মরিয়া: দাবানলের মোকাবিলায়। শুক্রবার ক্যালিফোর্নিয়ার সান দিয়েগোতে। ছবি: এএফপি।
পাঁচ দিন হয়ে গিয়েছে। একই ভাবে পুড়ে চলেছে দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা। বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছেন স্থানীয়েরা। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার মৃত্যু হল এক জনের।
দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার ছ’টি দাবানলের মধ্যে সব চেয়ে বড় ‘টমাস ফায়ার’। সূত্রের খবর, সোমবার থেকে এখনও পর্যন্ত ভেঞ্চুরা সংলগ্ন ১.১৫ লক্ষ একর জঙ্গল গ্রাস করেছে ‘টমাস ফায়ার’। দমকলকর্মীরা জানান, সান্টা আনা থেকে আসা শুষ্ক ও শক্তিশালী হাওয়ার জেরে ক্রমশ বেড়েই চলেছে তার তীব্রতা। এ দিন ভোরের দিকে ফের বাড়তে থাকে আগুন। তখন বাড়ি থেকে পালাতে গিয়ে গাড়িতে পিষ্ট হন এক ব্যক্তি। জখম এক দমকলকর্মীও।
এক দমকল কর্মী জানান, দাবানল এখনও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বলেন, ‘‘আগুন দ্রুত ছড়াচ্ছে। ক্ষণে ক্ষণে নতুন নতুন এলাকা জ্বলার খবর আসছে।’’ বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ‘টমাস ফায়ারে’ ৭৫টি বাড়ি পুড়ে গিয়েছে। জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে ভেঞ্চুরা ও সান্টা পাওলা কাউন্টিতে। এলাকার ৭৫০০ বাড়ি খালি করে দিতে বলা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২৭ হাজার মানুষকে নিরাপদে অন্যত্র পাঠানো গিয়েছে। দমকলের মরিয়া চেষ্টা সত্ত্বেও দাবানল নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বলে এ দিন জানান ভেঞ্চুরা কাউন্টির দমকল প্রধান মার্ক লরেনজেন। হেলিকপ্টার দিয়ে আগুন নেভানোর কাজ চললেও রাতের দিকে পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে হেলিকপ্টার ফিরিয়ে আনা হয়।
এ দিকে, বৃহস্পতিবার রাত থেকে ‘লাইল্যাক ফায়ার’ নামে নতুন একটি দাবানল শুরু হয়েছে সান দিয়েগোতে। ক’ঘণ্টার মধ্যেই ৪১০০ একর এলাকা ভস্মীভূত হয়ে যায় তাতে। অগ্নিদগ্ধ হয়েছেন স্থানীয় তিন বাসিন্দা। আহত দুই দমকলকর্মীও। সান্তা বারবারা ও সান দিয়েগো কাউন্টিতে এ দিন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর জেরি ব্রাউন। ১৬টি ডিসট্রিক্টে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে সব স্কুল।
দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ায় এখন কাবু করে রেখেছে মোট ছ’টি দাবানল— টমাস ফায়ার, ক্রিক ফায়ার, রাই ফায়ার, লাইল্যাক ফায়ার, স্কারবল ফায়ার ও লিবার্টি ফায়ার। দিনরাত এক করে লড়ে যাচ্ছে দমকল বাহিনী। কিন্তু রবিবার পর্যন্ত পরিস্থিতি উন্নতির কোনও রাস্তা দেখা যাচ্ছে না বলেই আশঙ্কা তাদের। আবহাওয়া দফতরও জানিয়েছে, রবিবার পর্যন্ত নিজের গতি বাড়াতে থাকবে এই শুষ্ক হাওয়া। ফলে আগামী ক’দিনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়ার অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের প্রধান নিক স্কুলার বলেন, ‘‘অল্প সময়ের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে। বাসিন্দাদের যে কোনও মুহূর্তে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।’’