মানসিক রোগীকে চোদ্দো বার গুলি, কাঠগড়ায় মার্কিন পুলিশ

রাস্তায় ছুরি নিয়ে ঘুরছিলেন এক জন। আতঙ্কিত এলাকাবাসী খবর দিয়েছিলেন ৯১১-এ। পুলিশ এসে যেটা করল তা দেখে তাজ্জব বনে গিয়েছে আদালত। পুলিশের গাড়িরই ড্যাশবোর্ড ক্যামেরায় রেকর্ড করা ছিল সব কিছু।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৫৩
Share:

রাস্তায় ছুরি নিয়ে ঘুরছিলেন এক জন। আতঙ্কিত এলাকাবাসী খবর দিয়েছিলেন ৯১১-এ। পুলিশ এসে যেটা করল তা দেখে তাজ্জব বনে গিয়েছে আদালত। পুলিশের গাড়িরই ড্যাশবোর্ড ক্যামেরায় রেকর্ড করা ছিল সব কিছু। সেখানে দেখা গিয়েছে এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে মারতে মোট ১৮ বার গুলি চালায় ক্যালিফোর্নিয়ার পুলিশ। যার মধ্যে ১৪টি লেগেছে ওই ব্যক্তির শরীরে। দু’মাস পরে প্রকাশ্যে এসেছে মার্কিন পুলিশের আচরণের সেই রিপোর্ট। কাল খবরের কাগজে গোটা ঘটনা পড়ার পরে নিন্দার ঝড় আমেরিকায়।

Advertisement

ঘটনা ১১ জুলাইয়ের। ক্যালিফোর্নিয়ার স্যাক্রামেন্টোর রাস্তায় ছুরি হাতে বেরিয়ে পড়েছিলেন জোসেফ মান। বছর একান্নর জোসেফ মানসিক ভারসাম্যহীন। ফোন পেয়ে লোজোয়া ও টেনিস নামে দুই পুলিশ অফিসার ঘটনাস্থলে যান। কিন্তু গোটা ঘটনাটা সামাল দেওয়ার বদলে তাঁরা যা করেছেন, তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করেছেন জোসেফের বাড়ির লোকজন। ড্যাশক্যামে রেকর্ড করা ফুটেজে দেখা গিয়েছে গাড়ি থেকে নেমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার আগেই এক অফিসার বলছেন, ‘‘ওকে মারবই।’’ যা দেখে ওই দুই অফিসারের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ বিভাগ। আপাতত ডেস্কের কাজে রাখা হয়েছে ওই দু’জনকেই।

কিন্তু জোসেফের পরিবার তাতে সন্তুষ্ট নয়। তারা ওই দুই অফিসারের শাস্তি চায়। সেই মতো আদালতে মামলা ঠুকেছেন তাঁরা। জোসেফ যে মানসিক ভাবে অসুস্থ, তা প্রমাণের জন্য পুলিশের কাছে রিপোর্টও জমা দিয়েছেন। জোসেফের ভাই রবার্টের বক্তব্য, ‘‘আমার দাদা যে মানসিক ভারসাম্যহীন, সেটা না বুঝেই কেন অতগুলো গুলি চালিয়ে ফেলল পুলিশ? আমাদের কাছে ডাক্তারি রিপোর্ট ছিল প্রমাণের জন্য। পুলিশ একটু বিবেচনা করে কাজ করলে এ ভাবে দাদাকে মরতে হতো না।’’

Advertisement

পুলিশের বিরুদ্ধে এ ভাবেই ক্ষোভ জমছে আমেরিকায়। গত ন’মাসে ৭১৯ জন। পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরে দেশের বিভিন্ন শহরে পুলিশের গুলিতে নিহতের সংখ্যাটা ঠিক এটাই। নিহতদের মধ্যে বেশির ভাগই সংখ্যালঘু কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায়ের। প্রশ্ন, পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে কি পুলিশ একটু বাড়াবাড়ি করে ফেলছে না? জঙ্গি হামলা বা ওই ধরনের গুরুতর কিছুর আশঙ্কা নেই যেখানে, সেখানে কেন গুলি চালাচ্ছে পুলিশ? এমনকী নিরস্ত্র মানুষকেও মেরে ফেলতে দ্বিধা করছে না? দেশের নানা জায়গায় পুলিশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-প্রতিবাদও শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় আদালতের সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে জোসেফের পরিবার। ভাই রবার্ট বলেই দিলেন, ‘‘পুলিশের পোশাক ওদের দু’জনকে মানায় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন