরিক। হাসপাতালে প্রতি দিনই ভিড় বাড়িয়েছে জখমদের সারি।
দেখুন ওমরানের সেই ভিডিও
আরও পড়ুন
অসহায়তার নতুন মুখ সিরিয়ায়, রক্তাক্ত ওমরান উস্কে দিল আলানের স্মৃতিই